লেখক নয় , লেখাই মূলধন

কবিতা

রাজর্ষি দে

ওবিচুয়ারি

আমি শুধু মুছে গেছি জলে
অমেয় বালি দানা ঝরে গেছে ঘড়ি থেকে
বালি পড়ে কিচকিচ দৃষ্টি ঝাপসা হল কার
তার হদিস তত্ত্বতালাশ আপাতত থাক
অযথা বোঝা ভারী করে কাঁধ

সমাহিত বিকেলের দিন ঢলে গেল কবে
কবে?
সে-হিসেব রাখিনি তো
হঠাৎ জানালায় চোখ গেলে
বুক খাঁ-খাঁ করে ওঠে
ফেরিওয়ালা ডেকে গেলে মনে পড়ে
কার কার ডাক ফাঁকি পড়ে গেল

বন্ধুরা ভালো আছে
আত্মীয়পরিজনও
নিশ্চয়ই
অবশ্য ডিসেম্বর হতে হতে কত স্বজন ঝরে গেছে
সে-হিসেব রাখেনি দশ-পাঁচের খাতা
আজ বটতলা একা
টর্চ ফেলে দেখি
শেষ পত্র যাই যাই করে

তবু
টেবিলে পেনটা পড়ে আছে
আলমারি ঝাড়লে
এখনো দু-তিনটে শখের জামা পাবে
সূদুর কাপ্তানির অবশেষ—
দু-সাইজ ছোটো জিন্স
এইভাবে জঞ্জাল পোষে কেউ?
ফেলে দাও, ফেলে দাও
সব দিক শান্তিকল্যাণ হোক

মারিজাতক পঙক্তিগুচ্ছ

এ অদ্ভুত অন্ধকারে একলা আলো দিচ্ছে চিতা
*
জলে যার লাশ ভেসে গেল তার ছিল সাঁতারে অনীহা
*
শ্বাসের মূল্য মিটিয়ে দিতে ভাতের ভাঁড়ারে চাবি
*
মুখোশ পরা নিষ্কলঙ্ক হল্
*
যে-কোনো স্পর্শ স্যানিটাইজ করে নাও
*
সন্তান মরে গেলেও বিড়ম্বনা বাড়ে

লিপ টু লিপ

শ্বাস না পেলে নীল লাগে
দৃষ্টি বিন্দু হয় নক্ষত্রের মতন
ধ্রুবতারা ফিশফিশ করেছে শ্বাপদের কানে
এইবারে সভ্যতা ঝরে যাবে প্লাস্টার হয়ে
স্যান্ড-পেপার ঘষা হাপরের ডাকে
ক্ষুৎপিপাসাও দূরে যায় (দারাপুত্র এ-ক্ষেত্রে অলীক)

একটু হাওয়া ছাড়ো প্লিস
অন্তত এই অজুহাতে, হয়ে যাক লিপ-টু-লিপ

দু-হাত রেখেছি মাটিতে

বিষ শুষে নিই কানা চোখে
বিশ-আঙুল শিকড় বুনি
চতুষ্পদ কুকুরের ধারা
জ্বর পেটে চাঁদ খেয়ে নিই

চব্য-চোষ্য-লেহ্য-পেয়

হাড়মাস খেয়েছিস শালী
আমিও ছিঁড়েছি নাভিডোর
কে কাকে খেয়েছি আগে পিছে
মাংসের গুণ মাপা হোক

পোয়াতী ঘাসের দুধ

পোয়াতী ঘাসের বুক বেয়ে
শিশিরের দুধ ঝরে পড়ে
শুষে নিলে মা-হারা যুবক
প্রেমিকার নাভিমূল পড়ে

Facebook Comments

পছন্দের বই