লেখক নয় , লেখাই মূলধন

মুহম্মদ মতিউল্লাহ্-র কবিতা

শীতের কবিতা

গ্রীষ্মের দীর্ঘ বিকেলে যে কিশোরী প্রতিদিন আমার বাগানে আসত
সে এখন তুষারাবৃত শীতঘুম
আমি সামান্য মানুষ এতদিন দীর্ঘ বিকেলকে খেলার সঙ্গী করেছিলুম
আজ একটি-দুটি জীর্ণপাতা শীতের বিকেল দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে

এখন আমার তেমন কোনো স্বাধীন ব্যস্ততা নেই—
আমি প্রতিদিন কিশোরীর হাতছোঁয়া সূর্যছায়া
অপেক্ষাপ্রহরী

হিমার্ত বিকেল বলছে মাঘোৎসবের শীতে
সুধা আজও ফেরেনি দৈত্যের দেশ থেকে।

ভিড়ের ভেতরে

ভিড়ের ভেতরে নিঃসঙ্গতা তুমি থেকো
আমি নিজেকে বাঁচাই

ওই যে কোলাহল ওর অনেক গোপনতা আছে
সাত রং আত্মপ্রকাশ আছে—
ভিড়ের ভেতরে শুধু আমি ধূলিধূসর এক ব্যর্থতা..

আমি আত্মদীপ বিবেকিতা প্রার্থনা করি
সামাজিকতা প্রার্থনা করি

আমি লোকজন পেরিয়ে ধীরে ধীরে বাড়ি ফিরি

ভিড়ের ভেতরে নিঃসঙ্গতা তুমি থেকো
আমি আশ্বস্ত হই।

আমি নিজেকে বাঁচাই।

জবা ভিডিও হল

পঁচিশ বছর আগে এক আবছায়া ভিড় এগিয়ে যাচ্ছিল টিকিট কাউন্টারের দিকে
সমস্ত কিছুর ভেতর একটি জাগর উচ্ছ্বাস
জল্পনা..

তার জালির ওপারে টাকা গুনছিলেন যে দুজন মানুষ, তাদের পাথরের চোখদুটি শান্ত নিস্পৃহ

তারপর একটু একটু করে আলো নিভে আসা..

আলো কমে এল। বিকেলবেলা।
যতদূর মনে পড়ে তুফান উঠেছিল বন্ধুমহলে

পরাগত সন্ধ্যায় শ্রোতা সেই বান্ধবী বলেছিল
করপুটে আনন্দলোক, গীতাঞ্জলির পুন্যে যেন
থেকো।

বন্ধ জানালা

দুদিকের জানালা একসঙ্গে খুলে রাখা একটি অমনোযোগ। একটি জানালা বন্ধ থাকা ভালো।
ওই অন্ধকারটুকু ভালো। পূর্ণ একটি মনোযোগ বন্ধ জানালার চারপাশে খেলা করে। ঘোরাফেরা করে।
তুমি দেখতে পাও বন্ধ জানালার ওপার।
ছায়ার ওপারে কাদের রঙিন শাড়ি মেলা আলগোছে, ছেলেমেয়েদের ছোটাছুটি, তারপর
আমগাছ, সারিসারি তালগাছ। ফকিরের চিমটি ঘুমিয়ে আছে নিমের ছায়ায়..

তুমি দেখ, খোলা জানালা কিছুই বলছেনা। তুমি ওর নাম ধরে কত ডাকাডাকি কর, খোলা জানালা শুনছেইনা
ভাঙা ইট গোটা ইট সবাই কেমন ঘুমিয়ে গেছে!

Facebook Comments

পছন্দের বই