অমিতাভ মৈত্রের কবিতা
সতর্কীকরণ
যদি বাতাসকে জব্দ করে খড়কুটো জুটিয়ে দেওয়াল তৈরি করতে পারো
তোমার জায়গা তাহলে এখানেই।
আর নিষিদ্ধ পাখিদের লুকতে যদি কপাল অবধি টুপি নামিয়ে হাঁটো
এখানে থাকা কঠিন হবে তোমার।
বুনো কুকুরদের নিয়ে তোমার অনুভূতি তুমি একশোবার না বলতে পারো.
মনে রেখো একজন এ্যাম্বুলেন্স চালক কিন্তু
সবার আগে সবকিছু জেনে যায়।
নিয়তি
কফির নীচে যেকোনো জমে থাকা দুধকে
ব্যতিক্রমী আর মহান মনে হয়।
বারো বছর পর এই একই নীল জামা হয়তো চিনতে পারবে না আমাকে।
ভাল ওভারকোট ছাড়া এখানে কোনোভাবেই যে
শীত আসবে না তা পাগলও জানে।
নিজের নিয়তি পড়তে পড়তে হেসে উঠি
আগামী জন্মে আমার জুতোর মাপ বিয়াল্লিশ হতে যাচ্ছে।
বিচার-১
যেখানে সে সবথেকে কম প্রত্যাশিত সেখানেই বার বার সে
ভেড়ার বাচ্চা নিয়ে অপ্রস্তুতভাবে সামনে আসে
আর সন্তু ভিটাসের নাচের অসুখ গলায় নিয়ে
কঠিনতম শব্দটি বলার আগে
তার প্রথম ছদ্মবেশকেই বেছে নেয় আবার
বিচার-২
আঙ্গুল তুলে আমাদের বহিস্কার করা হয়েছিল
শরীরের মহৎ আর অনিঃশেষ স্মৃতি থেকে।
মাটির কাছেও নির্দেশ পৌঁছেছিল
যেন আমাদের উগরে দেয়, বমি করে দেয়।
প্রাথমিক ধাক্কায় হয়তো কেঁদে উঠেছিলাম আমরা।
কিন্তু তারপরই
হাঁসের পিঠ থেকে জল গড়িয়ে পড়ার মতো নিঃশব্দ আনন্দে
খচ্চরের তলপেটে গোড়ালির ধাক্কা দিয়ে
আমরা বেড়িয়ে পড়েছিলাম।
সন্ধ্যে ছটার পর
সারাদিন ঠাই একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে সূর্য
ব্যয়ামের যন্ত্রপাতির দিকে তাকিয়ে
দেখছে, তাজা স্ট্রবেরিগুলো কীভাবে নিজেদের
পুরোপুরি ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়েছে
শৃগালের শেষ প্রহর
জলের ধার থেকে যখন উদ্ধার করি তাকে
তখনো সে একই রকম নিষিদ্ধ ও ডুবুরির পোশাকের মতো চমৎকার।
এক ফুটপাত দূরে কোনো কাচের মূর্তি
তখন ধীর গতিতে ভেঙে পড়া শুরু করেছে
হাসতে হাসতে বলছিল, লজ্জায় তার মাথা কাটা যাবে না। কোনোদিনই
কেননা দুশো মাইলের মধ্যে কোনো গিলোটিন নেই।
দ্বিধা
জ্বলতে জ্বলতে একদিন তুমি চামড়ার ওপর ঘষে যাওয়া ছুরির মতো হয়ে উঠবে
আর বাতাস তোমাকে খুঁজে বেরাবে পুরোনো কফিশপগুলোর আশেপাশে
কফিশপগুলোর ভেতরে তোমাকে আঘাত করবে
চাপা ফরমাল ডিহাইডের গন্ধ
আর হাড় শক্ত হয়ে যাওয়া বেড়ালের মতো
এগিয়ে আসতে দ্বিধা করবে তুমি
ভুলের প্রতিক্রিয়া
ভুল যেটা হেনরি করেছে, সে একফোঁটাও নড়েনি—
আর স্বয়ংক্রিয়তাকে এড়িয়ে থেকেছে
ধারাবাহিক অনুসরণেও তার ভেতরে আর কোনো সূত্র পাওয়া যাবে না
অবিরাম ঘুমের মধ্যে সে ঘুমায়
আর রঙের শক্তিকে শূন্য করে দেয়
তার টেলিফোন বেজে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই
অন্য কোথাও টেলিফোন নামিয়ে দেয় কেউ