লেখক নয় , লেখাই মূলধন

বিপ্লব চক্রবর্তীর প্রবন্ধ

ফ্যাতাড়ুর চোখে নবারুণ

‘লাল ঝাণ্ডা যখন জ্বলে ওঠে তখন তার নাম হয় হালাল ঝাণ্ডা’— যে-কথাগুলো বলত গল্পের গিনি। গল্পের কথক আর গ্যাঁড়া থাকে একটা অ্যাক্সিডেন্টে চুরমার হয়ে যাওয়া গাড়ির মধ্যে… সে-তল্লাটে ক্ষমতাবান লালার রাজ চলে… ওর আটাকল, গাড়ি সারানোর দোকান, হোটেল রয়েছে। রেশন দোকানও ছিল… কথকের ভাষায় ‘শালা হারামির নাম নিলে জিভ পচে যায়।’ আর ছিল বাস-লরির মালিক কর্নেল সিং। একটি ছেলের পেটে লাথি মেরে… মেরে ফেলে… টাকা দিয়ে এলাকার সকলের মুখ সিল করে দেয়… এদের এই দাপটের বিরুদ্ধে কথক, গ্যাঁড়া, পিটার, গিনিদের মতো অপাঙ্‌ক্তেয়দের চলে প্রতিরোধ… যেভাবে গিনি বলে, ‘ঘাবড়াবি না শালা। পুলিশের লাঠি ঝাঁটার কাঠি ভয় করে না কম্‌নিস্ট পার্টি। শালা লালাকা রাজ যিত্‌না দিন রহেগা— সব ভুখা মরেগা—’…

বা ধরো ‘মিউচুয়াল ম্যান’ গল্পের কথক— যে কি না আবার মিউচুয়াল ম্যান হতে চায়। (মিউচুয়াল ম্যান কোনো নাম নয় এটি একটি পদ বা উপাধি। দূরে কাছে মিলিয়ে তিনটি ব্ল্যাক মদের ঠেক আছে। মদের ঠেক তিনটির মধ্যে দু-টি পড়েছে কলকাতা পুলিশ এবং অপরটি পড়েছে বেঙ্গল পুলিশের থানায়। এদের মধ্যে একটিতে আবার কলকাতা এবং বেঙ্গল উভয় থানার পুলিশ-ই রেড করে। ‘এবার আসবে মিউচুয়াল ম্যান— তিনটি ঠেকেরই এক মিউচুয়াল ম্যান…পুলিসকে ঠেকের নামে কেস দিতে হয়। এসব গভরমেন্টের নিয়ম… এইসব কেস যে খাবে সে কে? সে হল মিউচুয়াল ম্যান। অবশ্য ওখানেই বেল দিয়ে ছাড়াবার ব্যবস্থাও থাকে… মিউচুয়াল ম্যান পার কেস পাবে সত্তর টাকা। আর সেইসঙ্গে যে কোনো ঠেকে দুবেলা চোলাই ফ্রি।’) গল্পের সেই কথকের মতো—

“ফোয়ারার সামনে, দুনিয়ার সামনে সব চিটিংবাজ, ঢপবাজ লাফড়াবাজের সামনে দাঁড়িয়ে সিনায় পুরো ডিজেল নিঃশ্বাস টেনে নিয়ে চিল্লিয়ে… জানো, আমি কে? আমি দুই থানায় কেস খাই, তিন ঠেকে চোলাই। আমি হলাম, আলবাল ফেকলু পাচু কেউ নয়, আসলি মিউচুয়াল ম্যান”…

আমরাও বলব একদিন— ভণ্ড মেকিদের উপর দাঁড়িয়ে— যে-প্রত্যয় আমাদের আছে… যা আমরা হতে চাই। চেয়ে এসেছি। হতে দেওয়া হয়নি।

