সেখ সাদ্দাম হোসেনের কবিতা
গুজারিশ
১
ও বাড়ির ছাদ, এ বাড়ির কার্নিশের সাথে কথা বলছে না আর
প্রাচীরের পাশে একটা নির্জন বেড়ে উঠছে
এসব কিছু না দেখেই আমি চলে যেতে চেয়েছিলাম।
বলেছিলাম একটা সাদা ঘোড়া কিনব। ব্যালকনির পাশে
এসে পড়বে যুক্তবর্ণের বিকেল
শুনলাম তুমি সমুদ্রে বেড়াতে গেছ। তোমার পাশে যুবকের গায়ে
পলিমাটির গন্ধ। শুনলাম তুমি বালির চড়ে কুড়িয়ে পেয়েছ চাঁদঘর।
তোমাদের ঢেউ বরাবর কবুল কবুল হাওয়া বইছে ওখানে
এখানে এখন ধূ ধূ রুমাল। প্রাচীরের পাশে একটা নির্জন বেড়ে উঠছে
হায়, আমি এসব কিছু না দেখেই চলে যেতে চেয়েছিলাম
২
উপচে পড়া নগরীর তল্লাটে সকাল থেকে ঘুরছি
এখানে বাড়ি ভাড়া পাওয়া যায়, কোনো ঘর ভাড়া নেই
তুমি বল এভাবে থাকা যায়?
যেদিন আমরা দুজনে একইসাথে হেরে গেছিলাম
সেদিনকার ডায়েরির পাতা ফাঁকা
শুধুমাত্র পড়শি নেই বলে, ওখানে তোমার গল্পেরা
ঘুমাতে পারছে না
৩
একই সংসার, এত কাছাকাছি আঙুল
অথচ তোমার আমার সুখ দুঃখেরা গোপনে আলাদা বিলকুল
এগুলোর শব্দজন্ম নেই
এগুলোর জন্মশব্দ নেই
তুমি ধরে নিয়েছ আমরা ভালো আছি। আমিও তাই..
যেহেতু আমরা মুখে মুখে যা বলি, আমাদের সব মিলে যায়।
৪
আমি সামান্য লোক। গাছেদের পত্ররেখা বিচার করে বেড়াই।
সেদিন দেখলাম মধ্যবয়সী দুই মানুষ শুকনো নদীর কোলে বসে
নিজেকে খুলেছে। ভাগ্যিস এ পৃথিবীতে অনিবার দুঃখ আছে তাই
নাহলে এ স্হির নদীকে তারা উপেক্ষা করে চলেই যেত
এ জনমে তারা হয়তো গাছ হওয়ার আর সুযোগই পেতো না
৫
ছেঁড়া জাল পড়ে পড়ে ভাবছে
একদিন সে কীভাবে মেতে উঠেছিল মাছদের হত্যায়
এখন সে বাতিল প্রেমিক।
দূরে, জলে দাঁড়িয়ে থাকা প্রবীণ মানুষটি নিজেকে বোঝায়
সংগত কিছু হেরে যাওয়া, জেতার অধিক
যেভাবে অহংকারী ঢেউ আমাদের পায়ে নমস্কার রেখে যায়
Facebook Comments