লেখক নয় , লেখাই মূলধন

বিশ্বজিৎ মাহাতের কবিতা

যে দিক নীরব


ধৈর্য্যকে ফেরাতে গিয়ে অধৈর্য্য কোপাল
যেমন মাছের সঙ্গে জলের সঙ্গম, দেখো,
অস্থির হয়েছে লালা
মাছরাঙা এখনও কীভাবে
শান দিচ্ছে অপদার্থ চোখ

আমার অধৈর্য-দেহ, ধৈর্য্যকে কুত্তার মতো
ঠেলে দেয় লঙ্গরখানায়


মিছিমিছি সাঁতার যে কাটছ তুমি, টিকটিকির মতো
দেওয়ালে, হৃদয়ে। লেজ তো খসবেই যদি
লোভ ফেলে জিহ্বাকে দমাও

পোকার নিকটে আমি আর টিকটিকির লেজ
সহজ সত্যের মুখে মৃতপ্রায় হয়ে পড়ি

প্রণয়

চিরুণি কি জানে তারও আছে ছোটো কুটিরের প্রণয়কাহিনী

তোমার আঙুল
নিজেই জানে, কে কার স্পর্শের ঈশ্বর

তাই চিরুণির দাড় দূরত্ব বেসেছে ভালো
কারণ, বিবাহ সম্ভাবনা

নিস্তার

সন্দেহের হাতে দেহ
ভাগ বসাব না
সামান্য পরাগগর্ভে যে মধু আপন ছিল
ভ্রমর ডাকিয়ে
হত্যা কি দোষের বলো

এ দেহ, খিল্লির পাড়া! মাথা উঁচু করে বাঁচাবে কে?
রাতারাতি কেটে রাখি অদৃষ্টের খুলি

সন্দেহের চোখে, আমি নিজেই ছেড়েছি জোঁক
যেটুকু উত্ফুল্ল রক্ত
যেটুকু অহংফণা
সব খসে গেল

যে যার পালাল দেহ থেকে অন্য দেহে লেজ নিয়ে

শরীর সম্পর্কে


কাঁটা তো তুলতেই হয়
সুরের সংগীতে কেন বিষ ঢালবে, দাঁত

কাঁটাকে অস্থির করি
কারণ, সংগীতে স্থান নেই অস্থিরের


এভাবে জড়িয়ে খুঁড়লে, হারাবে কী, প্রেম

প্রিয় ধাতুটির খোঁজে প্রত্নতাত্ত্বিকেরা এসো
সার সার খুঁড়ে রাখো নরম কান্নাকে

কান্নারা, আসলে সন্ধি, বিচ্ছেদে যেও না তার
কেঁদে মরবে অনন্ত হৃদয়

লোভ

ক্ষমার নিকট আর দাঁড় করিও না
কেটে ফেলো তিক্ত দোষসহ দেহের সম্ভার

আমাকে বাঁচাও, নাহলে আমার রূপ ঝুলবে
বিনম্র সন্ধ্যার ডালে। ঝিঁঝিঁরা সেতার হাতে
এ সম্প্রসারণ করবে, তখন তুমি কি আর একবার করবে ক্ষমা?

পক্ষপাতদুষ্ট

তোমাকে পাথর ভেবে আধপোড়া ঘিলু
খুঁড়ে রাখি বিষন্ন জমিন
হে চোখ, নিখুঁত। ফুটো নও।
ঝরাচ্ছ কী ঋণ

যে চোখ তোমার
সিংহভাগ দিয়ে আসি সেলাই পাড়ায়
সংম্বৃত বর্ষায়

আমি আর কতটুকু খুঁড়ব আয়ু?
তোমার আঙুল কয়
“ছেড়ে যাওয়া হাত বিধাতার নয়”

Facebook Comments

পছন্দের বই