বিশ্বদেব মুখোপাধ্যায়ের গুচ্ছকবিতা
ঠাকুমা
হেমন্ত শেষের রোদ্দুর
ক্রমশ নরম হয়ে আসে।
বাতাসে শীতের মৃদু সুর
ভাসিয়ে ধুনুরি যায় আসে।
আকাশে মেঘের পেঁজা তুলো
ঢুকে যায় শালুর ওয়াড়ে।
পুবে ঘর। জানলার ধারে
ঠাকুমা লেপমুড়ি দিয়ে শুলো।
তারপর সেই চৈত্রমাসে
আমাদের গ্রামে সে কী ধুলো!
***
নান্দনিক
বীরভূম প্রত্যন্তে কিছু ছোটো ছোটো তালবৃত্তে ঘেরা
সান্ধ্য গন্ডগ্রাম—
বিশ্ব মানে তো এই?…
ট্রেনের বাইরে একা সাঁওতাল মেয়েটি তার চোখে
এই প্রশ্ন এঁকে
যখন উধাও… আমি জানলা দিয়ে পরের স্টেশনেই
বিশ্ব নয়
নন্দলাল বসুকে দেখলাম।
***
ধাঁধা
দরজা ভেতর থেকে হুড়কো দেওয়া
ঘরে কেউ নেই—
বাইরে দাওয়ায় বসে আকাশ পাতাল
ভেবে যাচ্ছে ঘরের মানুষ।
***
জ্বলন
ওলো পিদিমে দিস সলতে—
এই কথাটাই বলতে
সাঁঝ-আঁধারে দৌড়ে এলাম
নিজেই জ্বলতে জ্বলতে।
***
বনফুল
বনের ফুল
তুলনা সে তো নিজেই!
তুলো না, থাক্!