বইমেলার ডায়েরি: সেলিম মণ্ডল
০২/০২/১৯
দ্বিতীয় দিনও আগে পৌঁছে গেলাম। আগে মানে অনেকটা আগে। ঘড়ির ছোটো কাঁটা যখন একের ঘর থেকে অনেকটাই দূরে। প্রথম শনিবার ভিড় হবে। ওদিকে দেবু আসবে দেরিতে। টেবিল সাজানো বা টেবিল সামলানো এসব আমার দ্বারা হয় না। তবুও মাঝেমাঝে করতে হয়। ‘তবুও প্রয়াস’-এর সবচেয়ে আনন্দের ব্যাপার আমরা অরূপদাকে সঙ্গে পেয়েছি। মানুষটি ‘তবুও প্রয়াস’কে এতটাই ভালোবেসে ফেলেছে, পুরো ১-১১ ছুটি নিয়েছেন। গোটা চাকরি জীবনে এমন ঘটনা মানুষটি আগে করেননি।
বুদ্ধি করে দেবু টেবিলের জন্য তিনটে চেয়ার নিয়েছে। তবে আমি বসার জন্য ফাঁকা চেয়ার পাচ্ছি না। এটা যতটা আনন্দের, তার থেকে বেশি আনন্দের আমি ফাঁকি দিতে পারছি। মালদা থেকে শতানীক চলে এসেছে। বিশ্বভারতী থেকে প্রকাশিত রবীন্দ্রনাথের প্রবন্ধের বইগুলো নিয়ে এসেছে আমার জন্য।
আজ টেবিলে অনেকেই এসেছিল। সবার নাম হয়ত মনে নেই। রাণাদা, প্রজিতদা, জামালদা থেকে শুরু করে রাজদীপদা, পলাশদা, পার্থিজৎদা, প্রীতমদা, শমীকদা…
প্রথম দিন অনেকগুলো বই কিনেছি। আজ আর কিনব না ঠিক করেই আছে, ‘সেলিম, উদয়ন ঘোষের সমস্ত লেখা নিয়ে কৌরব যে বইটা করেছে, নিয়েছ?। না নিলে নিয়ে নাও,ওরা অল্প ছাপিয়েছে’ শমীকদা বলার পর আর টেবিলে না দাঁড়িয়ে ৯ থেকে ছুটে গেলাম ৪ নং গেটে। খুব প্রয়োজনীয় বই। তবে ‘প্রয়োজনীয়’ কথাটা মাঝেমাঝে এক্ষেত্রে আপেক্ষিক মনে হয়।
২ফেব্রুয়ারি, বইমেলার আরেকটা মজা আছে, এই দিন দেবুর জন্মদিন। প্রত্যেকবারের মতো এবারও মেলা শেষে সেলিব্রেট করলাম। আমি, অরূপদা, শতানীকসহ শূদ্রকদা, তমালদা, কৌস্তভ উপস্থিত ছিলাম। প্রত্যেকবার মেলায় কেক কেটে সম্ভবত দেবুর একারই জন্মদিন পালিত হয়। দেবু ভাগ্যবান। আর আমরাও বোধহয় ভাগ্যবান, ওই কেকের অংশীদারিত্ব নিয়ে নিজেদের হইহুল্লোড়কে অক্ষরের কাছে আরো কিছুটা যাপিত করতে পারি বইমেলার হৃদঝিল্লীতে।
