লেখক নয় , লেখাই মূলধন

বইমেলার ডায়েরি: সেলিম মণ্ডল

১২/০২/১৯

শরীরটা সকাল থেকেই ভালো না। সেই অক্টোবর থেকে ডাক্তার-ক্লিনিক-বাড়ি-হাসপাতাল-প্রেস করে বেড়াচ্ছি। কোনোদিন একদণ্ডও মনে হয়নি ক্লান্ত। আজ নিজে থেকেই মনে হচ্ছে ছুটি নিই। কার কাছ থেকে ছুটি চাইব? সেই মানুষটিকে কোথায় পাব যে আগে থেকে ঠিক করে রেখেছে ন’টার ঘণ্টা বাজাবে?

কিচ্ছু ভালো লাগছে না। বইপত্র নিয়ে ফিরতে হবে সুভাষগ্রাম। ব্রতীনদার গাড়ি করে দেবু ফিরবে আমায় আর যেতে হবে না। অরূপদা’ও মধ্যমগ্রাম ফিরবে। ফিরতে অনেক রাত হবে। ওদের কাউকেই আটকালাম না। অরূপদার চোখ ছলছল করছে। দেবু খুব সহজে ইমোশন কন্ট্রোল করতে পারে, ওটা ওর বড়ো গুন। সবাই ফিরে গেল। শরীর পারছে না, মাথা যন্ত্রণায় ছিঁড়ে যাচ্ছে। ন-টার ঘণ্টা শুনেই ছুটি নেব।

সবাই ব্যাগ গুছিয়ে বসে আছে। আকাশ অঝোরে কাঁদছে। বাকিদের চোখ ছলছল করছে। আমি এবার কেন জানি না একটুও কাঁদিনি। সবার দিকে তাকাচ্ছিলাম। দেখছিলাম শূন্যতা কীভাবে বৃদ্ধ হয়ে উঠছে। আলো কীভাবে মৃদু হতে হতে রাহুর পেটে ঢুকে যাচ্ছে। কেন অপেক্ষা করছিলাম কে জানে!

অপেক্ষাকে আজকাল মনে হয় একটা সেলাই মেশিন। যতটা সেলাই করা যায় ততটাই বেঁধে বেঁধে থাকা। ছেঁড়া ছেঁড়া অস্তিত্বকে বোরখা পরিয়ে কয়েকযুগ কেটে গেল। আবার হয় সে আসবে, তাঁরা আসবে… ভাবতে ভাবতে ভুলে যাই সমস্ত কথাদের কথা। শুধু আলো— ভিড়-হইহট্টগোল-ধুলো-মোলাকাত-জলের পাউচ আর ওই সুন্দর ভাঁড়ের চা বুকব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট করে রাখা।

Facebook Comments

পছন্দের বই