লেখক নয় , লেখাই মূলধন

শাশ্বতী সরকারের কবিতা


জানালা

হে জন্মের চাওয়া,
তখনই বলেছিলাম এসো
আজ আমার সময় হবে না


আলাপ

‘মা’ লিখেছে সকাল
সকালের আনন্দ হচ্ছে দেখে
টিনের তোরঙ্গে দুলে দুলে
হেসে উঠছে বর্ণপরিচয়


অরুন্ধতীদি বলেছিল, ‘ফুলেরা কখনও এডিট করে না রং।’
না কোনো লিপগ্লস, না আই-ল্যাশ,
মুখ এক ড্রয়িং খাতা, জন্ম এঁকেছিল দুই ভুরু,
তাদের স্তব্ধতার নীচে দুইখানি কিচিরমিচির।
পেয়ারাডালের কাল্পনিক উচ্চতায় লাফ দিতে দিতে সূর্য উঠত।
বুক দুরুদুরু করত,
কখনও শতদ্রুদা না এলে কী হবে,
কে ফোটাবে চাঁদের আলোয় ‘ক্যাপচার’!
গাঢ়, ঘন রাত্রির রঙে চাঁদ যেটুকু আবছায়া দিতে পারে
ছাদ কখনও এডিট করে না শিল্পীর হাত।


একে অপরের থেকে

ইচ্ছে করে হারিয়ে যেতে পারা খুব কঠিন

প্রতিবার জুতো হারিয়ে ফেলা আমাকে নিরুদ্দেশ হতে প্ররোচনা দেয়

রোজ বাড়ি থেকে বের হয়ে আসি, মনে পড়ে দুধে ঢাকা দিইনি, ও ঘরে আলো জ্বালা আছে

অথচ হারালে নাকি চটিজুতো খুলে ছুঁড়ে ফেলে তোমাকে দাঁড় করিয়ে, একলা ভেতর থেকে বাড়িঘর বের হয়ে আসে, ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়ে পালায়

আজকাল আমি ও আমার বাড়ি একে অপরের থেকে দু-বেলা হারাই


শীতকাল

আমার কী যে অসুখ, কেউ জানে না। সজিনার ফুল ঝরে দুপুর ঘনায়। শরীরভরা পাথর। ঔজ্জ্বল্যহীন। সর্বোপরি, কালো। সজিনার ফুল ‘দুপুর’ পারে না, ব্যর্থ হাতে শিরার মতো, অনুগত পড়ে থাকে। লোডশেডিং হয়ে মানচিত্রে হারিয়ে যাওয়া পাড়াগাঁ’টি যেন!

তুমি আসো, আসো না।
শরীরভরা পাথরের ঘুম। ধাক্কা দিয়ে দেখেছি দু-একটা খসে যায়। ঘুমের পাথর পালকের মতো হাওয়ার নিপুণ হাতে ঘোরে। আমার কি না-ঘুমের অসুখ করেছে? আমায় কি ঘুম এসেই দেখতে দেয়নি কিছু তিন মাস?

Facebook Comments

পছন্দের বই