লেখক নয় , লেখাই মূলধন

পলাশ দে’র কবিতা

সংক্রামক ব্যাধির জন্য নহে

এই যে চোখে হিরোসিমা
কানের ভেতরে রক্তমাখা সমুদ্র আর
পদ্মচক্রে বসে আছ, তুমি, ধানসম্ভাবনা
কী হবে তাহলে আমার

নাভি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না কবি
অথবা শয়তান
কে একজন ঘুরঘুর করছিল
শ্যাওলাবাতাসে সাঁতার কাটতে কাটতে
কে যেন
নুন ফুরিয়ে যাচ্ছে
জিভ ঘঁষি গুল্মে পতঙ্গে
ফাঁক হয় মৃত্তিকা
তোমার যোনিমন্থন এবং তোমার যোনিমন্থন

অ্যাম্বুলেন্স অ্যাম্বুলেন্স আমাকে নিয়ে চলো
নিয়ে চলো নিয়ে যাও নিয়ে নিয়ে নিংড়ে যাও
হাসপাতালের রাস্তা ওই ঝিনুক খেলছে
টুর্নামেন্ট শুরু হবে বৃক্ষ ও বাতাসে
আর ওই যে বুক ব্যথা করছে চড়ুই
কাশতে কাশতে বর্ষা উদাস হচ্ছে শরৎকালে

এ সংক্রমণ শুধু আমার
একান্ত, বিশ্বাস করো
এ সংক্রমণ শুধুই তোমার

চিত্র: জর্জিয়ো দি চিরিকো

সিঁড়ি নেই, পাঁজর টপকে উঠি
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন থেকে মানববোমা পর্যন্ত
চুঁইয়ে চুঁইয়ে আসি

হাত পুড়িয়ে ভাত রান্না করতে করতে
তুমি গুনগুন করছ
এপাশে কুকুর আর একটু তফাতে কাক
কাক যে পাখি সে নিজেই আঁতকে ওঠে তোমার ডাকে

ডাকো জগৎমধু
অগ্নি ও কামনা ডাক দাও
চিরকালের জল আমার ভিখিরি হয়
ভিটেমাটি ছিন্ন করে চিৎকার করছে
ফড়িং উড়ছে না কেন
কী গো ফড়িং দ্যাখা যাচ্ছে না কেন
তুমি বলো জগৎমধু
আমরা শ্বাস নেব কীভাবে

তোমার হাতমাখা নুনহলুদ
তোমার কাছেই মনখারাপের কথা বলে
গেরিলা বাহিনী
চাঁদ ভাঙছে ছলাৎছল
বিস্ময় চিহ্ন সমেত মরে যাচ্ছে মরে

সংক্রামক ব্যাধির জন্য নহে? তবুও না!
নহে নহে না না নাআআআ

এই যে হিরোসিমা ঘটেই চলেছে
নিম্নচাপ কেবল নিম্নচাপ
পানীয় জলের ভেতরে আর্সেনিক
ওষুধ ভেজাল… আবহাওয়া মেলে না পূর্বাভাসে

পেট থেকে জন্মেই শিশু আর চিৎকার করছে না
অবাক হয় অবাক তাকিয়ে থাকে

অ্যাম্বুলেন্স ও অ্যাম্বুলেন্স
কোথায় যাব আমরা তাহলে
আকাশের নীচে বাড়ির নীচে মাটির নীচে
জমাট আকরিক আর গলিত লাভা পেরিয়ে
আরও আরও আর কত আরও আছে
গো জগৎমধু
ও মধু একফোঁটা দাও না গো

কতকাল খিদে পায় না
কতজীবন রং আঁকিনি নির্জনে
ওহ্

সংক্রামককে আদর করি, এসো
ব্যাধিকে আদর করি, এসো

Facebook Comments

পছন্দের বই