লেখক নয় , লেখাই মূলধন

আব্বাস কিয়ারোস্তামির কবিতা

ভাষান্তর: শতানীক রায়

[আব্বাস কিয়ারোস্তামি ইরানের তেহরানে জন্মেছিলেন ২২ জুন, ১৯৪০ সালে। মূলত চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন। প্রথম ছবি ‘ব্রেড অ্যান্ড অ্যালি’ ছিল দৈর্ঘ্যে মাত্র দশ মিনিটের। সাত বছর পরে প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবি ‘রিপোর্ট’। পরবর্তীকালে নানান কালজয়ী চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন। তিনি পাশাপাশি ছিলেন একজন কবি। তাঁর কবিতার চিত্রময়তা তাঁর মধ্যেকার চিত্রশিল্পী এবং ভাবুক সত্তার প্রকাশ করে। তাঁর কবিতার নৈঃশব্দ্য ও মিনিমালিস্ট অ্যাপ্রচ কবিতাকে ছবি এবং এক অনন্ত রূপ-অরূপের অনেক ঊর্ধ্বে নিয়ে যায়। তাঁর কাব্যগ্রন্থগুলি হল ‘এ উলফ অন ওয়াচ’, ‘ওয়াকিং উইথ দি উয়িন্ড’, ‘উয়িন্ড অ্যান্ড লিফ’ আর ‘ইন দ্য শ্যাডোজ অব ত্রিজ’। সম্পাদনা করেছেন রুমি, সাদি, নিমা, হাফেজ এবং অন্যান্য কবিতার অনুবাদের সংকলন।]

একটি নেকড়ে অপেক্ষারত


আমি লম্বা হই
সূর্যের নিষ্ঠুরতার ভেতর
চাঁদের ছায়ার ভেতর।


কেমন হয় যদি একটু জিরিয়ে নেওয়া যায়
ওই বন্ধ্যা সাইপ্রাসের ঘন ছায়ার তলায়?


কবর দাও
আমার হৃদয়কে আলাদাভাবে।
কেমন ভঙ্গুর
যেন সেটা।


আমি ব্যাকুল হই
যে, ওই গন্ধহীন ফুলগুলো
সুগন্ধিত হয়ে উঠবে
যখন গোলাপের গন্ধ পুরো
উবে যাবে।


একাকিত্বের তীব্র ঠান্ডায়
আসে আমার কল্পনার
নরক,
যা আমাকে উষ্ণ করে তোলে।


একটি পেঁচালো রাস্তা।
দিন আর রাতের ভেতর দিয়ে উঠছে,
ধর্ম আর অধর্ম,
খারাপ আর ভালো,
নিঃশব্দতা,
জটিলতা,
ঘৃণা,
রোষ,
ভালোবাসার
মধ্যে দিয়ে।
ভালোবাসা।


একটি নক্ষত্রহীন রাতে
আমি কুয়োর ভেতর নামি
সেই অতলে
পাঁচটি পাপড়িযুক্ত
একটি সাদা ফুল আছে।


আমি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি
যে, শিরিনের রোদন
চাপা পড়ে যায়
ফারহাদের পাহাড় ভাঙার শব্দে।


আমি অবজ্ঞা করি
শব্দকে।
তেতো।
তীক্ষ্ণ।
নিষিদ্ধ।
ব্যঙ্গাত্মক।
কথা বলো আমার সঙ্গে
ইঙ্গিতে।

১০
আমি উদ্বিগ্ন
যে, বুনো ঘোড়ারা,
হাওয়ার ভয়ে,
রাত কাটায়
ভেড়াদের খোঁয়াড়ে।

Facebook Comments

পছন্দের বই