ছায়াশলাকার ঘর
অ্যাসিডবৃষ্টি। ভিজে যাচ্ছে মহাফেজখানা। দেহ এক হাড়ের দলিল। দেহ এক অস্থাবর ভূর্জপত্র। সেঁকে নাও। তুলো উড়িয়ে দিতে দিতে হাসিতে ভেঙে পড়ছে বালিশ।
টানা দুই দিন দুই রাত ধরে হাঁটছি। শরীর এখন সামনের দিকে কিছুতেই এগুতে চাইছে না। তখনও সূর্যকে ক্লান্ত অবিশ্রান্ত লাগেনি। কিন্তু ক্লান্ত-অবিশ্রান্ত আমার চোখে রাজ্যের ঘুম। নিজেকে মাটিতে বিছিয়ে দিলাম। সূর্য বিশ্রাম শেষ করে কপালে আলোর স্ফুরণ ফেলে। আড়মোড় ভেঙে হাঁটতে শুরু করি আবার। পলক ঘুরতেই দেখি একটি বিড়াল আমার ছায়ায় হাঁটছে। বিষণ্নতা কাঁটিয়ে, কৌতূহল থমকে দেয়; দাঁড়াই।
করিমন বিবির মরাকান্না দু-ঘণ্টার বিবর্তনের পর একঘেয়ে নাকিসুরে ঘ্যানঘ্যানে কান্নায় পরিণত হয়েছে। প্রথম দিকের স্পষ্ট প্রলাপ এখন বিকৃত হয়ে গোঙানি। খেই হারানো কান্না দলা পাকিয়ে আছে বাইরের ঘরটায়। করিমন বিবির নাক, চোখ, গাল ফুলে গিয়ে গোল আর লাল হয়ে চকচক করছে। পেট ফোলা করিমন বিবিকে এখন তুলোভরা স্ফীত ভাল্লুকের মতো দেখাচ্ছে। পার্থক্য শুধু,— ওই গালে পিন ফুটালে চামড়া ফুঁড়ে ভক করে তুলোর পরিবর্তে তার সমস্ত শোক বেরিয়ে পড়বে।