‘কাঙাল মালসাট’-এর ৪ নং পরিচ্ছেদে সেই তোবড়ানো গাল-খোঁচা দাড়ি-আধবুড়ো ড্রাইভার তাই বন্ধু আমার… যার চার বছরের ছেলে মরে যায় ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায়। বেঁচে থাকলে সে জোয়ান হত… এদের জন্য আমরা লড়ব না? বা ‘বিকল্প রণনীতি’-র মহীতোষ নাতিকে নামি স্কুলে ভর্তি করতে পারে না বটে, গল্পের শেষে সাধারণ স্কুলে ভর্তি করিয়ে নাতিকে বড়ো মানুষ করবার প্রত্যয় তার রয়ে যায়… আমাদেরও তো জীবনে তাই বিকল্প রণনীতি তৈরি করতে বঞ্চিত হতে হতে…

আর সবকিছু মিলেমিশে ছাপিয়ে গিয়ে পরম প্রিয় বন্ধু হয়ে ওঠে আমার নবারুণের ফ্যাতাড়ুরা। জানো তো, এক অধ্যাপক যার কাজ ছিল (এখনও) তরুণ সদ্য নেট কুয়ালিফাইড ছাত্রদের মাথা খাওয়া। গবেষণা প্রবন্ধ ছাপিয়ে দেওয়ার নামে নিজের ইচ্ছেমতো তাদের ব্যবহার করা… তার ওমুক স্যারের দশ কপি বই বেচে দাও, তমুক দাদার ১৫ কপি পত্রিকা প্রচার করে যাও… সদ্য একটা কলেজে তখন পড়ানোর সুযোগ পেয়েছিলাম… ছাত্রদের মাঝে প্রচার করো তার বে-নামে লেখা মানে বইয়ের… আর লোভ দেখানো শুরু হয়, বড়ো পত্রিকায়-বড়ো প্রকাশনী সংস্থায় আমার লেখা ছাপিয়ে দেওয়ার… আমার বই প্রকাশ করে দেবে, তাকে সহ-সম্পাদক না করলে নাকি বড়ো কোনো অধ্যাপক লেখা দেবেন না। বারো-পনেরো হাজার টাকা দিলে পত্রিকার আই এস এস এন জুটিয়ে দেবে সেই ‘মহান অধ্যাপক’… নবারুণের ফ্যাতাড়ু আর চোক্তাররা আমায় সাহাস জুগালো। শিখালো এইসবের প্রতিরোধের… একা লড়াই করে পত্রিকার আর এন আই ও তারপর আই এস এস এন জোগাড় করে ছাড়লাম… একটা পয়সা কাউকে দিতে হয় না… কোনো দালালকে না… এই দালালশ্রেণির আমরা তখন নাম দিলাম ‘ব্রয়লার অধ্যাপক’… নবারুণ ‘সব শেষ হয়ে যাচ্ছে’-তে যেমন লিখেছিলেন—

“চারিদিকে শুয়োর ও গরুদের চেয়ে অনেক বেশি সংখ্যায় ঘুরে বেড়াচ্ছে জুডাস সংস্কৃতির অসংখ্য ক্লোন। এইসব ক্লোনেরাই দৃশ্যমান প্রত্যহ, সকাল বিকেল রাত্রি। ক্লোনেরাই সরবরাহ করে চলেছে ব্রয়লার নাটক, ব্রয়লার উপন্যাস, ব্রয়লার কবিতা, ব্রয়লার ছবি, ব্রয়লার সমালোচনা, ব্রয়লার পত্রিকা।”

