লেখক নয় , লেখাই মূলধন

কচি রেজার কবিতা

সংবেদনা

কীভাবে যে বুঝে যাও এসব কালের মোহ
দ্বিতীয়তঃ শুনেছি, এখনো কুমারী নাকি আমি
আর আমার গ্রীবার দাগ

দারুণ সংবেদনা শোনে ট্রেনের সিটি
ভুল স্টেশনে নেমে থেমে গেছি কবে
আজও পা বেঁধে রাখা চিনে নারী আমি
গালে-মুখে রং
দেহ, হায় দেহ দিতে ব্যর্থ এ দেহ

এ-বাসনা একি শুধু অভিশাপ?
কবে সিংহাসনচ্যুত হলো মাতা আর অনুকূলে
এল হোরাস, অ্যাডোনিসিন

একদিন নিদ্রা ফেলে গভীর বিশৃঙ্খলা সেও
শিখিয়েছ
আমি শুধু প্রায়শ্চিত্ত দিয়েছিলাম শর্তহীন পাপের
আর আমিও পাপের অধস্তন

তুমি কি গির্জার যাজক?
ভালোবাসার নিহিতার্থ
তবে ভৎসর্না
তোমার একগুঁয়ে টুপি নির্ধারিত রেখো
ক্যাথলিক অন্ত্যেষ্টির জন্য, আর জেনো

আমি উনিশ শতকের চিতা নই!

ঈশ্বর

ঈশ্বর জানে আমি তার মতোই
কিন্তু আমি কি স্বতঃস্ফূর্ত তাকাই তার দিকে?
বরং অঙ্কুরোদগমের চক্র দেখি বিষন্ন আগ্রহে
ছোবলের ভূমিকা নিয়ে অজ্ঞাত ছিলাম
পূর্বপুরুষ যার নাম দিয়েছে শ্রদ্ধা
আমার স্বাতন্ত্র নিয়ে আজ আমি কৃষিজীবী

একদিন ঈশ্বরের মূর্তির চারপাশে উন্মত্ত নেচেছি
তবু কোনোমতেই তরঙ্গে ভেসে আসা ভেনাস নই
নির্দোষিতা থেকে সরে এসে অটুট গৃহপালিত বটে
এখন বিপজ্জনক আমি তার কাছেই

ঈশ্বরকে আমি বোকা বলি আর ঘেন্না করি
কিন্তু বাধা-বিঘ্ন পেরিয়ে চুম্বন করি তার প্রতিভা
শত ষড়যন্ত্রেও সে আমার উত্তরণ ঠেকাতে পারেনি
এখন আমার নিজস্ব একটি ঘর
শালীনতার ভান বর্জন করে একা হাতে শাসন করি সে সাম্রাজ্য

সেখানেও কদাচিত প্রবেশাধিকার ঈশ্বরের!

আত্ম-অসমর্থতা

ভালোবাসি বললেই নিঃস্ব হয়ে যাই, কী যেন পড়ে যায় পকেট থেকে
দৃশ্যান্তরে প্রবুদ্ধ জিরাফ
ধ্বনি আর দৃশ্যের অভূতপূর্বতার অচেনা উদ্ভাস
তোমার আনন্দ

বিচলিত করে আর হৃদয়ের পাশে উঠে আসে দুঃসহ স্পর্ধা
ঘাসের সমুদ্রের পাখির ব্যাখ্যায়
অনন্তকালের শব্দতায় ভাঙ্গে আত্ম-অসমর্থতা
অনুবাদ করতে পারি এমন ব্যক্তিত্ব
এমন চিৎকার প্রাণপনে আঁকড়ে উপদ্রুত আমি আজ
দীপ্তিমান কোনো শঙ্কায়
নিঃস্ব হবার পর শোষিতের শোনিতের মতো
শীত লাগে !

পুনরুদ্ধার

আমি কেন তোর প্রথম নেশা নই
কেন আবহাওয়া সংবাদের মতো ঘোষণা দিসনি বেতারে
আমি কেন তোর সাহসী শপথ নই

সব গল্প কেন দীর্ঘশ্বাস ফেলে
দীর্ঘশ্বাসের উদ্ভব কি শিল্পবিপ্লবের বিচ্যুতি
সাম্যের অবস্থানে শুধু ফ্যাক্টরি-প্রথা

বৃত্তিগত প্রশিক্ষনে আমার সংজ্ঞা আমি মানুষ
সরবরাহকারি হবার ইচ্ছা আমার নেই
আমার শরীরও নিঃসরণ করে হরমোন

অথচ সন্দেহভাজন বলে তুই সমান্তরাল টেনেছিস
তুইও কি বিশুদ্ধ বর্ণবিদ্বেষী
স্বেচ্ছায় শ্রেনীর মধ্যে এনেছিস যুদ্ধ

দেখি সহস্র চোখ পড়ে আছে পেছনে
সর্বহারারা সংগ্রাম করছে
আমিও পুনরুদ্ধার করতে চাই তোকে

তোর যতটুকু শ্মশান আমারও তাই
গোষ্ঠিতে আমিও স্বাধীন
শ্বেতাঙ্গিনী নই তবু সত্যটা এই যে
স্বাতন্ত্র রক্ষায় আমার অন্তর্মুখী ঝোঁক

আমি কলা ও বিজ্ঞানের ছাত্রী
ষোড়শ শতাব্দী ধরে সযত্ন সাজে তোর মন ভুলিয়েছি
এখন ইচ্ছে হলে কুমারী থাকব

কুমারীদের কি ভোটাধিকার নেই?

বয়ঃসন্ধিকাল

এক হাজার মূর্তির ভেতর কেবল আমাকেই ত্রাণ ভেবেছ
আমি কি গির্জা কতৃক সত্যিই নিন্দিত?
চরিত্রগতভাবে উন্নতমানের নিঃসঙ্গ আমিও ,
প্রায়ই আত্মার সাথে ঘুরি আর অনুসরন করি দেহ
কারণ দেহ হাসতে পারে
অদৃষ্টকেও ব্যাখ্যার বাইরে রেখেছি যা দেখে তুমি চুম্বন করো
প্রত্যাদেশ কিন্তু আমাকে ব্যথা ছাড়া দিয়েছে এক বিশুদ্ধ দর্পণ
সহস্র কোণ থেকে যে প্রলোভন তাতে বুঝি, বয়ঃসন্ধিকাল
আসলে বিপজ্জনক

Facebook Comments

পছন্দের বই