লেখক নয় , লেখাই মূলধন

সঞ্চালিকা আচার্যের কবিতা

চিকন বিলাপ কিছু


গর্ভ নিজেকে গিলে অতল হয়েছে।
সবকিছু মনে পড়ে গেলে বমিভাব
সবটুকু ভুলতে গেলে বমি পায়।
গোলাপি সুতোয় মৃত্যু বেঁধে ফেলে যায় জলের কিনার
ভাবে পরবর্তী ঠাপে দরকার হবে।
পাড় ঘেঁষে বালিকারা জড়োসড়ো
তাদের ছায়ায় আমারই মৃতবৎ মুখের আভাস।
মিহি ছাই তো মনে রাখেনি কিছুই সলিল।
আস্মানি রং নাকি নেমে আসে আমাদের মাঝে
উবু হয়ে বসে।

হয়ত-বা আসে, বসে
আমি তাকে কখনো দেখিনি।


সব ভুল হবে জেনেও মাস্তুল তুঙ্গে উঠেছে।
আবেগ নিপুণ ফুলকারী কালের আঁচলে।
হাতের জাহাজে পল্লব ভেসে গেলে
দিন আজ নম্র হয়ে এল।
এই যুদ্ধক্ষেত্রে আতাফল বেচবে বলে
বড়ো বেশি কাতর হয়ে আছ

দুর্বোধ্য রোদ, তোমার তীক্ষ্ণ প্রান্তে খুব বেমানান ঝুলে আছি।


সমুদ্রকে বুঝবে বলে ঢেউয়ের বর্ণমালা মুখস্থ করেছ
মিত্রাক্ষর প্রস্তাবে রুচি সে আমার নয়
তোমার খিদে চেনে শুধু একরৈখিক স্তুতিমণ্ড
যজ্ঞ সার্থক হবে কবে!

অগ্নির পাশে বসে গ্রহণ দেখব যাকে নিয়ে
এমন ঋত্বিক বলো কোথায় পাবো…


জানালায় প্রতিষ্ঠ ভোর খুব সংযত, গম্ভীর
কথা বলে, হাওয়াদল নিয়ে আসে নতুন খবর
দুধের প্যাকেট, গলিপথ বেয়ে আসে আপন বেড়াল।

রৌদ্রময় কর্মময় দিনের এক্কাদোক্কা, দেখতে দেখতে
রাত্রি শাশ্বত দাঁড়িয়ে থাকে জমাট সমর্পণ নিয়ে।

তবু একদিন অপেক্ষা শেষ হয়।
বহু সমারোহ মেখে ফিরে এসে দ্যাখো
দেহলিতে সবটুকু ঢেউ রেখে চলে গ্যাছে কেউ…

মৃত ঠোঁটেদের থেকে বহু সত্য জেনেছি।


এখন ছায়ার মধ্যে পাঁজর ঝুঁকে আছে প্রার্থনায়।
কী দারুণ জেল্লা দিক্চক্রবালে।

তবু এই পৃথিবীতে অনর্থ ঘটে ভাস্কর
সময় স্বপ্নদোষে সমস্ত পথ গিলে নেয়
ক্ষতদাগে কোনো পাপড়ি নেই
কাদামাখা ছোপছোপ বুকে নেই কোনো আলো।

সেইসব ধ্বংস ছুঁয়ে যে ধোঁয়া, নীরবতা
সেও শুচিতা চেয়েছে জেনো সচন্দন স্নানে।

লেবু-পান্তায় এসে বোসো, হে নাথ
সহজিয়া আশ্লেষে পাতা ফুল পাখি হয়ে যাই।

Facebook Comments

পছন্দের বই