লেখক নয় , লেখাই মূলধন

কবিতা

দেবাশিস বিশ্বাস

নামহীন


সন্ধেই কিচিরমিচির করে যখন তার পাখি থাকে না। উঠতি চোখ ফিরিয়ে নিচ্ছে বয়স। এই বয়স নিয়ে জ্ঞান দিচ্ছিল ভৈরব। তার দেখা ভয়ংকরতম উদাহরণ হল সে। যেমন লেকচারে জীবন পোড়ে৷ এক পোড়া ঘরে বেলুন ফাটাচ্ছে শিশুটির৷ কি না করেছে সে। বাপের সম্পত্তি হল কচ্ছপের পিঠ— তাকে ধরার বারুদে নত হয়ে গেছে। কৃত্রিম বয়স ওড়ানোর তালিম নিচ্ছে হাওয়ায়।

ভৈরব ঐ কিচিরমিচিরে দৃশ্যহীন।
মাথায় পাগড়ী থাকলেই কি হয়? কখন যে পাইথন পেঁচিয়েছে মাথায়… তার ঘণ্টা ভেঙেছে
শব্দ হয়েছে পৃথিবীর বুকে

এটা তুমি ঈগলের চিৎকার বলছ?


মাথা ঝোঁকার জন্য হলে মরে যেতাম

হাসির ভিতর আঁকা থাকত দাঁত।
এমন করেছো তুমি—
ঘরের ভিতরের হাসি ঘর থেকে বার করতে?

পুরোটা সকাল আলো পোড়াতে গিয়ে হাত পোড়ে
নক্ষত্রের পিণ্ডি মুছে হাসির ভিতরে আঁকো—
— নাহ্! জটিল হচ্ছে চিৎকার!
আমরা কেন কিড়িমিড় শব্দ করে ভয় দেখাচ্ছি তাকে!

তার হাসপাতালে ঘুরতে যেও
জটিল রোগগুলো মরে যাবে সে জানে—


কবিতা লিখলেই
মানুষের কানে চোখ বাড়ে… রোম খাঁড়া হয় প্রগাঢ় দুপুরে
ভেণ্ডি বাগানে এত সবুজ ধুয়ে গ্যাছে কেন?
কবিতা লিখলেই, প্রশ্ন আসে
উত্তর সাপের হেঁটে আসা নকল করে।
ঝুম করে কারোর হাসি পারতে বল্লেই—
তোমার হাত এত লম্বা হয় যেন মহাকাশ চুরি করে পকেটে পুরছ।

কবিতা লিখলেই,
হাসিকে থেঁতলে দিও
মানুষের কানে চোখ বাড়ে
ভেণ্ডি বাগানে


উৎসব শুরু হয়
অন্ধ তাঁবুর নির্জনে, ব্যাঙ এসে লাফ দ্যায় ঘাড়ে
তার ইউরিক চর্চা যখন ছিল না তখন অতিবর্ষায় পায়ে পাপড়ি হয়ে ফাটে…
পায়ের দোষকে মাথায় তুলো না।
পায়ের জন্যই এই হাঁটা পথ মাথাকে ন্যুব্জ করে।
তারপর ঘর আসে,

ঘরের ভিতরের হাসি ঘরেই থাকছে কেন—
ব’লে রু রু দুপুর কাঁতরাচ্ছে ভীষণ!

জবলেস

চাষের উর্বরতার জন্য কেঁচোকে নিয়ে এক নম্বরের প্রশ্ন
উত্তর দিলে সেন্ট্রাল আমায় গ্রুপডি-তে নিয়োগ করবে
আমি আমেরিকার পতাকায় ক-টি তারা মুখস্থ করেছিলাম
যাতে আন্তর্জাতিক উত্তরের জন্য দু-নম্বর বেশি পাওয়া যায়
এরকম অবস্থায় যারা পারে না
তারা সকাল থেকে সন্ধে কোনো নক্ষত্র দেখে না
ইমাজিন করুন, ওই মুহূর্তটুকু সে কেঁচোর প্রয়োজনীয়তা অথবা আমেরিকার তারা সম্পর্কে কতটা ব্যতিব্যস্ত

হাত ফাঁক করলে কল্পনা ঝরে
যুবতীরা কল্পনা খায়

এপিটাফ

বনভূমি ডেবে রাখে
হাতগাড়ি
তাকে বয়ে নিয়ে যাওয়া কি মুশকিল, বলো!

