লেখক নয় , লেখাই মূলধন

কবিতা

লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল

যখন সে জোনাকির দীর্ঘশ্বাস


এত যে ধ্রুবচোখ— নাম কী শান্তি না অপার

চিতানদীর মোহনায় দাহ জ্বলে অশেষ
বার বার কায়া মিশে যায় অর্বাচীন

পিছিয়ে সেই শূন্যতা শুকনো মাঠের কোলে সাদা বক
সম্পর্কে সমস্ত ওমধ্বনি আচ্ছন্ন আলোকরেখায়
অথবা আরও চায় মধ্যরাত—
কাছে বসে প্রতিপল চাঁদের ওজন
অন্তরাল আর নীরবতা ছুঁয়ে যায় কেবল

কাছে থাকি স্মৃতিতন্তুকাল


নদীর রাত ফিরে আসলেই জেগে ওঠে মহাকাশ
পরজন্মের কাছে হেঁটে যায় নীলিম আর পরম

এ-দুয়ের ভিতর শূন্য এক চৌম্বক আবেশ
মেঘমালা নামে এবং নির্বাসিত পাখি উড়ে যায়

আলোর কোলাহল শেষে কয়েকটা ধাপ সিঁড়ি
যতই উঠছি নেমে যাচ্ছি আরও গভীরে
টনটন করা পেশিতে শুয়ে থাকার আর্তি

অসুস্থের ছায়া তবু জেগে থাকে সুস্থতার উপর


বকুলপারের বাঁক দেখলেই সুগন্ধ হয়ে যাই
সমস্ত রং জড়িয়ে ধরে ঝিরঝির শিশির মায়া
বিষুবরেখায় দৌড়ে যায় রৈখিক সময়

আরও কিছু পথ, বাগেশ্রী রাগ বাজে
আঁকা বাঁকা ডালপালার ভিতরে উন্মুক্ত অশ্রু
ভারশূন্য দিঘির পাড়ে দাহিত নেপচুন

পরম কিছু যাতায়াত সহজপাঠ থেকে সূর্যাস্ত
সে-পথের একটু দূরেই সুস্মিত শ্মশান
তার নির্জন আলোয় অকপট খেয়াঘাট

আর শীতার্ত প্রদীপ


তার হয়ে পড়ি যখন সে জোনাকির দীর্ঘশ্বাস
বার বার সাধকের স্তোত্র ও শরীর
বিষুবরেখায় শূন্যজ সময় অকপট ছায়াটুকু

কোন এক শিয়রে সাদা দাগ ইতিউতি বাষ্প
সারাবেলাটি উড়ে গেল দিপদিপ নীল বর্ণ
প্রার্থনা থেকে প্রতিফলিত হল অনতিদূর

অবশ্য উত্তর নেই নেই কিছু প্রশ্নও—
আবছা স্নায়ুর আঁচড় কেটেছি সে-সব দাগে
মন্দ নয় ভেবে নদী পার করিয়ে দিই কিছু হসন্ত
ক্লান্ত আকাশ ছোঁয়ার ইচ্ছে

জন্ম চাই চেতনা, ভীষণ সাঁতার


পাতা ঝরার আঘাত নিয়ে ভেসে আসে অনঙ্গ সংগীত
প্রতিবর্ত হৃৎস্পন্দনে কত সম্পর্ক
কোথায় হারায় অপেক্ষা—
পাখিরাও জানে কোমল বাতাস
তির্যক রোদ্দুরে এলোমেলো ছায়াপথ

চলে যান তিনিও
ভূমির সমান্তরাল আর নিসর্গ নিশ্বাস
যাত্রাপথে বেজে ওঠে নীল সেমিকোলন

চিৎশোয়া মহাকাশ নিয়ে
টেরাকোটা পেন্সিলে আঁকিনি কিছুই
খয়েরি ইচ্ছায় বসে থাকি প্রার্থনা আশ্রয়

 

Facebook Comments

পছন্দের বই