নবারুণ লেখেননি ‘ব্রয়লার অধ্যাপক’-দের কথা… ক্লাস না নিয়ে টিউশনবাজি করে এদের কাজ ফি বছর পঙ্গু ছাত্র তৈরি করা… এরাই কলেজে কলেজে মড়োলিপনা চালাচ্ছে… ছাত্রদের নোটের নামে গাঁজাখরি গিলিয়ে খুশি করে দিচ্ছে… নিজেকে প্রমাণ করছে মহান অধ্যাপক… পরীক্ষায় কী কী প্রশ্ন আসবে তাও তাদের জানা। কোন অধ্যাপকের কাছে কত বেশি টিউশন পড়ে আর কে ভালো সাজেশন দিতে পারে— বিচারের এই মাপকাঠিতে সমাজে প্রামাণ হয় কে কত বড়ো অধ্যাপক… আর যারা সত্যিকারের সৎশিক্ষা দিতে চাইছে তারা এই ‘ব্রয়লার অধ্যাপক’-দের নিষ্পেষণে বনে যাচ্ছে ফ্যাতাড়ু… যেহেতু আমি সেই সময় ছিলাম কনট্রাকচুয়াল তাই নিজেকে মনে হতো ফ্যাতাড়ুর ফ্যাতাড়ুর… আমরা তিনজনে একটা ভাঙাচোরা প্রিন্সিপাল কোয়ার্টারে থাকতাম। কলেজে ছিল টি আই সি। যা টাকা পেতাম বাড়ি ভাড়া করে থাকার সাধ্য আমাদের ছিল না, আর দূ্রত্বের কারণে বাড়ি থেকে যাতায়াতও করা যেত না। আমাদের মধ্যে একজন ছিল ইউ জি সি প্রজেক্ট ফেলো। আমি বাংলার আর একজন সংস্কৃতের কনট্রাকচুয়াল (আমরা দু-জনেই বর্তমানে সহ-অধ্যাপক)। নতুন প্রিন্সিপাল এলে আমাদের থাকতে হল ছাত্রদের সঙ্গে হোস্টেলে… কমন পায়খানা বাথরুম… একটা ছোট্ট ঘরে আমরা তিনজন। ওঃ, কী সব যন্ত্রণাময় দিন! দেখছি, প্রিন্সিপালের সেই ভাঙাচোরা কোয়ার্টার ঝাঁ-চকচকে হচ্ছে… আর আমাদের সময়ের ফার্নিচারগুলোকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে… আমদের দিন কাটছে পেচ্ছাব আর ড্রেনের গন্ধে… আমাদের মধ্যে সেই ইউ জি সি প্রজেক্ট ফেলো বন্ধুর টাকা আসা বন্ধ হয়ে গেল… আর আমি মালদার কোনো কলেজে ফেরার জন্য মরিয়া হয়ে গেলাম… প্রতিটা ইন্টারভিউয়ে আমায় স্রেফ লাথ মেরে বের করে দেওয়া হচ্ছিল… কোনো ঠিকঠাক প্রশ্ন করা নয়। ঠান্ডাভাবে যেন স্রেফ রেপ করে দেওয়া হলো… একমাত্র আমি বুঝছি সেটা… আবার কোথাও আগে থেকেই জেনে যাচ্ছি, কার চাকরি হবে… আমরা তিনজনেই এই সময় নবারুণের ‘ফ্যাতাড়ু বিংশতি’ পড়ছি… আর নিজেদের মধ্যে খিল্লি করে নিজেদের ব্যর্থতার ঘা-এ মলম ডলছি… আমাদের চারপাশের নানা শ্রেণির ব্রয়লারদের নিয়ে পুরন্দর ভাট স্টাইলে কবিতা লিখে নিজেদের মধ্যে পাঠ করছি… ওদের মতো গলার স্বর বসাচ্ছি নবারুণের মল্লিনাথ, মালতিলতা, মেঘু বৌদিদের চরিত্র পাঠে… ‘ফ্যাতাড়ু বিংশতি’ বইয়ের সেই ‘অর্থাভাবে ফ্যাতাড়ু’ গল্পের শেষাংশ! টয় ইমপোর্ট কোম্পানির সেই অসৎ ব্যবসায়ীকে নাস্তানাবুদ করার মহানন্দে প্রচণ্ড মদ্যপ অবস্থায় ফ্যাতাড়ুরা… রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা টাই-কোট-প্যান্ট পরা প্রায় সাহেব এক্সিকিউটিভ যুবকের কাছে ফ্যাতাড়ু মদন, ডি এসের কুড়িয়ে পাওয়া কাগজে লেখা— ‘মি. ঢনঢনিয়া, জি. এম, টয় ইমপোর্ট কোম্পানি’… সেখানে ‘জি এম’-এর ফুল ফর্ম জানতে চায়। আর যুবকটি স্বাভাবিকভাবে যখন জানায় ‘জি এম’ মানে জেনারেল ম্যানেজার… তখন মদনের সেই অপ্রত্যাশিত প্রত্যুৎত্তর, ‘দেখলে তো, তোমরা বলচিলে হয় গাঁড় মারানি নয় গাঁড় মাজাকি।… কত বলি ইংরিজিটা শেকো, তা না বাঁড়া…’ এসব পড়ে পড়ে আমরাও বিস্তর আমোদ করেছি… ঢনঢনিয়া আমাদের কাছে তখন ব্যবসায়ী নয়, আমাদের আশাপাশের সেইসব ব্রয়লার, ইনটেলেকচুয়াল ক্রিমিনাল অধ্যাপক… ফ্যাতাড়ুরা বুদ্ধিবলে তাদের মারছে… আমরা দারুণ শক্তি পাচ্ছি।

