কবিতা
খুরশিদ আলম
গোলপোস্ট
অন্ধ আয়নার ভিতর মুখ দেখছি
দেখা অ-দেখা মুখের নিজস্ব ব্যাপার। আমাদের
শেষ দেউটি কবে নিভে গিয়েছিল হাতের পাঁচের মতো
তারপরেও গুনে চলেছি ক্রমপর্যায়।
কখনো ব্যর্থ প্রেমিক কখনো দাবা খেলার ছক।
এই যে এত এত ঘুঁটি সাজিয়ে নিরঙ্কুশ আশাবাদ ব্যক্ত করা
একের পর এক তাঁবু সাজিয়ে স্ট্রাইকার না ফরওয়ার্ড
অথচ পাশ ফিরে তাকালেই ফাঁকা গোলপোস্ট
জোড়া দাঁত
জোড়া দাঁত দেখলে আমার ভয় হয়
তীব্র কোনো জ্বরের অনুষঙ্গ
আমাকে ভাবতে শেখায় সাত-পাঁচের যোগফল
মানুষ ও ভাত যেভাবে দেশ, মানচিত্র ফুটিয়ে তোলে
তা আসলে একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবি
যার পর্দা সরালেই আবহমান কোনো নদী আর নদীর ভিতর কান্না
দেশ
ঝুলন্ত ব্রিজের মতো একটি দেশ চারখানা পায়া
টিনের ছাওনি
যার সমস্ত শরীরজুড়ে অসংখ্য দাগ
ঋণগ্রস্ত কাঁধ নিয়ে তবু সে দাঁড়াতে চায়
স্বপ্ন দ্যাখে
মোহভঙ্গ যুবকের মতো সেও চায় একটু ভাত দুটো রুটি
মাটি
মাটি আলগা হলে বোঝা যায়
শুরু অথবা শেষ
প্রতিটি সম্পর্কের শক্ত ভিতের নাম মাটি
আলগা হলে চিড় ধরে ভেঙে যায়
নির্মাণ বিনির্মাণের ভেতর যে-বেঁচে থাকে তার উৎস হল মাটি
সফল
ক্ষতচিহ্ন মাত্রই অবস্থান বদল করে
ভাবতে শেখায় দোষ গুণের পরিধি
আলো উৎসের সন্ধান
সফলতা মানে এক দৌড়ে আকাশ ছোঁয়া নয়
প্রতিটি সফলতার পূর্বে শিখতে হয়
এক-একটি সিঁড়ি বেয়ে ওঠার কৌশল

খুরশিদ আলম
জন্ম ১৯৯২ সালের ফেব্রুয়ারি। ডুয়ার্সের আলিপুরদুয়ার। বহু পত্র-পত্রিকায় লিখে চলেছেন ধারাবাহিকভাবে। উত্তর প্রদেশের কানপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর। কর্মহীন। ভ্রমণপীপাসু।