যদি আগুন ধরিয়ে দিই
যদি ক্রুড অয়েলের লোভে প্রিয়তম হাড়-ম্যান
নিজের অক্ষিকোটরে বিশুদ্ধ বারুদ লুকিয়ে রাখে

নিশ্চয়। ঘরের কোনাটায়
যদি আগুন ধরিয়ে দি
বনভূমি ডেবে রাখে হাতগাড়ি ও কিছু সস্তার অ্যালকোহল!

আপাতত আকাশ কাঁপিয়ে
পাখিগুলির তন্তু আঁশ পায়ুনালী
ওড়াতে ওড়াতে, আমি এক ধোঁয়াপ্রবণ শিলায় খোদাই করে রাখছি এসব—

শেষে পৃথিবীর ভাগাভাগি তেমন জটিল নয়

নিরক্ষরেখা, অক্ষাংশের হ্যালুসিনেসন ছাড়া!

অস্বস্তি

কবিতা লেখার দায়ে বানানো হয়েছে—
এরকম ভাবলে মন শ্রান্ত হয় বলছ?
যেদিন গুচ্ছ গুচ্ছ গুহ্যদ্বার থেকে কাগজ বার করে আনছি আমার এক কবি বন্ধু ইংরাজি কবিতা পড়ছেন ওয়াইনকে সাক্ষী রেখে। মহিষের তেল মেখে নেচে উঠছে দাঁড়ি। এই এক বিকাল।
একটা
হেবি ওয়েট পাথরকে মদ্য চোখে মেয়ে বানিয়ে দিচ্ছে
আর তাকে
খাওয়ার চেষ্টায়
পাহাড় কাঁপাচ্ছে, নিম্নে তার পদ্যলেখা
অস্বস্তি
পাখি বাবলা গাছে বসে হাগছে
সে হাগায় ঝগড়া হচ্ছে পশ্চিম পাড়ায়—
তাতে বীজ থাকে
ছিঁবড়া ছিঁবড়া সূর্যাস্তের খুন
দৃশ্যেরও গলার অন্দরে পাখিকঙ্কাল
মরা শালবনে
মুতে
চলে গ্যাছে বাবুল সর্দার—
দাঁতে তার শামুকের মাজন।

পাখিকে যে-কোনো গাছে হাগতে বল্লে
সে কেবল ঘুরেফিরে
এখানেই
চকচকে বিপ্লবের উপর হেগে দ্যায়
যা দিয়ে
পাখির গুহ্য চিরে
মানুষ হয়েছে
তুখোড়
গায়ক।
এখানে
কেন্দ্র ছিল বলে চিৎকার দেখাচ্ছে দূরে/প্রান্তে
ফাটা

আউট অব কভারেজ
এখন
ঝিরি ঝিরি প্রচারবিমুখ শাকাহারী কুনোব্যাং ডুব দিচ্ছে
প্রকৃতির মায়াময়
আলুথালু
উচ্চিংড়ের পাতায়
প্রশ্ন করছো এ্যাত?
চাঁদ ফেটে মহাকাশ
মহাকাশ ফেটে
ঘিলুর তেল— মহাকাল পোলতে জ্বালিয়ে ধ্যানে বসেছেন
‘হরাস’ যার ডান চোখ রোদের নক্ষত্র
কোথাও

 

Facebook Comments

পছন্দের বই