একইভাবে আনন্দ পেয়েছি ‘কবি সম্মেলনে ফ্যাতাড়ু’ পাঠে। ফ্যাতাড়ু কবি পুরন্দরকে সেখানে কবিতা পাঠ করতে দেওয়া হবে না। মালতিলতাকে ডি এস বলে ওঠে, ‘অন্য লোক হলে আপনাকে রেণ্ডি, খানকি এইসব বলত। আমরা মা-বোনদের ইজ্জত দিতে জানি। তাই আপনার মতো বেঁড়ে খানকিকে বেঁড়ে খানকি বললাম না।… গোঁড়গেল কী জানেন? জলা জায়গায় ঝোপঝাড়ে থাকে। সাপ খায়। সেই গোঁড়গেলের ন্যাজ দিয়ে কান খুঁচিয়েছেন। এবারে কেঁদে-কঁকিয়ে কুল পাবেন না।’

আমরাও কেঁদেছি। সেই ‘মসোলিয়ম’ উপন্যাস। সাহিত্য-সম্রাট বজরা ঘোষ! বজরা ঘোষ মদন, ডি এস, পুরন্দরকে দেখাচ্ছে ‘মেমবাতির আলো’। ডি এস জিজ্ঞেস করায় জানাচ্ছে, তার পরবর্তী উপন্যাসের কথা— ‘খানদানি খানকি’। বজরা ঘোষ স্ত্রীকে নাকি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বইটা বেরুলে সে বড় পুরস্কারের আশায় আছে… কিন্তু গোলাপ মল্লিকের ছাদে ফ্যাতাড়ুদের যখন দাঁড়কাক জানায়, তিন বছর আগেই বজরা বউ পেটে ক্যানসার হয়ে মারা গেছে! বজরা আজও ক্যানসার হাসপাতালে প্রতিরাতে সেকেন্ড গেটের সিঁড়িতে বসে থাকে। ব্যাগে থাকে যশোরের চিরুনি, লক্ষ্মীবিলাস তেলের শিশি। মাথার কাঁটা। ক্লিপ। একটুখানি খালি হরলিক্সের বোতল… দাঁড়কাকও জানায়, বজরা কোনো পুরস্কার পায়নি, কেউ ওর লেখা পড়ে না। কেউ ওর নাম জানে না। ফ্যাতাড়ুরা যেন বজরাকে এ-সব না জানায়। তাহলেই বজরা মরে যাবে। দাঁড়কাক, বনবেড়াল, গোলাপ মল্লিক-সহ ফ্যাতাড়ুরাও কাঁদতে থাকে। কাঁদতে থাকে উপন্যাসের লেখকও… লেখক প্রতিশ্রুতি দেয়, এই কান্না যতটা পারবে তারা উশুল করে নেবে…

