সঞ্চিতা দাসের কবিতা
অঙ্ক
মশারির অনেক ফাঁক থেকে আমি সাদা আকাশকে দেখছি, আকাশ আমাকে উপহার দিয়েছে একখণ্ড মেঘ। মেঘ বলল— তুমি নিজেকে ভাঙো। খানিকটা ভাঙা শুরুতেই আয়নাতে দেখলাম একটা জলকাদার জীবন পড়ে আছে, ওর ভেতর আমি কবে থেকে ডুবে আছি জানি না…! এবং তার মধ্যে ঘিরে আছে কয়েকটি গ্রাম, ছোটো ছোটো টিনের চালার ঘর, দূরে তালগাছ, বাঁশবনের সারি, খোলা মাঠ, সরু পথের দু-পাশে ঘাস হাঁটলে পরে পা ছুঁয়ে মাথা নত করে রাখে, জীবজন্তুর বিষ্ঠা, পশুপাখির কোলাহল, আরও কত কী… গ্রাম আমাকে প্রদীপের নীচের অন্ধকার আর আলোর শতকরা চোখে আঙুল দিয়ে দেখায়। শহর কংক্রিটের শৌখিন আলো সারারাত জ্বালিয়ে রেখে অঙ্কের লাভ ক্ষতি শেখায়, বোঝাতে চায়। দু-জনেই ডাকছে। ওরা ব্যাকুল হয়ে ডাকছে।
তৃষ্ণা মেটাতে গিয়ে
অনেক দিন ধরেই ভিতরে ভিতরে একটা কামড় চিনচিন করে, ধরা পড়েছে গভীর সমুদ্রে ক্ষয় চলছে, ভারী হয়ে উঠছে বাতাস। অনেক নিঃশ্বাস ফেলার ধাপ থেকে নেমে আসে ভাঙা গল্প, যারা মাটির পাত্রের মতো অবহেলায় পথের দু-পাশে ধুলোয় লুটিয়ে পড়ে জ্ঞান হারিয়েছে। ওদের চোখের জলের ওপর সত্যের নতদৃষ্টি গড়িয়ে পড়ছে আর চকচক করে জ্বলে উঠল সেই আলো।
অনন্তকাল ধরে অভিশাপের গহ্বরে হাত ডুবিয়ে ভালোবাসা ভেবে একরাশ তেষ্টা নিবারণ করতে করতে এই অবধি আসা… শাবল, কোদাল দিয়ে খুঁড়েও প্রয়োজনের জলোচ্ছ্বাস আসে না!
আসে শুধু একটা ভাঙনের পদধ্বনি… থপ্ থপ্ থপ্।