উজ্জ্বল ঘোষের গুচ্ছকবিতা
গুরু
শ্মশানের চিতা জ্বলছে
একাগ্র রাত্রি নিচ্ছে পাঠ
চোখের মণিতে হচ্ছে হোম
আমাকেও জ্বলতে হবে
অযুত অন্ধকার অপেক্ষা করে আছে
ঘাসের অশ্রু
বন্ধু ঘাস, ওই অশ্রুটলমলটুকু আমার ঝুলিতে দাও
আমাকে দাও রাত্রিপোড়া সূর্যপ্রণাম
আমি ভূমিগন্ধী ফেরিওয়ালা,
চির আকাশসন্ধানী
যাকিছু ভাঙা, ছিন্ন, টুকরো তাকে
বয়ে নিয়ে ফিরি…
ওই অশ্রুটলমলটুকু আমার ঝুলিতে দাও
চাঁদের ব্যর্থতা
মুমূর্ষু শুয়ে থাকে চাঁদের নিচে
চাঁদকে হসপিটালের মতো দেখতে লাগে তার
পুরোনো দিনের কথা মনে পড়ে
গোল চাঁদ খেঁকো হয়ে অদৃশ্য হয়ে যায়
মুমূর্ষু শুয়ে থাকে সন্ত্রস্ত অমাবস্যার নিচে
ভোর
দিগন্তে পয়লা বৈশাখকে প্রসব করাচ্ছে
গৃহস্থ পৃথিবী
অন্ধকার জানালা থেকে চেয়ে আছে অসংখ্য চোখ
কোন্ আলোয় ভূমিষ্ঠ হবে বাছুরটি?
দিগন্ত থেকে গড়িয়ে পড়বে কি অমৃত দুধ
মুমূর্ষুর মুখে?
কলম
স্তন্যপায়ী নয়
মানুষ তো স্তন্যভোগী
বসুধার বুক শুকিয়ে কাঠ
চোখের ভেতর ডিম পাড়ে বালি
ওহ, কী অশ্রুমতী কলম
পৃথিবী সবুজ করবে বলে
এখনও ঝরিয়ে যাচ্ছে বিন্দু বিন্দু জল!