উৎসব : দেহ প্রেম কাম

জন্মের পর থেকেই অপার বিস্ময় আর রহস্যের মুখোমুখি হয় মানুষ। বাইরের রহস্য যেমন তাকে হতবাক করে তেমনি ভেতরের রহস্যও। এর মধ্যে সবচেয়ে বড়ো ও গভীর রহস্য হল দেহ ও তার অনুভব। কেন-না কাম ও প্রেমের তরঙ্গের মধ্য দিয়ে এই দেহ প্রায় সারাটি জীবন ধরে এক অজানা রহস্যকে উপহার দিয়ে চলে। প্রেম ও কাম মানুষকে তাড়িয়ে বেড়ায় গোটা জীবন, কখনো প্রত্যক্ষে কখনো-বা পরোক্ষে। প্রতিটি মানুষের অন্তর্জীবনের ইতিহাস মূলত কাম ও প্রেমেরই ইতিহাস। নিজের সাথে কি-বা অন্যের সাথে, সমাজের ও সভ্যতার সাথে কাম ও প্রেম হল ব্যক্তির সবচেয়ে ভয়াবহ মুখোমুখিতা— এ দুয়ের একাকার হয়ে যাওয়ার অবস্থাটিও তাই কঠিন এবং দুর্বোধ্য। এ-কারণেই শিল্প-সাহিত্যে এর অভিঘাত ও প্রাপ্তি অভিনব এবং চিরন্তন।
কাম ছাড়া প্রেম অসম্ভব কিন্তু প্রেম শুধু কাম নয়, কামের এক উজ্জ্বল উত্তরণ অবস্থা। আবার এ দুয়ের দ্বন্দ্বটিও মানবজীবনের এক কঠিন অমীমাংসিত বিষয়। কাম ও প্রেম জীবনকে যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়ে যায়, জয়ী বা পরাজিত হওয়ার জন্য। সবকিছু নিয়ে দেহ, প্রেম ও কামের এক উৎসব চলে জীবনে। এই উৎসবের দার্শনিকতা নিজস্ব বিশ্লেষণ ও চিন্তনে নতুনভাবে উপস্থাপন করেছেন কুমার চক্রবর্তী।

ঊনচারণ

গোর্খাল্যান্ড মুভমেন্টের সময় পুড়ে যাওয়া ল্যান্ডরোভারে করে দুই ভূত ঘুরে বেড়ায় প্রতি রাতে। কোনো দিন দার্জিলিঙের কাচারির উঠানে, কোনো দিন দিনহাটার কোনো আলুখেতে আড্ডা মারে তারা। আড্ডার জালে আটকে পড়ে কখনো ইস্ট পাকিস্তানের বাঙালি রিফিউজি দুলালের বাপ, কখনো দার্জিলিঙের নেপালি দর্জি ফুরলামুর বর, কিংবা স্কুলছুট রাজবংশী কিশোর মজুর সহদেব। দুলালের পাগল বাপ ফেলে আসা বগুরার হাট খুঁজতে গিয়ে পৌঁছে যায় দিনহাটার বাজারে। ফুরলামুর মাতাল বর তার সিপাহি ঠাকুরদার বীরত্বের গল্প করতে করতে সিআরপিএফ-এর জুতোর আওয়াজে ভয় পেয়ে প্যান্ট ভিজিয়ে ফেলে। সহদেব দুলালদের বাড়িতে সস্তায় মজুরি করার ফাঁকে গ্রেটার কোচবিহার পার্টির শিব চন্ডী পুজা কমিটির ক্যাশিয়ার হয়ে যায়। গল্পের ডালপালা ছড়ালে, এদের গল্পগুলো আর আলাদা থাকে না। বহু, বহু বছরের সমাজ, রাজনৈতিক ইতিহাসের খাতে নিজের মতো করে বইতে থাকে। দার্জিলিংয়ের বহুল প্রচলিত সামরিক আর ঔপনিবেশিক ইতিহাসের বাঁধাধরা বীরত্ব আর আনুগত্যের তলায় চাপা পড়া ভয়ের ইতিহাস জানা যায়। আবার ‘রাজার শহর’ কোচবিহারে বহু লালিত ক্ষত্রিয় গর্বের আড়ালে চাপা পড়া, হাজার বছরের হেরে যাওয়া পালিয়ে আসা মানুষদের স্বস্তিতে বসবাসের সুযোগ পাওয়ার ইতিহাস উঠে আসে। ভাটিয়া আর রাজবংশীদের পারস্পরিক সংঘাত, ভালোবাসা, হিংসা, নির্ভরতা, ঘেন্না উঠে আসে। আর পাশাপাশি এই দুই বয়ে চলার গল্পে প্রচ্ছন্ন হয়ে থাকে লেপচা, লিম্বু উপকথা, কোচবিহারের নিজস্ব মহাকাব্য গোসানীমঙ্গল। ভিন্ন সময়ের, ভিন্ন জায়গার, ভিন্নভাবে পিষে যাওয়া মানুষেরা পোড়া ল্যান্ডরোভারের সামনে এক হয়ে ওঠে তাদের অপরাধে— আফশোসে।

