পৃথ্বী বসুর গুচ্ছকবিতা
দিনযাপন
১.
আমি, গত রাতের স্বপ্নে পাওয়া
হরপ্পার ভাষা, কিছুতেই উদ্ধার করতে পারি না
এমন সকালে
কেননা চোখ কচলাতে কচলাতেই
এক-একটা দৃশ্য পাখি হয়ে উড়তে শুরু করে
আর, সমস্ত পাড়াময় রটিয়ে দেবে এমন উদ্দেশ্য
নিয়ে, পাড়া-প্রতিবেশীর বাঁকাচোখে তাকানোর মতন আজ জানলার ঘুলঘুলি দিয়ে
রোদ বারংবার ঘরে ঢুকতে চায়,
ঢুকে পড়ে।
২.
অমঙ্গলের গন্ধের ভিতর শ্বাস নিতে নিতে
বেলা গড়ায়।
শরীরে আকাশ-ভাঙা ছায়া।
বকেয়া স্পর্শের আশায়,
মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে আছি মনে মনে।
বাইরে তাকানোর কিছু নেই
গৃহস্থের চাল-ডাল-আলুর ধরনে
চৈত্রমাস ফুরিয়ে এসেছে।
৩.
সামসিং-এর আকাশটা যদি কেউ তুলে এনে আজ
মাথার ওপরে বসিয়ে দিতে পারত,
সূর্যাস্তে রঙিন হওয়া পাড়া দেখতে চাওয়া
এতটা বিরক্তিকর হয়ে উঠত না।
জানলার শিক ধরে পা কাঁপার পরিবর্তে
মনে ছবি এসে যেত,
আকাশে তিলের মতো ভাসমান পাখিদের নীচে,
আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে রয়েছি
খুনিয়ার জঙ্গলে।
সামান্য পরেই দূরে চা-বাগানের আলো,
আর আলো পেরোলেই, ওই যে তোমাদের জলপাইগুড়ির বাড়ি
সামসিং-এর আকাশটা যদি কেউ তুলে এনে
মাথার ওপরে বসিয়ে দিতে পারত,
আমি জিতে যেতাম
৪.
এই ঘরে শ্মশান ঢুকেছে।
ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি,
পোড়া কাঠকয়লার মতো এই রাতগুলো থেকে
আমাকে অনেক দূরে নিয়ে চলো
এই দুই লোকায়ত পায়ে ভর করে,
আমি যেন চিরকালের জন্য চলে যেতে পারি
প্রান্তিক জনবসতির দিকে
প্রজ্ঞার দিকে