লেখক নয় , লেখাই মূলধন

এদুয়ার্দো গ্যালিয়ানোর গল্প।। ভাষান্তর: রমিত দে

[৩ সেপ্টেম্বর ১৯৪০-১৩ এপ্রিল ২০১৫। উরুগুয়ান সাংবাদিক, লেখক ও ঔপন্যাসিক। লাতিন আমেরিকার বিশিষ্ট সাহিত্যিক।]

আনার বছরগুলো

—জীবনের প্রথম বছর আনাকে বোঝানো হয়েছিল বিমান দুর্ঘটনায় মারা যায় ওর বাবা মা।
—কানে কানে বলেছিল ওর দাদু দিদা।
—এগারো বছর বয়সে আনাকে বোঝানো হল আর্জেন্টিনার সামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মারা যায় ওর বাবা মা।
—হ্যাঁ, এবারও কেউ একজন ওর কানে কানে বলেছিল।
—এবং ও প্রশ্ন করেনি আর
—এবং ও কথাও বলেনি আর
—এবং এর আগে ও কথা বলত
—এবং এর আগে ও প্রশ্নও করত
—সতেরো বছর বয়সে চুমু খেতে কষ্ট হতো আনার। কারণটা খুব সামান্য। জিভের তলায় ছোট্ট একটা ঘা।
—আঠারো বছর বয়সে খেতে কষ্ট হতো আনার। ঘা-টা রোদে পোড়া গাছের বাকলের মতো পুরু হয়ে উঠছিল।
—উনিশ বছর বয়সে অপারেশন হল আনার
—আর কুড়ি বছর বয়সে মারা গেল আনা
—এবং কুড়ি বছর বয়সে ডাক্তার বলল মুখের ক্যান্সারে আনা মারা গেছে।
—এবং কুড়ি বছর বয়সে ওর দাদু দিদা বলল অনেকদিনের পুরোনো একটা সত্যিই নাকি ওর মৃত্যুর জন্য দায়ী।
—এবং কুড়ি বছর বয়সে দু-একজন প্রতিবেশি দু-একটা জানলা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে বোঝাবার চেষ্টা করছিল…
‘একবার খুব জোরে, মানে খুউউউউউউব জোরে চেঁচিয়ে উঠতে না পারায় আনা মারা গেল।’

Facebook Comments

পছন্দের বই