লেখক নয় , লেখাই মূলধন

কবিতা

মানিক সাহা

বৃক্ষকথা

ইদানীং আমি আর খড়গোশ হতে পারি না
ঘাস সবুজ হয়ে পড়ে থাকে
ঘাস হলুদ হয়ে পড়ে থাকে

মাটি সরিয়ে দেখি
এতসব দানাপানি, সাজিয়ে রাখা আতরের শিশি
রং-করা টিনসেল, খেলার জন্য নরম তুলতুলে দুটো বল
এ-সব আমার ভোগ ও বিলাসিতার পাপ
এতদিন পর এইসব বুঝতে পেরেছি

আলোর কবর থেকে উঠে আসছি বৃক্ষের মতো

গাছ আমার প্রিয় সহচর
সে আমাকে অক্ষর চিনিয়েছে।

অন্ধত্ব

নিজেকে সরিয়ে নিয়ে একা হয়ে আছি

মাটি ও জলের সংসারে মানুষ একা হতে খুব ভয় পায়
কষ্ট পায়। আমিও পেয়েছি।

মানুষের কাছে আমার তেমন কিছুই চাওয়ার ছিল না।
হাত ও পা খুলে রেখে পুকুরে স্নান করেছি
পূণ্যবান হতে চেয়েছি
এবং আমার চোখদু-টি— সেই কুক্ষণে—
কোথায় যে হারিয়ে গেছে! খুঁজে পাইনি।
এতদিন ধরে তাই অন্ধ হয়ে আছি।

মুখোশ

ভাণ করার মতো ভালো একটা মুখোশ খুজেছি এতদিন
ঘাস কাটতে আসা এক বুড়ি আমাকে দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলেছে

একা মাঠে নেমে গেছি, পোশাক পুড়িয়েছি।তার ছাই দিয়ে
রঙিন পাখি বানিয়ে ছেড়ে দিয়েছি আকাশে

গাছ চিনে চিনে পুরোনো মুখোশগুলি বাড়ি ফিরে গেছে।

নিরাময়

আমাকে যে বাড়িতে ফেলে তোমরা আলো হয়ে গেছ
কোনোদিন আমি তার আদরের কণামাত্র ভাগ চেয়েছি কি?

বৃক্ষের কাছে আমি আরোগ্য প্রার্থনা করেছি—
সে আমাকে ফুল-ফল, ছায়া ও নিরাময় দিয়েছে।

অথচ বারংবার আমাকে তোমরা এই বাড়িতেই ফেলে চলে গেছ
আমি তাই বাড়িটির বুক জুড়ে বৃক্ষের নিরাময় ছড়িয়ে দিয়েছি।

 

 

Facebook Comments

পছন্দের বই