সময়
মাথার ওপর কালো আকাশ
অসংখ্য গ্রহ,
কোথাও কোনো শব্দ নেই,
গাছের পাতার দোলা নেই
যতদূর চোখ যায় নেই কোনো প্রাণ
এমন সময় এক বাদুড় বাতাসের নিঃশব্দতার ইতিহাস জানতে চাইল—
বেশকিছু চাপা ইঙ্গিত হাসতে হাসতেই অদৃশ্য হল…
***
পালক
সাদা পালক উড়ছে । ওই দূরের পাহাড় থেকে
হাওয়া এসে ওর গায়ে ধাক্কা দিল,
পালকের চোখ
টুকরো কাচের মতো ছড়িয়ে গেল মাটিতে
কয়েকটি ঝুলে রইল গাছের ডালে…
একটা দুটো
শুকনো পাতা আর ফুলের গন্ধ হয়ে পাক খাচ্ছে ।
***
কালো অরণ্যে
আজ অমাবস্যার রাত। আকাশ
গড়ল এক কালো অরণ্য, সেখানের গাছের
শাখাপ্রশাখার বৃন্তে ফুটেছিল হরিদ্রাভ ফুল—
যার গা জড়িয়ে বসে আছে পাকা ফল।
ফল ঠুকরে খাওয়ার জন্য পাখিরা মুখ বাড়িয়ে রেখেছে, পাতা কাচ-ঘেরা দেয়ালের মতো
আগলে রাখলেও পাখিদের নজর এড়িয়ে যায়নি।
বহু পথ অতিক্রম করে কত পোকামাকড়
আসতে শুরু করেছে— কেউ কুঞ্জ সাজাবে,
কেউ নগ্ন হয়ে সেবা করবে।
***
ঘর
সন্ধ্যা আসবে বলে আকাশ সাজিয়েছে তার ঘর,
সেই ঘরে কাঁচা সিল্কের মতো প্রজাপতি ওড়ে
হাওয়া আর মেঘে ঢাকা তারার গা ঘেঁষে ঘেঁষে,
সাদা কাপড়ের পর্দায় দুটি পোকার
নড়ে ওঠার ছায়া পড়েছে, তারা
কাঁধে এলিয়েছে মাথা—
এক মগ্নচৈতন্য অবস্থায় দু’জনে
জ্বলজ্বলে পাথরের চোখে চেয়ে থাকতে থাকতে
আঙুলের খেলা খেলে।
***
গোলাপি আভাভরা কুটির
মেঘ সরে গেলে
পর্বতচূড়ার সঙ্গে বাঁধা দড়ি কেটে দিল আকাশ।
এই দেখে পাহাড়ি নদীর স্রোত
দুধের সরের মতো ঠোঁট কুঁচকে বলল—
ঝরা পাতারাই প্রথম এসেছে কোল আলো করে,
ওরাই ডেকেছে প্রথম মা বলে,
এই হাজার ফুট উচ্চতায়
শত শত নুড়ি-কাঁকড়ের নীরবতার ফাঁকে
মাথা গলিয়ে বেয়ে বেয়ে এসে
ওরাই ঢুকেছে ছোট্ট গোলাপি আভাভরা কুটিরে।
11 replies on “সঞ্চিতা দাসের কবিতা”
“বেশ কিছু চাপা—অদৃশ্য হল”,” টুকরো কাচের মতো ছড়িয়ে গেল”,”কেউ কুঞ্জ সাজাবে কেউ নগ্ন হয়ে সেবা করবে”,”এক মগ্ন চৈতন্য অবস্থায় দু’জনে” —-প্রভৃতি তাৎপর্যপূর্ণ লাইন গুলি বেশ ভালো লাগল। কবিতাগুলির মধ্যে,
— ঘর,পালক,সময় বিশেষভাবে আকর্ষণ করেছে।
আপনাকে প্রণাম স্যার ।
সব কয়টি কবিতাই আমার খুব ভালো লেগেছে। কবি কে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমাদের এমন লেখা পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।। আমার তরফ থেকে আপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।।
সব কবিতা গুলো, কবির লেখার গভীরতার মুন্সিআনার পরিচয় পাই।আমার বিশেষ করে বলবো”কালো অরণ্য” কবিতাটির কথা।এককথায় অসামান্য সৃষ্টি ।।।
স্যার আপনাকে প্রণাম জানাই। ভালো থাকবেন।
Darun kobita gulo
খুবই ভালো হয়েছে কবিতা গুলো।। বিশেষ করে ” ঘর ” কবিতা টি আমার খুব পছন্দ হয়েছে।।
প্রতিটি লেখা মনে দাগ কেটে যাওয়ার মতো।
Khub sundor. Aro erokom valo valo kobita amader upohar dite theko.
sobgulie valo legechhe.
সঞ্চিতার লেখা আমার খুব প্রিয় ৷ ওঁর আলাদা একটা সিগনেচার আছে ৷ সিল্কের মতো প্রজাপতি -ওই লিখতে পারে ৷খুব ভাল ৷