লেখক নয় , লেখাই মূলধন

কবিতা

অগ্রদীপ দত্ত

মা-কে লেখা চিঠি


এই ছিলে এই নেই
মানুষের কাছে তোমার রেখে যাওয়া ঋণগুলো বাকি রয়ে গেছে শুধু

এখন আর সুখী জীবন লাভের প্রত্যাশা করি না
তোমার রেখে যাওয়া ঋণগুলো
চিতায় উঠবার আগে ঠিক শোধ করে যাব

লোভ বলতে এই একটাই আমার।


কবিতা লিখে আজকাল সত্যিই বিশেষ কিছু হয় না।
না গাড়ি। না বাড়ি। ভাড়ায় দেবার মতো টাকাটুকুও উঠে আসে না

তোমারও আমার কাছে প্রত্যাশা কিছুই ছিল না কোনোদিন
শেষ দিকে শুধুই বলতে, ‘তুই একটা মানুষ হোস’

এই যে দু-কলম লিখতে পারি আজ
আমার প্রতিটা লেখাজুড়ে তোমার অস্তিত্ব—

বইয়ের পাতায় পাতায় তুমি বেঁচে আছ ভেবেই আমি লিখি
আমায় লেখায় তুমি থেকে যাবে ভেবেই আমি লিখি।


বিসর্জনের দিনগুলো বড়ো বিষণ্ণ কাটে
ঢাকের আওয়াজের মধ্যে নদীঘাটে বসে আমি প্রতিমা নয়,
প্রতিবারই তোমার মুখ ভেসে যেতে দেখি

দেখি কীভাবে শাখা পলা সিঁদুর জল লেগে মুছে যাচ্ছে শরীর থেকে
এই বিষণ্ণতার মাঝেও চিৎকার শুনতে পাই লোকের,
আশান্বিত কিছু বাক্যও হাওয়ায় পাক খেয়ে মিলিয়ে যায় অন্ধকার নদীবুকে

আসছে বছর মা আবার আসে ঠিকই
আসছে বছর শুধু তুমি আসো না।

সঙ্গী


পরীক্ষায় সবচেয়ে কম নম্বর পাওয়া ছেলেটা
আশপাশে তাকিয়ে খুঁজে নিতে চায়
তার চেয়েও কম নম্বরের কোনো একজনকে


যদি কোনো সদ্য ঠকে যাওয়া প্রেমিক
অথবা প্রেমিকা শুনে ফেলে—
তাদের পরিচিত কিংবা অপরিচিত কেউ
লেঙি খেয়েছে। মুখ থুবড়ে পড়েছে মাটিতে…
তাদের তেতিয়ে ওঠা যন্ত্রণা অনেকটাই কমে যায়


শ্মশানে পোড়াতে নিয়ে আসা
মৃত মায়ের পা ছুঁয়ে বসে থাকাকালীন
যদি কেউ এসে বলে
“আমারও অল্প বয়েসে মা…”
মা হারা ছেলেটার বুকে কি সাহস বাড়ে তবে?

 

Facebook Comments

পছন্দের বই