লেখক নয় , লেখাই মূলধন

কবিতা

রূপক চট্টোপাধ্যায়

একগুচ্ছ গোলাপের প্রলাপ


প্রলাপের তীর ঘেঁষে আমার
জ্বরের সংসার!
রোজ থালাবাটি ছোঁড়া। গালাগালি। অরন্ধন। তবু
বনের কোনে ধাতব চাঁদ এলে
গার্হস্থ নিয়মের পদাবলী ফেলে, কালো
কলজে ধুতে যাই, জোৎস্না গোলা জলে।


তির ছুড়ে দাও।
বুক পেতে আছি! আমি ইচ্ছামৃত্যু চাই না।
বরং মৃত্যুর কাঁধে ভর দিয়ে, তোমার দুপুর
দেখব। দেখব বিকেলের বিনুনি তুমি কত
সহজ করে বাঁধো!
কত সহজ হয়ে যায়
বসন্তকাল! শীতের পিছু পিছু
সাদা রাজহাঁস ছুটে যায়। আমার
মৃত্যুর পিছু পিছু ছুটে আসুক
আদিম বর্ষাকাল!


সৌভাগ্যের শৈলশিরায় একদিন
সূর্যোদয় হোক। আমরা সবান্ধব দেখতে
যাব। আমরা ধাতব যন্ত্রণাকে বুকের ভেতরই
কবর দিয়েছি! সেখানে এখন বনতুলসীর ঝোপ,
বিষণ্ণ ডাহুক। আর ছিটকে পড়া ভ্রম!


একদিন ঠিক ধর্মের বাকল খুলে,
সূর্যোদয়ের সামনে,
উলঙ্গ মানুষ হয়ে দাঁড়াব।
সেই হবে শ্রেষ্ঠ পরিচিতি। নাগরিক মানপত্র
ছিঁড়ে ফেলে, ভাসাব আড়বাঁশিতে
ভীমপলশ্রী। চন্দনবনের রাধাকে দেখে
ডেকে উঠবে ডাহুক পুরুষ!


শরীর জুড়ে ক্যাকটাস হিংস্রতা নিয়ে
জেগে আছি জগদ্দল ভ্রমে। মৃতনদীর
তৃষ্ণারা জোনাকি সেজেছে। এই দায়ভার
বইতে পারি না আর। তীব্র আকাঙ্ক্ষায়
জ্বলে উঠে কালপুরুষ হই মাঝরাতে।
মাঝে মাঝে মনে হয়, পৃথিবীর অন্তঃস্থলে বসে
আমিই গর্ভসঞ্চারের শেষ মানবশিশু হব!

 

Facebook Comments

পছন্দের বই