Categories
গদ্য

কুন্তল কোলের গদ্য

এই দুটো গল্প আমি উৎসর্গ করলাম আমার প্রিয় বাথরুমকে


তুমি অনুভব করো সেই হাগাটা যেটা আমি করে উঠতে পারিনি…

কে যেন পায়ের তলায় জ্বালানো সিগারেট ফেলে চলে গ‍্যাছে— না দেখে ফেলে দিলাম পা— বলে উঠলাম উউউউ— কিছুক্ষণের মধ্যেই চামড়াটা ফুলে গেল— জল জমল তার ভিতর— তৎক্ষণাৎ সেফটিপিন দিয়ে উসকে দিলাম— দু ফোটা জল গড়িয়ে পড়ল মেঝেতে—

Categories
গদ্য

প্রলয় মুখার্জীর গদ্য

ভ্রমণ আমার মেয়ের নাম

মেয়ের দেখা

আজ প্রথম ও কাঁঠাল দেখেছে। ধূসর বাদামি গুঁড়ির গায়ে প্রেত পূর্ণিমার মতো শিশু কাঁঠাল। গুঁড়ির গায়ে গায়ে কণ্টক আরতি। কচি কচি ধুমকেতু নিকষ সন্ধ্যার মতো গুঁড়ির গায়ে লেগে রয়েছে। অজস্র অজস্র। এই আমার তিনমাস পনেরো দিনের মেয়ে। কানে টগরের দুল। সে দেখে ফেলেছে শিশু কাঁঠালের গায়ে দু একটি টুনটুনি লন্ঠন।

Categories
গদ্য

শুভ্রা মুখার্জীর গদ্য

যৌথথা বা গোপন আঁতাত

একটি সহিংস প্রেমের দৃশ্যে ঢুকে প’ড়ে বোঝা যায় প্রেম ও ঘৃণার মধ্যে বস্তুত পার্থক্য নেই। দু-জনের গায়ের রঙের ওপর লালার সর আড় ভেঙে বসে অপেক্ষা করছে, তীব্রতা ফুরিয়ে গেলে আদিম নিয়মের মতো চেঁছেপুঁছে ফেলে দেবে। ক্রমশ হাইড্রেনপ্রীতি বাড়ে, কবিকে আদর্শ মনে হয়, প্রতিষ্ঠাকে বড়ো কোনো ভুল।

Categories
গদ্য

পঙ্কজ চক্রবর্তীর গদ্য

স্মৃতি বিস্মৃতির চেয়ে কিছু বেশি

দূর থেকে দেখি বিস্মৃত লেখককে সামনে রেখে পুনরুদ্ধার প্রকল্প। মাঝে মাঝে সন্দেহ হয়। সাফল্যের একটা অস্ত্র হিসেবেই কি বিস্মৃতির এতখানি গ্রহণযোগ‍্যতা?

Categories
গদ্য

দীপ শেখর চক্রবর্তীর গদ্য

মাথার ভেতর এই গানটা বেজেই চলেছে

যেন একটা গান থামছে না। থামাচ্ছি না আমি। বেজেই চলেছে পরপর আবার আবার বেজে চলেছে আর প্রতিটি শব্দ বেজে বেজে একটা অসুস্থতা হয়ে গেছে। সামনের দিকে তাকাই ডান দিকে একটা মন্দির, ঠিক তার সামনে রুগ্ন মেয়েটি চোখের ইশারা করে। আশ্চর্য চোখ তার, মনে হয় আমার বুকের মধ্যে একটা হুঁক লাগিয়ে এমন টান মারলো মনে হল এখুনি গিয়ে খামচে ধরি ওর ঘাড়।

