লেখক নয় , লেখাই মূলধন

কবিতা

সায়ন

নাকছাবি ভাঙা দেশ!


জানালা খোলো, আলোপাহাড়ের দেশ
প্রিয়ার কাজল, জেলের মধ্যে নাতাশার হাত মুঠো
বিদুৎ লিখি অন্ধগলির ভাষায়

নিষ্ঠুর চাঁদ, পাখিনীর ঈর্ষা বিলাপ
আয়না দেখে গণতন্ত্রের হাড়-মাস

মেঘ আসে, চন্দনকাঠের আগুন
দেওয়ালে কি আছে জানো? বিরাট ছোবল—

যত রাত গেছে কেটে
কাচের ছায়া
মনের উপর ছেয়ে গেল
নাকছাবি ভাঙা দেশ


কে যাও ওই পথে, আশ্রয়
পাথর এঁকে দেয় তোমার রক্তাক্ত নূপুর
কত ঢেউ ঝাপিয়ে পড়ে ছাদের মাটি
গাছের হাতে বাঁধা মধুবনী আঁচল

হরিণের জেগে থাকা চোখে নামে বৃষ্টিভরা মেঘ
ওই দেখো— কী বিরাট চুলে ফাঁস লেগেছে সন্ধ্যামালতি চাঁদ,
পীতাভ নদীঘর, জলের নীচে জল
এই গর্ভ বৃন্দাবন, আমাদের ভারতবর্ষ প্রাণ
বাধ ভাঙনের আলিঙ্গন

সমুদ্রের ওপারে সুন্দরী গাছের ঘর
নগরের আকাশ গলা চাঁদ নিয়ে পুঁথিপাঠ
পাথরে বসে স্পর্শ করে অক্সিজেনহীন দেশ


মাজারের ভিতর লুকিয়ে আছে মানুষ,
ইট পাথরের দেহ। সাঁইজি তার সাধনানীলের গান ধরতেই, উঁচুতে লাফ দিল পিতার কলজের আগুন।

তমালতলা আর বেনুবনছায়ার জলে— লালনের কোলজে রঙের ছায়া। জ্যোৎস্নার আলোয় ডুবে যাচ্ছে অলীক মানুষের সংসার!


আমরা ফিরে এলাম বধ্যভূমির আখরায়
স্বচ্ছন্দ মৃত্যুছাপ, প্রাচীন ভূমিতাপ গন্ধ।
পাঁজরের ইতিহাস লিখতে লিখতে আঁকড়ে ধরি ভগবানের কবজি… বরাহমিহিরের খাতা
মেঘের কাছে দেখি— বৃষ্টির ভেজা চুলের আকাশ

এখন সকাল হয় শিশির আর সায়ানাইড বিন্দুর মাঝে।


ঝড়ে পোড়া হাজার চাষির চিৎকার, থালায় কান্নার গ্রাস
বন্ধ দরজায় ওলট-পালট হয়ে যায়
যাকে তুমি কোনো একদিন
ছায়ামানুষের দেহ ভেবে চেয়েছিলে ভোট।

লোকটা দৌড়ে এল বহু দেশ, নগর, গ্রাম, খাপ পঞ্চায়েত— তবুও ওর কোনো দেশ নেই

এখন শুধু হাত ভরা করোটির বোঝা,
ডান হাতে স্ট্র্যাপ ছেঁড়া চটি।

 

Facebook Comments

পছন্দের বই