বর্তমানে এক কলেজ শিক্ষিকা হলুদ সাংবাদ উপস্থাপনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপিকাকে তুমুল হেনস্তা করেছিল… আমরাও সেই সময় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিল এই হেনস্তার জবাব আমরা দেবো। আমরা ফ্যাতাড়ু। আমরা প্রতিশোধ নিই… আর নিয়ে তবে ছাড়ি…

নবারুণ লিখেছিলেন—

“আমি একটি ইতরের দেশে থাকি
এখানে বণিকেরা লেখকদের উদ্ভাবন করে
এবং লেখকেরা উদ্ভাবিত হয়
* * *
আমি একটি ইতরের দেশে থাকি
যেখানে অবশ অক্ষরমালা চিবোতে চিবোতে
কবিরা গরু হয়ে যায়
উল্টোটাও যে হয় না এমনও বলা যায় না’’
— ইতরের দেশ

প্রকৃত লেখকের সম্মান নেই—

“কবিরা যত লাথি খেতে পারে
ফুটবলও পারে না

কুকুরেরা যখন হাল্লাক হয়ে পড়ে
কবিরা তখনও রাস্তায়
ফেলে দেওয়া ডটপেন কুড়োচ্ছে

মাথা মুড়োনো, চুলকানি মাখা
জিভ দিয়ে ঢালা ঘোল চাটছে
সকলেই বোঝে অনুভবে
অসফল চোর বা অনুভবী কবি হবে

এসব সিদ্ধান্ত কিন্তু চূড়ান্ত নয়
কবিশ্বায়ন বুঝি
কিন্তু কবি হারামি ও অপরূপ খচ্চরও হয়’’
— ‘কবিশ্বায়ন’, মুখে মেঘের রুমাল বাঁধা

এই কবিতা আমাদের চিরকাল শক্তি জোগাবে। জুগিয়েই যাবে। সৎ সাহিত্য, সৎ সাহিত্যচর্চা, সৎ পত্রিকা সম্পাদনায় সাহস জুগিয়ে যাবে… নিরন্তর শোষিত হতে হতে মরে যাইনি। নবারুণ পাঠ বাঁচিয়ে রেখেছে। রাখছে লড়াই করতে শিখিয়েছে… প্রকৃত মানুষকে, জীবনকে ভালোবাসতে শিখিয়েছে। শেখাচ্ছে… তাই তার প্রয়াণ দিবসে এই লেখা না লিখে পারলাম না… নবারুণ-সাহিত্যের নিবিড় পাঠ ও চর্চা, গবেষণা চলবে… আরও চরিত্র-সময়-চারপাশের কথা আলোচিত হবে… নবরুণে মৃত্যু নেই। চরিত্রদেরও মৃত্যু নেই… আমাদের শেষ করে দেওয়া সহজ না। জোর করে কোনো সৎ প্রচেষ্টাকে থামিয়ে দেওয়াও তাই যাবে না… আর আমরা যদি একটি প্রগতিশীল সমাজের স্বপ্ন দেখি তাহলে মানুষের প্রতি শোষণ নয় মানুষকে মানুষের মতো মর্যাদা দিতেই হবে। শোষিত বা আপাত নিরীহ মানুষ-ও কিন্তু আকস্মিক বিস্ফোরণ ঘটাবার ক্ষমতা রাখে। পাঁচুগোপালের মতো প্রত্যেক নীরব শোষিতের বুকের খাঁচায় একটি ঘুমন্ত রিভলভার পোষা আছে, যা শোষক জানে না। ‘বেবি কে’ সিরিজের মতো আমরাও কখন হয়ে উঠব এক একটা মলোটভ ককটেল। কারণ, নবারুণের কথামতো— আমরাও যে এই সোসাইটির অনার চাই না। তাই যে-কোনো পর্যায়ই হোক না কেন শোষণের মাত্রা নিরন্তর বাড়তে থাকলে বুলেট কিন্তু নির্গত হবেই। নবারুণের সাহিত্য পাঠের বিস্ফোরণের যে ঝুঁকি আমাদেরমতো পাঠক কিন্তু একদিন নেবেই। নেবেই…

প্রথম পাতা

Facebook Comments

পছন্দের বই