লেখক নয় , লেখাই মূলধন

কবিতা

কৌশিক জোয়ারদার

তোমাকে ব্যর্থ করে দিতে

নতুন করে শুরু করব এবার কবিতা লিখতে ভুলে যাব
পাথরের অস্ত্র হাতে তুলে নেবো ছবি আঁকব না
হরিণের সৌন্দর্য এবং পাখির ছাল ছাড়িয়ে
লাল মাংস আমি আগুনে ঝলসে খাব
হে অগ্নি তোমাকে নিবেদন করি ঈর্ষা ও ক্রোধ
হে অগ্নি তোমাকে নিবেদন করি লজ্জা ও গ্লানি
হে অগ্নি তোমাকে নিবেদন করি গ্রন্থ ও লাঙ্গল
এই মন্ত্র এই উচ্চারণ তুমি নাও
ক্ষুধা ও খাদ্য নির্বাপিত হলে
কোন শাস্ত্র পড়ে তুমি বুঝবে শস্য-জননী
তোমাকে ব্যর্থ করে দিতে আমার এত আয়োজন

মোক্ষ

পৃথিবীর ঘাসের উপর
মুখ গুঁজে শুয়ে আছি আমি
মাটির বুনো গন্ধে আমার দু-চোখে
জঠরের অন্ধকার নেমে আসে
বৃষ্টি পড়ছে, প্রবল বৃষ্টি পড়ছে
বাসাংসি জীর্ণানি শাস্ত্রের শবের উপর
মৃত ও বিস্মৃত দেবতারা জেগে উঠছে একে একে
সিংহাসন চিবিয়ে খাচ্ছে ক্রুদ্ধ একেশ্বর
আজ নির্বাণ হবে

আয়ুহীন জীবন

মৃত্যুর জন্য যে-প্রতীক্ষা, তার নাম আয়ু
আয়ু বড়ো আলো বড়ো বেশি আলো
পৃথিবীর জল কাদা শ্যাওলায়
সরিসৃপের মতো বুক ঘষে ঘষে
আমি তোমার জঠরের অন্ধকারে ঢুকে যাব
আহা সেই অন্ধকারে ছায়া নেই ভাষা নেই তুমি নেই
এমনকী তুমিও নেই যে-অন্ধকারে
আয়ুহীন সে-জীবনে আমি মুছে যাব

ছুঁতে পারবে না

নিজেকে নৈবেদ্য করে
খেয়ে ফেলো পূজার সমস্ত আয়োজন
নিজস্ব গিরিখাত ছিল, নিজস্ব মোহনা
ভণ্ড স্রোতস্বিনী, তোমার অসহ্য অনুসরণ
তবু কেন আমার পদচিহ্ন ধরে!
কী খাবে তুমি, কী খাবে আমার?
দ্বিধার মধ্যবর্তী শূন্যতা
তুমি ছুঁতে পারবে না কখনো

সমর্পণ

কতো মুণ্ড ছিন্ন হলে পূর্ণ হবে মালা!
এই নাও পেতে দিয়েছি বুক
পদাঘাত করো
অথবা উপড়ে নাও জবার মতো হৃদয়
গর্ভে যে-বীজ ধরেছিলে জ্ঞাত হবে বলে
যে দেখে, যে দেখায়, যে নিজেকেও জানে
তার প্রত্যাহার গ্রহণ করে তুমি ছিন্নমস্তা হও

Facebook Comments

পছন্দের বই