ফিরে দেখা: জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড ও রবীন্দ্রনাথ
চারিদিকে তীব্র কোরোনা আতঙ্কের মাঝে আমরা প্রায় বিস্মৃত, কয়েকদিন আগে অত্যন্ত নীরবভাবে পার হয়ে গেল, ১৩ই এপ্রিল ২০২০, জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের ১০১ বছর পূর্তি,
আনিসুজ্জামানের ‘স্বরূপের সন্ধানে’ বইটি যে-বয়সে পড়ি তার মর্মবস্তু পুরোপুরি অনুধাবনের বয়স সেটি ছিল না। কুমিল্লা জেলার সরকারি গ্রন্থাগারে এক দুপুরে সদ্য স্কুল-পেরুনো আমি বইটির সাদামাটা নামের মধ্যেই যেন কী এক আকর্ষণ খুঁজে পেয়ে পড়তে শুরু করি। গুরুভার বিষয়ে নদীজল-তরতর ভাষার নিপুণ ব্যবহারই যে আমাকে দিয়ে বইটি শেষ অবধি পড়িয়ে নিয়েছিল তা নিশ্চিত একেবারে।
পৃথিবীর পরিবেশ আন্দোলনের ইতিহাসে র্যাচেল কারসন (Rachel Carson, 1907-1964) ও তাঁর ‘সাইলেন্ট স্প্রিং’ (Silent Spring, 1962) বিশেষ গুরুত্বের অধিকারী। এই গ্রন্থ আধুনিক কৃষির রাসায়নিক নির্ভরতার বিপলগুলিকে চিহ্নিত করেই ক্ষান্ত থাকে না চিহ্নিত করে ক্ষান্ত থাকে না, বিকল্প পথ ও বিকল্প জীবনচর্চার দিশা উদ্ঘাটন করে।
বিশিষ্ট গদ্যশিল্পী কমলকুমার মজুমদার নিজের গদ্যভাষা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বলেছিলেন— দৈনন্দিন বহু ব্যবহারে জীর্ণ ভাষা তাঁর গদ্যের মাধ্যম নয়, ভাবপ্রকাশের প্রয়োজনে তাই স্বতন্ত্র ভাষা নির্মাণ করেছেন। বাংলা ভাষায় হাতে গোনা যে-কয়েকজনের গদ্য পাঠ করে আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়েছে যে তিনি নিজস্ব ভাষা প্রণেতা, তাঁর দ্যোতনা পূর্বাপররহিত, তাঁদের মধ্যে দেবেশ রায় অন্যতম।
নাটকের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে শিল্পী হিরণ মিত্র বলেছিলেন, ‘যা তাৎক্ষণিক, যা পুনরাবৃত্ত করা যায় না। যা কালেই ভেসে যায়।’ তা-ই হয়তো শ্রেষ্ঠ শিল্প। যা আঁকড়ে ধরে রাখতে চাই, তা-ই আসলে হারাই। এই প্রবন্ধের লেখক হিসেবে আমারই এ-কথাটা আরও একটু স্পষ্ট করা উচিত। শিল্পকে কীভাবে আমরা পাই কিংবা আমরা আবিষ্কার করি? এটা অনেকটা মোকাবিলা করার মতো।