আশিস দেবনাথের গুচ্ছকবিতা
অভিসার
ঘন হয়ে আসছে অন্ধকার
তোমার অবিনাশী ফুঁ ছুটে যাচ্ছে
বাতাস তাড়িয়ে তাড়িয়ে
কারো ঘর ভাঙবে বলে
প্রাচীন প্যাঁচা ভাঙা ঘর থেকে এক ছটাক দুর্দম আলো বের করে আনছে
পায়ে পায়ে ভেঙে ফেলেছে জড়ো হওয়া আঁধার
ফেলে আসছে কুয়োজল, গভীর চাঁদ,
দু’হাত জোড়া কাঁকন— ব্যস্ততা
—শুধু তীব্র শূন্য তা
কী অগাধ টান…
সমর্থা আলো …
কথা
গর্ভজল থেকে উঠে আসছে প্রত্যাশিত আতপ
সেতু হয়ে আসছে সরলরেখা দু’পাশে অস্থির কিছু আঁধার সাজিয়ে
তবুও আকাশ মুখিয়ে আছে, তোমার একান্ত
শব্দসমূহে
পূর্ণচ্ছেদ খোঁড়াতে খোঁড়াতে আসে… ব্যবধান
অভিমান জমে, জমে ঊর্ধ্বমুখী শব্দেরা
তুমি অজস্র আয়না কিনে শব্দ সাজাও প্রতিদিন
ছক মিলিয়ে মিলিয়ে শব্দ বদল করছ
তুমি জানলে না এও এক শাব্দিক খেলা
অনিবার্য ভুল…
সংবাদ
কাঠবেড়ালী ছাদময় ছড়িয়ে রেখে গেছে
শোক— সংবাদ
হাওয়ায় ওড়ে বিষাদী ধুলো
একটা অজানা নদী দৃষ্টির বাইরে হারিয়ে গেলে
শুধু কিছু নিজস্ব স্বর ভেসে আসে
আমার ঘুমের ভেতর…
জ্বর
আজ শুধু জ্বর লিখছি তোমার নামে
নোনা বিষাদ ছুঁয়ে আছে অন্ধ আলো
হাতড়ে হাতড়ে শরীরময়…
খুব ইচ্ছে করে জ্বর হয়ে ছুঁয়ে থাকি
তোমার প্রতিটি কারুকাজ
জন্মান্ধ মানুষ চোখের সামনে নিজস্ব পৃথিবী গড়ে নেয়
তুমি একবার গান্ধারী হয়ে দ্যাখো
শরীর জ্বর ছুঁলে বাহ্য পৃথিবী অধিক শীতল হয়ে যায়।
ভোট
খোদিত পাথরের সামনে নামানো চোখ
অনড়, অঢেল— শুধু বিশ্বাস
বাস্তুজ্ঞানে নির্মোক ও চলৎশক্তিমান
ভীত, আহাম্মক। শুধু আড়াল নিচ্ছি
এক কামরার সন্ধ্যা… শুধু ভুল বোতামে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছি
বারবার ঠকিয়ে দিচ্ছ তুমি
বৃহন্নলাদের বৃত্তাকার নাচ। মহাভোজ।
আর আজন্ম অধিকার।