সিনেমাওয়ালা
প্রেম-পরিণয়ের সিনেমা, থ্রিলার— আমাকে টানে না তেমন। বরং খুব মন কেমন করা সিনেমা দেখতে ইচ্ছে করে। যা দেখতে দেখতে জলতেষ্টা পাবে খুব, পরিত্যক্ত নলকূপের মতো হায় হায় করে কেঁদে উঠতেই একে একে উঠে আসবে এমন অদ্ভুত সব দৃশ্য—
১। শূন্যে ভাসমান এক ভাঙা দরজা, যার দিকে তাকালেই জলজল করে ওঠে একজোড়া চোখ
২। এক মৃত সাপের ভিতর থেকে উঠে আসছে বিসমিল্লার সানাই
৩। দৌড়তে দৌড়তে পাখি হয়ে যায় অবিরাম বালক, বালিকারা
৪। হুঁকো হাতে সাদা চৌকিতে বসে আছেন এক বৃদ্ধ। আর ধোঁয়ার ভিতর এসে আটকে যাচ্ছে মহাবিশ্বের আরও কত কত ছবি, আর্তনাদ
তুমি অনেকদূরে এই মেঘলা দুপুরে শুয়ে আছো ভাঁটফুলের বনে। মৌমাছির মতো দৃশ্যেরা ঢুকে পড়ছে তোমার ভিতরে টপাটপ। শুধু মায়া, হু হু করে যাওয়া বাতাস তবু তার ভিতরেও তুমি অপেক্ষা করে আছ দূরের এক দর্শকের জন্য।
অভিঘাত
যেকোনো ঘটনারই অভিঘাত থাকে। তা যে সবসময় তীব্র হবে এমন নয়। এই যেমন এখন মনে পড়ছে তোমার সাথে আলাপের প্রথম মুহূর্তটি। আর এই অন্ধকার ঘরে আমার বুকের ভিতর জেগে উঠল শিহরণ। যেন যেকোনো মুহুর্তেই এ ঘর অগুরুর গন্ধে ভরে উঠতে পারে। আর হৃদয়ে টুংটাং বেজে যাবে কিছু অচেনা শ্লোক, কতকালের হারানো তানপুরা।
সাঁকো
আসলে যেকোনো সাঁকোকেই আমার রহস্যময় লাগে। মনে হয় তার খাঁজে খাঁজে ওৎ পেতে আছে কত কুয়াশা, অন্ধকার। পারাপারের সময় তারা এমন হাতছানি দিয়ে ডাকে এক অজানা ভয়, উদ্বেগে গলা শুকিয়ে আসে।যেন আমাকে ঘিরে ধরে লুকানো অভিশাপ। আর আমি তার মাধুর্যটুকু নিয়ে ডুবে যাই নিজের ভিতর।
এই দূরদেশেও
সব মুখোশের পিছনেই একটা ধুলোমলিন মুখ থাকে। তার আড়ালে অতল খাদ। যার নাগাল পাওয়া সোজা নয়। আর যারা একবার পৌঁছায় তাদের হৃদয়ে জলতরঙ্গে বাজনা বাজে। বাজনার আলোর শেষে গভীর অরণ্য। পাতাঝরার মরশুমে তারা পতঙ্গ হয়ে গেলে এই দূরদেশেও শোনা যায় তার গান।
স্থবির
কৌশল জানে না এমন কেউ নেই। এই যেমন তুমি পায়ে পায়ে বিপদ জেনে নিজেকে লুকিয়ে ফেলছ পাতার আড়ালে। আর এই আলুভাতে জীবনে সব আলো নিভে যেতে-যেতে আকন্দের ঝোপের কাছে এসে দেখি এক তীক্ষ্ণ বাণ বিঁধে ফেলছে আমাকে। কোনো যন্ত্রণা নেই অথচ যেতে পারছি না কোথাও। যেন এই আকন্দের বনে স্থবির হয়ে আছে এক দীনহীন সাপের শরীর
14 replies on “প্রবীর মজুমদারের গুচ্ছকবিতা”
বাহ। ভালো লাগল
ভালো লাগলো।
খুব ভালো লাগল । বিশেষ করে বলব স্থবির কবিতার কথা। আমি মুগ্ধ ভাই।
সুন্দর লাগলো। পড়ে আনন্দ হলো।
খুব ভালো লাগল কবিতাগুচ্ছ। প্রবীর আমার প্রিয় একজন কবি। অত্যন্ত ভালো পাঠক। গদ্য কবিতায় ওর পারদর্শিতা আমায় মুগ্ধ করে। এই লেখাগুলি অত্যন্ত ভালো।চমৎকার।
দারুণ সব কবিতা
এই আকন্দের বনে স্থবির হয়ে আছে দীনহীন সাপের শরীর। ভালো লাগল।
প্রবীরের কবিতার আমি নিষ্ঠ পাঠ। “মৃদঙ্গ মনে বনে ” আমাকে মুগ্ধ করেছে।এই কবিতাগুলোও মুগ্ধ করল।
খুব সৎ লেখা। খুবই ভালো লাগল।
সাবলীল লেখা। খুব খুব সৎ। ভালো লাগলো ভাই। শুভেচ্ছা।
স্থবির কবিতাটা খুব ভালো দাদা।শুভেচ্ছা
অনাবিল লেখা সব। মুগ্ধ হয়ে গেলাম।
চমকে গেলাম প্রবীর, তোমার লেখায় আগের চাইতে অনেক পরিনতির ছাপ স্পষ্ট ।
অসাধারণ। খুব ভালো লাগলো।