লেখক নয় , লেখাই মূলধন

কবিতা

তনুজ

শবখুন


দীর্ঘ রোজ কিছু (কিছুই) না লেখার পর
আজ, হিজরি সন ১৪৪২-এর গুমশুদা গর্ভ
মহিনা শাওয়ালের উনিশতম রোশনদানের
শ্রেষ্ঠ নূরে আলোকিত সমস্ত জিজ্ঞাসার উদ্দেশ্যে
আল-ফতিহা পড়ার প্রাকে
ইত্তেফাকন ফুনুন-ই-শের মীর আব্দুল হাইয়ের
স্বচ্ছল রেকাবি থেকে একটি স্পষ্ট আখরোট
মুখে ইজহার করতেই

আমার অলিখিত স্বপ্নের দাঁত ভেঙে গেল

এই দেখুন, হাঁ।


কেমন বন্ধু চাও তুমি?

যেমন মনস্থ করেন জালালউদ্দিন রুমি
যখন কাঁদেন তিনি, তবরিজে শমস্-এ সাত রোদন।

এবং কীভাবে খুঁজে পেলে তাকে
ফহেশি মোরগের ঝুঁটি হবে লাল,
বাক্যভুক ছায়া
না-শব্দে হেঁটে চলে যাবে?

এইসব উত্তরে মিঞা, বিষয়ের চোখ পড়ে থাকে।

উন্মার্গসংগীত মেড ইজি


ঐশ্বর্যরহিত
বাজারের থলেতে
একটা মাছের মাথা

প্রতি কিলোমিটার
অন্তর

ঝিমঝিম করছে

তবু আমার হাত সরছে না
গোপনতায়, রোদে

আমি এই মাছের মাথা অর্জন করে খাব

আমি এই মাথার মাছ তর্পণ করে খাব।


জঙ্গলে বেড়াতে গেলে
এমন বৃষ্টির দিনে কোনো

এমনই বৃষ্টির দিনে
কোনো জঙ্গলে বেড়াতে গেলে

সহসা এমনই দুর্বল চাপে পায়ের,
জল ও অতসী টপকালো ব্যাঙ!

প্রায় তরলে সরল করা জল
প্রায় ঘচর-ঘোচর করা
অতসী টপকে গেল ব্যাঙ!

ঘাসের ছিটকিনি খুলে বসে আছ?
এখনও ঘাসের ছিটকিনি বসে আছো খুলে?


বিষণ্ণতার একমাত্র ভাষা আরবি শিখতে চাইলে
নওরোজ মাদ্রাসার পাক মৌলবি জিগাইলেন,
গ্রাম পঞ্চায়েতের তৎকালীন লালপতাকা রঙের চেয়ার জিগাইলেন,
ডুবগাঙের তস্কর জল পায়ে জমিয়ে রাখার বেশরা পদ্ধতি জানা
আশ্চর্য জরায়ুর মালকিন মেহেরুন্নেসা জিগাইলেন,
গাঁজাখেতের সুরঙ্গ আলো করা আশিক ওরাংয়ের
নতুন সাইকেলের ঘণ্টিটি জিগাইলেন,
ভেজা কারেন্টের তারে লটকানো
‘চড়ুই না? হ, হ, চড়ুই’-চেহারার
লোকাল কাউন্সিলার জিগাইলেন

ডাক্তার কি মুসল্লি হইবা?

এবং এই অনধিক প্রশ্নের উত্তরে
না মৌলবি সাহেব, না, ও গ্রাম পঞ্চায়েতের লালপতাকা
রঙের চেয়ার, না, না গো মেহেরুন্নেসা,
না রে ভাই আলো খাওয়া আশিক ওরাং, না,
শ্রীশ্রী ‘চড়ুই না? হ, হ, চড়ুই’ চেহারার লোকাল কাউন্সিলার,
(আপ্নেরেও কইতাসি) না, একে একে সমস্ত অস্তিকে
নিজের পূর্ণনাস্তি দিয়ে ভাগ করার পর
একদিন এক সীমান্তঘেঁষা ডাক্তার

দিনের হালাল হইতে হইতে রাতের ঝটকা হইয়া গেলেন।


যদি গ্যেটের পশ্চিম-উত্তর দিওয়ান
পড়া থাকলে শতাংশের এক
হাফেজ শোনা হয়ে যায়

তবে আমার লেখা পড়েও কেউ
কল্পনাপ্রবণ হতে পারে

ভাবতেই সকালের নিঃসঙ্গ মেদুরতা
পাট ভাঙল রাতের

কিন্তু এত এত অতীত,
এত এত ভবিষ্যতের ভিড়ে
আমাকে সে কোথায় খুঁজে পাবে?

বস্তুত, এত বেশি খরচ না হওয়া অতীত ও
এত বেশি জমতে থাকা ভবিষ্যৎ যে
আমার অনির্দিষ্ট পাঠকের সুবিধের জন্য
ধরে নিচ্ছি
x হচ্ছে সমগ্র অতীত
এবং y কক্ষে
নির্বাচিত প্রবণতার মতো বেজে চলেছে
ভবিষ্যৎ, বারোটা দুই,
বারোটা এক, বারোটা, আমার লেখার সময়।

অতএব পাঠকের কল্পনা, সমগ্র অতীত ও
নির্বাচিত ভবিষ্যতের ফুটেজ খেয়ে
লেখা হল তনুজের আর একটি কবিতা।

বস্তুত, আরও একটি বাংলা কবিতা লেখা হয়ে গেল

তালিয়াঁ!


মাটির দুটো সন্ত্রস্ত হাত

যদি ধুয়েও যায়
মুছেও যায়
মিশেও যায়
মাটির দুটো পরিযায়ী স্তনে

ইত্যবসরে

অনল হক
অনল হক

বলতে
বলতে

যদি-বা ক্লান্তি চলে আসে

তবুও
ভুলে যেয়ো না

এই জনমের
মুখ হবে
মুখোশমাত্র।

Facebook Comments

পছন্দের বই