লেখক নয় , লেখাই মূলধন

অভিষেক মুখোপাধ্যায়ের কবিতা

কণিষ্ক

মেধাশষ্পে হাসিমুখ, হিসহিসে রসনাদ্যোতনা
জড়ালো ভূগ্রন্থিডগা, দিকচিহ্ন- জিপদীর্ঘশ্বাস;
ইঞ্জিনের স্যাফ্ট চিড়ে শূন্যকাপ নীল অন্তর্বাস
বেরিয়েছে ন্যস্ত পপিফুলে দুলে ঘনীভূত হল
যত না পাঠানো সিভি, ইন্দ্রসুক্তি, বস্তুত গোপনে

স্তনের উন্মুক্ত নুড়ি ধসে বন্ধ পাহাড়ি রাস্তায়
সাপিনীর খোলাভাঙা, গাড়ি থেকে নেমে এসে ঋতূ
পয়োধিপোষাক খুলে, গলে জল জোনাকিবর্ষায়;
রোদ হয়, রৌদ্র হয় না, ফাটকাবাজ মাইরি অযোনি
তুমি গুরু নেশামত্ত, নিজস্ব চর্বীর তেল তুমি
টিপে টিপে অন্ত্রে ঢালো, উষ্ণ বনেটের দধিমুখে
কখনও ক্ষারকগন্ধ প্রাণখণ্ড কাপে পড়ে থাকে;
খাদ থেকে কাটা অঙ্গ, নীল ভেলভেট ঘাসপোকা
মাতৃডাক উচ্চারণে, তেড়ে এসো, কুষাণ চেবাবে।

আদিরস

জ্যোৎস্নাঘাতকের গাড়ি হর্ণ দিয়ে চলে যায়,
সাদা দীর্ঘ শিরা জ্বলে হাসপাতাল ঘরে
কৃত্রিম ফোটন চুষে ক্ষত দগদগে হলে,
চর্বি খিমচে ধরে হাসে একা নড়ে।
তক্রভৈষজগুণপূর্ণ প্যারাসিটামলে বিন্যস্ত আলেয়াসন্ধ্যা, রমণমিথেনে
দেশলাই জ্বালিয়ে আমি কি ভুল করলাম, হায় কী ভুল করলাম, হায় কি ভুল করলাম…

সেলিমের মাউথ অর্গ্যান

আমার মাৎসর্যজ্ঞান, গ্রহে ডুবে আছে
গোমেদের অবস্থানে দ্বিজ হব, হাতের চেটোয়
ছাড়ানো মাছের কাঁটা, দৈত্যরাজ বলির মুগুরে
সন্তর্পণে তুলে দিয়ে হত্যা করি দূর্বাশষ্পদের, গিলে খাই—
নগরনর্দমা মুখ, যে অক্ষরে বাঁকা
নীলকান্ত খাদ্যপিণ্ড ঘুরে মরে স্বাভাবিক গড়িয়াহাটায়,
আমি রেস্তরাঁর পাকচক্রে ঢুকে রেখে যাব ঊর্ধ্ববায়ু…
মেষরাশি, মায়াধুন; সেলিমের মাউথ অর্গ্যান
আমার মাৎসর্যজ্ঞান, ভাষা, ডুবে আছে…

সম্মুখে তোমাকে আমি, ওয়েস্টকোট বাক্কসের মতো,
মহারাণি, মদ ঢেলে দেব।

অতিথি

যতটা সুরের দিকে ভয়হীন তাকাতে পারি না
ততদূর নামে মাথা

পুরুষাঙ্গ পতনের ডাকিনিরা পায়চারি করে

জিহ্বা থেকে আত্মায়,
আত্মা থেকে বাগানের কেয়াগাছ তারও পরে, বন্ধ দরজায়—

গান গায় সরীসৃপ, তুমি সেই শৃঙ্গারের তুরু।

যতটা মুখের মধ্যে ঘেন্নাপিত্তি প্রবাহ করেছ
এগিয়ে দাও গ্লাসভর্তি
ততদুর জল।

মাঘ

মাঘ এল সন্ধ্যায়, মাছ উলটে পড়ে থাকে, মাছ মরে যায়।
আত্মার পাথারে, হ্রদে, নিকোনো বাটির ঝোলে, নাসারন্ধ্র রেখে
চামড়ার আঁশটে গন্ধ পায় না মৃত্যুর পরে,
এখন শুধু রতিগন্ধটুকু—
বাকি আছে, তেরোদিন; পিকিং রেডিও শোনা আরামকেদারা…

ইনজেকশনঅ্যাম্পুলডাক্তার বসুকে ফোনক্রন্দনে ফাটিয়ে ফেলা পাড়া।

Facebook Comments

পছন্দের বই