লেখক নয় , লেখাই মূলধন

রাজদীপ সেন চৌধুরীর কবিতা

প্রতিবাদ

যারা আমাকে হত্যা করতে চাও; আমি তোমাদের ক্ষমা করে দেব যীশুর মতো। যারা আমাকে পাথর ছুঁড়বে বলে রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে আছ; আমি তোমাদের হাতে জড়ো করে দেব অজস্র পাথর। যারা আমাকে পদে পদে লাঞ্ছিত করতে চাও; তারা সর্বদা স্বাগত। যারা আমার মুখের খাবার ছিনিয়ে নিতে চাও; সে খাবার আমি তুলে দেব ক্ষুধার্ত মানুষের মুখে। যারা আমার কবিতার কণ্ঠরোধ করতে চাও; সাবধান! আমি এখনো বেঁচে আছি।

স্থির করেছি বদ্ধঘরের একমাত্র আলোমুখো জানলাটা গেঁথে দেব; মস্তিস্কের অন্ধকারে নিম্মজিত করব বদ্ধভূমি যেমন মুখের ভিতর কুলুপ এঁটে বসে আছি দীর্ঘসময়। চোখদুটো অন্ধকারে এখন জ্বলে ওঠে না হাত পা সেঁধিয়ে গিয়েছে এপিটাফের গভীর নিঃস্তব্ধতায়। ভয় হয় যদি আলোমুখো জানলা দিয়ে ঢুকে পরা যথেচ্ছ প্রতিবাদগুলি ফের পাছে সংক্রমিত করে।

তুই পাথর হয়ে গেলি। মাংসের শরীর থেকে খসে পড়ল যৌনতা এখন প্রতিদিন ধারালো নখের আঁচড়ে তৈরি হয় গভীর ক্ষত যে পাথর বেয়ে নেমে আসে বন্য নদী ভাসিয়ে নিয়ে চলে স্খলনের নুড়িপাথরগুলি। আমি পাথরগুলিকে নিভৃতে বলতে শুনেছি দাম্পত্যের স্মৃতিকথা।

ছেলেটি মিছিলে দীর্ঘ পথ হাটে প্রতিবাদে। তার বাড়িতে টাঙানো পূর্বপুরুষদের মুখগুলি ইহজন্মের নোনা ধরা দেওয়াল আর জং-ধরা পেরেকগুলির বিরুদ্ধে নিত্য প্রতিবাদ করে এসেছে এতকাল। সুখবর এই যে, বাড়িটি দেওয়াল আর পেরেক সমেত বিক্রি হয়ে যাচ্ছে, ছেলেটি মিছিলে হাটতে ব্যস্ত তাই ঘর নিয়ে প্রতিবাদ করেনি।

Facebook Comments

পছন্দের বই