কবিতা

মনোজ দে
অদ্ভুত বাড়ি
১
হয়তো মনে মনে খুব খুশি তুমি
এই যে এত ঝামেলা, ছোটাছুটি
সবই ছেড়ে যাওয়ার বাহানা, এতদিনে নিশ্চয় বুঝেছ
তবে কেন, গভীর রাত্রেও চুপ থাকো
অভিমান?
চলে গেলে বুঝি ভালো লাগবে?
কতদিন এভাবে পাথর হয়ে থাকবে
বলো, মুখ ফুটে বলো, “মনিব, ছেড়ে যেয়ো না”
২
সত্যি বলতে, বড্ড বেমানান তুমি
কাচের জানালা, ফল্স সিলিং, মার্বেল
কিচ্ছু নেই। শুধু ঝরে পড়ে চুন-সুরকি, ধুলো
ধোঁয়ার ভেতর
লাল হয়ে যাওয়া চোখ সামলে নিয়ে দেখি
উনুনের পাশে বসে হাতপাখার বাতাসে
জেঠিমা শেখায় আমাদের, গৃহস্থালী, ধোঁয়ার উপকারিতা
৩
“বাড়িতে সন্ন্যাসী ঠাকুর আছেন”
তাই মুরগি মাংস হত না বাড়িতে
এই বিশ্বাস খাওয়ার উপর খানিক
বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল
ধীরে ধীরে যুক্তি এল
ঈশ্বর এমনই আলগা, তর্ক এগোয়নি তেমন
কেবল দেখেছিলাম,
সন্ন্যাসীর অনুপস্থিতি বাড়িকে দু-টুকরো করেছিল
৪
একটা গ্যারেজঘর। মাচার বদলে ডিমান্ড খাট
বইগুলো সব পাশাপাশি থাকবে
ইচ্ছেমতো তাক থেকে পেড়ে নেওয়া
খোঁজার সময়টুকু সাশ্রয়। ক্যান্ডির জারে আর
পিঁপড়ে লাগবে না অবশিষ্ট চিনির জন্য
একটা একক রান্নাঘর
এ-সব দীর্ঘদিনের ইচ্ছে বলতে পারো
একটা সামান্য ইনভার্টার। শুধু আলো নিভে গেলে
আমাদের আগামী প্রজন্ম সিঁড়ির তলায় লুকোতে পারবে না
Facebook Comments