লেখক নয় , লেখাই মূলধন

কবিতা

রাজর্ষি মজুমদার

পশ্চিমঘাটের গান


কারখানা আজকের মতো শেষ— ফেরবার পথে তুমি আমি চলো পাহাড়ের দিকে যাই— চলো নিঃশব্দে টিটি পাখিদের বাসা খুঁজে দেখে আসি তাদের বিশ্রাম।

পুরোনো মানুষের গুহা পার হয়ে ডান দিকে গেলে সমস্ত প্রান্তর দৃশ্যমান হয়ে আসে—
তুমি সে-সব জানো। তুমি জানো বৃষ্টির পর ঘনশ্যাম মেঘ করে আসে বিরহের গায়ে, দু-একটি পোকা ওড়ে চিরন্তন তাপের সন্ধানে— তুমি ঠিক জানো প্রত্যেকের নাম— বুকের নিকটে এনে তাদের যাত্রা পূর্ণ করে দাও।

আর আমি কাঠ জড়ো করে রেখেছি গুহায়—
বৃষ্টি নামলে ফের আগুন জ্বালাব।


টুংটাং ভেসে আসছে নির্মীয়মাণ বহুতল থেকে, তার পেছনের আকাশ এখনও ধূসর— এবার কি তবে বৃষ্টি হবে? এবার কি আমরা খাবারদাবার সাজিয়ে বসে থাকব বারান্দায়?

সকাল হলে এই কিশোর শহরটির রাস্তায় নেমে আসে উড়ুক্কু ভেড়ার পাল— আর্দ্র বাতাসের স্পর্শে তাদের ডানাগুলো অদৃশ্য হয়ে থাকে, আর মেষপালকটি ঠিক যেন মারাঠি যুবা— পশ্চিমঘাটের সবুজ ঢালগুলি বেয়ে সিধে নেমে এসেছে এই কংক্রিটের রাস্তায়। হলদেটে পশম নিয়ে তারা এগলি সেগলি চক্কর কাটে ক্রমাগত— মেঘ করে এলে হঠাৎ উধাও হয়ে যায়।

সারাদিন আমরা এই ঘরে গান শুনি— শুয়ে শুয়ে ভেড়াদের গুনে চলি রোজ।


ছোটো শহরের মাঝে খুন হয়ে গেছে সদ্য যুবতি— সেই রহস্যকাহিনি আমাকে বিব্রত করে। অজানা গল্পে বুঁদ হয়ে অভ্যাসমতো খুঁজে বের করি কার কী অভিপ্রায়— কুয়াশায় কোন গাড়ির আলো দৃশ্যমান ছিল— কেনই-বা প্রেমিকটি বিছানা ছেড়ে সন্তর্পণে বেরিয়ে গেছিল বাড়ির থেকে।

নানান প্রশ্ন ও উত্তর জানালাভরা এই ঘরটিতে জেঁকে বসে— ধোঁয়ার মধ্যে ফুটে ওঠে কুহকের কল্পনাজাল। সাড়া নেই ভেবে তুমি এসে দেখ অনুতপ্ত যাজকটি এককোণে বসে কাঁদছে— গোয়েন্দা পরিষ্কার করে নিচ্ছে ব্যবহৃত পিস্তলখানি— ঝরনার মাঝে পড়ে থাকা মেয়েটির চোখ খেয়ে যাচ্ছে সোনালি মাছেরা।

Facebook Comments

পছন্দের বই