লেখক নয় , লেখাই মূলধন

রাখী সরদারের কবিতা

অনুরণন

বিষয় ফুরিয়ে এলে পুড়ে শেষ জারুলের ফুল
নিজের ইচ্ছেয় তুমি বেগুনি গুটিয়ে ছাই,
এখন সন্তাপ লেখো মুঠো মুঠো ভুলের আঙুলে
ব্যথা চুপ মাটি ছুঁয়ে পরিযায়ী মেঘ ফেরে দেশে।

আমি কী অন্তিম রোদ! ক্ষয়ে ক্ষয়ে ছায়া ঢাকা রাত
তোমার গোপন হাড়ে আমাকে বানালে কেন চাঁদ!

এখন আমার কাছে তুমি কিছু দূরত্বের তুলো
কার্পাস ফেটেছে কবে সাদা সাদা উন্মাদিনী মেঘ
দেহের শেকল খুলে চুরি গেছে শিমূলের লাল
নষ্টপাকে ভাত রেঁধে বসে থাকে বিধবা দুপুর।

যদি ফিরে আসো ফের, হৃদয়ের পদ্মবিল ধারে
অক্ষরা তাঁতির মতো আমার শাড়িতে ঢেউ দিয়ো।

বিরহী পাখিও জানে আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে
উড়ন্ত চুমুর শব্দে ঊনিশবতী বৃষ্টি নেমে আসে
মাধবী টিলার ধারে মেঘ নৃত্যে অবুঝ চিকুর
এখন রাধিকা নামে মধুপুরে নেমেছে শ্রাবণ।

ধরো যদি প্রিয় ঠোঁট ডুবে যায় ডাহুক বেলায়
দেহের ভণিতা ছেড়ে খুঁজে নিয়ো শুশুক খেলায়।

কোথাও কী হারিয়েছে ফিনকি ফোঁটা ঠোঁটের কমল
দীঘি জল মুঠো মধ্যে গ্রীবা খোঁজে সাদা বালি হাঁস
জল ভাবলেই আঙুলে ঘূর্ণিমান জলের পুরুষ
তা দেখে ফিরতে পারি না করতলে একা ডুবে যাই।

কামনা গিলেছে কেউ আশেপাশে রমণের ঢেউ
মাছেদের পেট ভারী জলে বাজে অপত্য সানাই।

জন্ম জন্ম বাঁধা আছি আঁশগন্ধ নৌকা পাটাতনে
রূপালি দেহের আড়ে অবিরাম দাঁড় টেনে চলা
কুবের মাঝির মুখে শুনে যাই ইলিশ রূপকথা
নদীর তাবিজ ছিঁড়ে ইচ্ছে নেই কেতুগ্রামে ফেরা।

যে জন্ম আমাদের ভাটিয়ালি নাম ধরে ডাকে
কেন মাঝি ভয় পাও? জাল টানো কপিলা তরঙ্গে।

Facebook Comments

পছন্দের বই