Categories
গদ্য

বিধান সাহার গদ্য

বাদামি বায়স্কোপ

সিমি আর চৈতি সেদিন সকাল সকালই চলে এসেছিল। ‘আঙ্কেল আঙ্কেল চলেন ঘুইরবার যাই।’ আমারও ভোর দেখার বাতিক। মেয়ে দু’টির মুখের ওপর ভোরের পবিত্র আভা পড়ে ওদের আরও স্নিগ্ধ আর কোমল দেখাচ্ছে। হালকা-পাতলা গড়নের শ্যামবর্ণের মেয়ে দুটোর চোখে অপার বিস্ময় আর কৌতূহল। কোনো এক শহুরে আঙ্কেলকে দেখার। আঙ্কেলের কাছে তাদের পারাগুলোকে জানাবার এক তীব্র ইচ্ছা ওদের আচরণে।

Categories
গদ্য

হাসান রোবায়েতের গদ্য

ধরমপুর

অনন্ত শূন্যতার ভেতর যেতে যেতে একদিন হঠাৎ করেই শিশুরা দেখতে পায়— পৃথিবীর ঘাসের উপর ছোটো ছোটো ফুল। মাটিতে রোদের গন্ধ। নক্ষত্রের থেকে যে-আভা হাজার হাজার ছায়াপথ পার হয়ে লেগে আছে পেয়ারা-পাতায়, কুণ্ডুলি পাকিয়ে ধাতব খেলনার গায়ে আছড়ে পড়ছে রাতে, একটা কি দুইটা দাঁতে সে তারার আলোও কামড়ে ধরে শিশুরা। সে তখন ধীরে ধীরে টের পায় মায়ের অশ্রুত ঘ্রাণ।

Categories
গদ্য

সুপ্রিয় মিত্রের গদ্য

অমুকের গৃহদর্শন

বৃষ্টি যে হয়েছিল একটানা, ছেদরানো কাদা লেপটানো পাতাদের শবদেহ ছাড়া কে বুঝবে। শেডের তলায় যে গুল্মটি ছিল গার্হস্থ্য স্পর্ধার টবে, একদলা মাটির ওপর একখান পাতা মূর্ছা গিয়েছে কাল রাতে; শেষ হাওয়ার ট্রিগারে খামোখা। সে পাতা পাথরকুচি, শেকড়ের সুরক্ষা তাকে বাঁচাবে— আশঙ্কা নেই, জল ঘোষণা করেছে। স্প্রিংকল মগ থেকে সহায়তা ঝরে পড়বে, বেলা হওয়ার অপেক্ষা।

Categories
অনুবাদ গদ্য

পল নিহাগীর গদ্য।। অনুবাদ: প্রলয় মুখার্জী

প্রবঞ্চকর

আমি প্রবঞ্চক, এ কথাই বলছিলাম নিজেকে। গভীর রাতে প্রশ্ন করি, আমি কে? বলি ও! তুমি প্রবঞ্চক মাত্র। মাদাগাস্কার জঙ্গল এ কথাই তো শেখায় প্রতিদিন। একটি নীল লেমুর তন্দ্রাচ্ছন্ন কুয়াশার ভিতর আড়াআড়ি ছুটে যায় যখন, চেরি ফলের চেয়ে লাল টকটকে ক্যামিলিয়ন দু’টি বাওয়াবের নিদ্রাকাতর শাখায় ক্ষণকাল সঙ্গমরত, এই পৃথিবী সুন্দর লাগে।

Categories
গদ্য

জগন্নাথদেব মণ্ডলের গদ্য

নিঃসঙ্গ কথকের নিজস্ব পালা

আজকাল সকালের দিকে বাঁকানো খুরপি দিয়ে গাছের গোড়ার মাটি আলগা করে দিই, বেড়ালকে ভাত খাওয়াই, গাভিন হওয়ার পর ছাগলের শিংয়ে তেলসিঁদুর লাগাই।

দেওয়ানগঞ্জে প্রথম আষাঢ়ে জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা দেখতে যাই, ছোটোবয়সে শ্বশুরঘরে চলে যাওয়া দিদি কাঁঠালবীজ পুড়িয়ে চালভাজা মেখে দেয় খাঁটি সর্ষে তেলে দিয়ে, কাঁচলঙ্কা দেয়, ভুট্টা পোড়ায়, আদারস দেওয়া চা করে।