লেখক নয় , লেখাই মূলধন

রবিন বণিকের কবিতা

আয়ুর গমক

যে–চিঠি সেতু নয়
যে–মাটি খুঁড়ে জারি হয় ধারা ১৪৪
যে–হাওয়া বুদ্ধিমান
তাকে আমি একচুল ছেড়ে দিতে রাজি নই
আমি তার দূষণ রোধের প্রবন্ধ পড়তে রাজি নই
তাকে বলি ত্রিভুজের মৃত্যু

আমৃত্যু দু’বেলা ধারালো অস্ত্রের মতো আয়ুর গমক—

ফুল, একটি অবিভাজ্য বিষয়

ফুল, একটি অবিভাজ্য বিষয়
যেমন চুম্বন একটি অনন্ত মৌলিক
উপন্যাস থেকে পথে এক পা বাড়িয়ে দেখলেন
একজন পাগল ফুলে ঠোঁট রেখে বলছেন
প্রতিটা চরিত্রের ভেতর একজন অবিশ্বাসী সন্ন্যাসী থাকে
প্রতিটা সন্ন্যাসীর ভেতর এক অর্ধসত্য আলো থাকে
তারপর ফুল থেকে ঠোঁট তুলে নিয়ে বললেন
পাগল একটি অবিভাজ্য ফুলের চুম্বন
শোনামাত্র তাড়াহুড়ো করে পা টেনে নিয়ে
ঢুকে পড়লেন উপন্যাসে জমে থাকা কুলকুচি জলের ভেতর
উপন্যাসের দরজায় বারবার কড়া নেড়ে বলতে চেয়েছে পাগল
রুমাল ভেঙে পড়ার শব্দে নিদ্রাহীনতায় ভোগে দেশ ।

সামাজিক পতাকা

যেভাবে হৃদয় ভাঙে সেভাবে ভাঙুন
দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের দিকে একটু বড়োসড়ো চাপ দিন
কোণগুলোতে কিছুদিন ঝুলিয়ে রাখুন সুতরাং
তারপর একদিন ঝড় অথবা বৃষ্টির সুযোগ বুঝে
প্রস্থের দিকের বাহুটি ভেঙে ঢুকে পড়ুন
একমাস দু’বেলা একটি করে কাচ ভেঙে ভেঙে
নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়ুন
একমাস পর মিলিয়ে নেবেন রূপান্তরিত শিলার মতো
                              সমাজ আপনার হাতে তুলে দিচ্ছে
                                                  যুদ্ধ জয়ের পতাকা—

বাদাম ছায়া

মস্তিষ্ক হারিয়ে গেলে বাদাম গাছের ছায়া খোঁজে, মানুষ—
উনিশ ও কুড়ির মধ্যকার দূরত্ব থেকে শ্বাস নিতে নিতে
অসংখ্যবার খিদে পায়—
আর খিদের জ্বালায় অন্ধ পাঁজরে খোঁজে নিজের বুকের দুধ।

মস্তিষ্ক হারিয়ে গেলে এবাড়ি ওবাড়ি এপাড়া ওপাড়ায়
রেখে আসে নিজস্ব শরীর
আর ছায়া ঘুরে ঘুরে বেড়ায় মানুষের বিরক্ত বুকে—

পরাবাস্তবতা

পরাবাস্তব বিড়ি ফুঁকতে ফুঁকতে ছেলেটা দাঁড়িয়ে গেল একদিন
সে এখন পেকেটে সিগারেট ছাড়া অন্য কোনো আগুন রাখে না
পরিত্যক্ত বাড়ির ছেলেরা খুব কাছ থেকে দু’বেলা মুখাগ্নি করে রোজ
আর ধোঁয়া উড়তে উড়তে চলে আসে বিধানসভার ছাদে

ছেলেটা আরও একবার উঁচু দাঁড়ায় রগের টানে

উঁচু শ্মশান থেকে দেখতে পায় সন্ত্রীরা শুয়ে আছে কাপড় জড়িয়ে
আর কাপড় সরিয়ে কারা যেন নিন্দার ভঙ্গিমায় শহরে প্রবেশ করে—

Facebook Comments

পছন্দের বই