মামনি সরকারের কবিতা
মায়া ফলক
১
প্রেমের কবিতা লিখতে বললে
মা-বাবাকে মেলাতে বসি।
কিছু কিছু রাতের বাতাস
বড় বেশি নিমস্তব্ধ
পড়া-পড়শির ঘুম নেই
একটা বাজ পড়ার আশায়
দেওয়ালের কান ক্রমশ সজাগ হয়ে ওঠে।
২
বাবার বিঁড়ির গন্ধে ঢেকে যায়
তারাফুলের তদবির
মা’র বলিরেখায় রেখে যায় তার ছাপ
আমি সেটি নিয়ে জ্যোৎস্না জ্যোৎস্না খেলি,
আর বাবা চলে যায় দূরে, আরও
আরও অনেক দূরে
৩
গরমকাল এলে বাবা আঁটি পোঁতে মাটিতে।
পরের ক-বছরে
অগণিত আশ্চর্য মুকুলে ভরে উঠবে
মায়ের কোল
পেট ঢাউস হলে বেড়ে যায় ক্ষুধা
বাবা আরও বেশি করে ছড়াতে থাকে সার
আমি চোচা না ছড়িয়ে চুষে খাই
আমের নির্যাস
আর গাছ একটা করে মৃত সন্তান প্রসব করে।
৪
সকাল হলে মা বাটনা বাটতে বসে
ঘর জুড়ে কোনো মিক্সি নেই
শিল-নোড়ার মিলনে এক অদ্ভুত বাজনা বাজে
আর হাতের পেশিগুলো নাচতে থাকে
তালে তালে!
মা’র আগুনবর্ণা কপালের ভাঁজে জমে
বিন্দু বিন্দু অভাব, আর
কড়াইয়ে সেদ্ধ হয় আস্ত তাজমহল
৫
মাকে সঙ্গে নিয়ে মন্দিরে যায় বাবা
ভোগ দেয়, ঘণ্টা বাজায়
পকেট হাতরে ষোলো আনা ফেলে দেয়
দক্ষিণার মৌসিনরামে
মার মন পড়ে থাকে দরজার কোণটায়
সেলে কেনা চটি জোড়া হারিয়ে গেলে
পীড়িত কিংবা ভক্তি
চোরাউ নৃত্যের মতো মনে হয়।