সরোজ দরবারের গল্প

০৮/০২/১৯
দিনটা শুরুই হল খুব খারাপভাবে। এক ফ্ল্যাক্স গরম চা পায়ে পড়ল। তীব্র জ্বালা করছে। আজ কেউ আসবে না। শুরু দিকটা একেবারেই একা সামলাতে হবে। একার পক্ষে টেবিল সাজানো, ভিড় হলে বিল করা খুব চাপের। নাহ্, ভয় পাইনি। একটা সময় গেছে পত্রিকার সমস্ত কাজ একাই করেছি। প্রেসে পত্রিকা ছাপাতে দিয়ে আসা থেকে শুরু করে মাথায় করে নিয়ে আসা। যাইহোক, অনেকটা আগেই বেরিয়েছি, কিন্তু স্টেশনে গিয়ে দেখি ট্রেনের গণ্ডগোল। লাইনে কাজ চলছে। ট্রেন লাইন ছাড়া আর তেমন রুটও নেই। দেড় ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ট্রেন পেলাম। উলটোডাঙায় দেখা হয়ে গেল আনসার কাকু আর অমৃতাভদার সঙ্গে।
০৬/০২/১৯
পনেরোটা রোজা পেরোলেই, ছেলেবেলায় আমরা গোনা শুরু করতাম— আর কতদিন পর ঈদ! দিন যত কমে আসত কচি কচি মুখগুলো হয়ে উঠত আরো বেশি উজ্জ্বল। এখন আর ছোটোবেলা নেই। নেই উৎসবের সেই আনন্দ। এখন সারাবছর অপেক্ষা থাকে এই বইমেলার জন্য। মেলা শুরুর দিন থেকেই আমাদের ঈদ। দিন যত এগোতে থাকে ভিতরটা হু হু করতে থাকে। ঠিক যেন উলটোটা।
০৫/০২/১৯
মনটা আজ খুব এলোমেলো। ল্যাদ খেতে খেতে সকাল গড়িয়ে গেছে। বেজে গেছে আড়াইটে। যে মানুষটার একটা মানে একটা বা দু-টো মানে দু-টো, সেই মানুষটি, অরূপদা আজ আসবে না। কিন্তু মেলায় ঢোকার আগে যদি এমন ফোন আসে— ‘এটা তবুও প্রয়াস? আপনারা আজ বসবেন না?’ তখন সমস্ত বিষণ্ণতাকে কষিয়ে এক চড় বসানো যায়। নিজের ভিতর অপরাধের বুদ্বুদ ফুটতে থাকে।
০৪/০২/১৯
দেখতে দেখতে চতুর্থদিন চলে গেল। সোমবার। ভিড় তুলনামূলক কম হবে এমন আশাই ছিল। দু’টো আড়াইটের দিকেও লোক তেমন ছিল না। আজ রবিউল এসেছিল চাপড়া থেকে। আমাদের আরেক সহকর্মী। আমি আর রবিউল সম্পাদনা করছি ‘ছাদ পেটানোর গান’ বইটি। ওঁকে দেখলাম অনেকগুলো গানের বই কিনেছে। এ-বছর আমিও অনেকগুলো গানের বই কিনেছি। কাজটা নিয়ে দু-জনই খুব আশাবাদী। জানি না, কী হবে। দুজনই এ-ফিল্ডের লোক না। ভালোবেসে এই কাজটাতে নামা।