কিছু অশিক্ষিত বুলি
১
নিজের সম্পর্কে কী বলি
নিঃসঙ্গ দুঃখের মাঝামাঝি আছি বলে কত ছোটো হওয়া যায়
দূরে নীল চোখের বালক সভ্যতার মশাল হাতে
অপলক দেখছে আমাকে,
আমাদের ঘর ভেঙে গেছে
উদোম আকাশে ছাই হওয়া সূর্য তবু ঝরে না
পূর্বদিকে ওঠে, ঝলমল করে…
২
গ্লানি জুড়ে জমায়েত শীতকাল,
আমার বাক্যবাণ কী তবে আঠা হয়ে গেল!
সাদা কুয়াশার মতো দাউদাউ করে জ্বলে সময়
বিকৃত ধানক্ষেতের ভেতর গলাকাটা যুবতী দৌড়ে যায়—
এই মুহূর্তে মাতৃহত্যার পাপ গ্রহণ করতে পারি
নতজানু হতে পারি
শুধুমাত্র কবিতার জন্য…
৩
ঈশ্বরকে আড়াল করে ভাত গিলেছি,
গলায় হাত দিয়ে অনুচ্চারিত মৃত্যু কাছে ডাকে
পুরুষেরা বৃদ্ধ হয়ে উঠেছেন
তাঁদের গদ্যগুলো অসহায় বসে
দাবি করে সাংস্কৃতিক কৃতিত্বের—
একই শয্যায় স্বপ্নে দেখি,
নিজেকে রেখে এসেছি
বাইশ বছর আগেকার মৃতদেহে…
৪
কোনো একটি রাতে আমিও চুরি হয়ে যেতে পারি ভেবে
ভয়ে ভিজে ওঠে মায়ের শরীর,
বারান্দায় একটি কাক চুপচাপ শুনে যায়
স্বপ্নের ভেতরে ফেটে যায় অশ্লীল আতশবাজি
আজ মানুষ মরে গেলে দেশ কাঁদে না
চোখ উপচে পড়ছে যে নদী তার গভীরে কোনো জল নেই,
প্রতিদিন কিছু অচেনা চিৎকার ডিঙিয়ে আমরা শহর পারাপার করি…
৫
সমগ্র পৃথিবী জ্বলে ওঠার আগে
রিপু পুড়ে ছাই হয়,
প্রেমের আহুতি মেশে মিছিলে
অসুস্থ শহরের মুখোশ উঠিয়ে দেখি
একই মুখে গলাগলি করে থাকে সূর্যাস্ত, সূর্যোদয়
আমরা শুধু গলা বাড়িয়ে শিক্ষিত হই…
15 replies on “আম্রপালী দে’র গুচ্ছকবিতা”
বাহ!
খুব ভালো কবিতা।
আর সজীব একটা ভাষা।
আশা জাগায়।
নমস্কার রইল।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে…
প্রত্যেকটা অসাধারণ!
ঘর ভাঙা, গ্লানি, বাক্যবাণ, জ্বলন্ত সময়, বিকৃত ধানক্ষেত, গলাকাটা যুবতী, মাতৃহত্যা, অনুচ্চারিত মৃত্যু, অচেনা চিৎকার, গালাগাল… কী ভয়াবহ সব দম বন্ধ করা ছবি এঁকেছেন পৃথিবীর!
সুন্দর
দারুণ মুগ্ধতা…
খুব খুব সুন্দর কবিতা গুলো
বাহ্ ! এই সময়ের জাগ্রত কবিতা !!
এইসব কবিতার জননী, আমারও জননী।
অন্যরকম লেখা, কথা ! ভালো লাগলো।
আপনার সহজ একটা বলবার ভঙ্গি আছে, ফলে কবিতা ভারি হয়না,
ফলে মর্মস্পর্শী ও ট্রাসপারেন্ট হয়।
অনেকেই যা আয়ত্ত করতে পারেনি,
আমি তো নইই।
স্নেহ নেবেন আমার।
প্রতিটি লেখাই জীবন নিংড়ানো । ঘুম থেকে উঠে মনটা ভালো হয়ে গেলো । কবিকে ধন্যবাদ অশেষ । ভালো থাকবেন । সুস্থ থাকবেন ।
আশ্চর্য কবিতাগুচ্ছ। মুগ্ধতা।
3, 4 টা সত্যি ই সুন্দর।
খুব ভালো লেখা। ১ এবং ৪ অসাধারণ।❤