ঋতুপর্ণ ঘোষ

এই পথ পরিকল্পিত

কাব্যাশ্রিত এই লেখাগুলো লেখক লিখেছিলেন এক কঠিন সময়ে। একটা ঘোরের মধ্যে। রাষ্ট্র তখন অস্থির এন.আর.সি, সি.এ.এ নিয়ে। তিনি ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের বেডে বসে একের পর এক এই লেখাগুলো লিখছিলেন। নিজের প্রশান্তির জন্যই। লেখাগুলো সে-সময় ভীষণ সাড়া পড়ে। তাড়াহুড়ো না করে লেখক আত্মনিবেশ করেছেন এই পাণ্ডুলিপিতে। অনেকেই একে কবিতা বললেও লেখক তা বলতে নারাজ। তিনি বলেছেন টেক্সট।

এক ফর্মা সিরিজ ২০২১

৬ জন তরুণ কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ। ই-বুক আকারে আগে প্রকাশ হয়েছিল, এবার মুদ্রণে। এই কাব্যসিরিজ থেকে বর্তমান বাংলা কবিতার একটা ধারণা সুস্পষ্ট হবে আশা করা যায়।

একশৃঙ্গ গণ্ডারের গদ্যগুচ্ছ

প্রলয় মুখার্জীর একটি গদ্যগ্রন্থ। এই গ্রন্থটি পড়লে বোঝা যায়, কবিতায় আত্মা কীভাবে গদ্যের ভিতর প্রাণ পেয়েছে।

এখানে অমল নামে কেউ থাকে না

রিপন হালদারের এই গল্পগ্রন্থটি একদম অন্যধারার। মূলধারা থেকে বেরিয়ে লেখক মেধা ও মস্তিষ্ক দিয়ে লিখেছেন এই গল্পগুলো।

ওঁ মধু, ওঁ শাশ্বত পরাগ

ওপারের কবি সরদার ফারুকের নতুন কাব্যগ্রন্থ।

ক বর্গ

শর্মিষ্ঠা বিশ্বাসের নতুন কাব্যগ্রন্থ।

কথানদী

সমর রায়চৌধুরী মূলত কবি। কবিতার বাইরে ওঁর নানা গদ্য, গল্প, প্রবন্ধ ও অনুবাদ নিয়ে এই গ্রন্থ।

কথাশংকর

চিরায়ত সাহিত্য ও কবিতার প্রেমে মগ্ন থাকতেই ভালোবাসেন। রাজনীতি ও সমাজ সচেতনতা তাঁর রচনায় সাবলীলভাবেই আলো ফেলে। সুদীর্ঘ প্রবাসজীবনে থেকেও তিনি গভীর মমতায় বুকে ধারণ করে চলেন স্বদেশ ও স্বদেশের সংস্কৃতি। তাঁর এই বইতে অবলীলায় উঠে এসেছে দেশপ্রেম, মানবিকতা, মানবপ্রেম, প্রকৃতি, সমাজের নানা টানাপোড়েন ও অপার স্মৃতিকাতরতা।

কবিতা সংগ্রহ

সত্তরের বিশিষ্ট কবি অমিতাভ মৈত্রের ‘পতনকথা’, ‘টোটেমভোজ’, ‘ষাঁড় ও সূর্যাস্ত’ ও ‘পিয়ানোর সামনে বিকেল’ এই চারটি কাব্যগ্রন্থ নিয়ে এই সংকলন। এই সংকলনে ওই চারটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও একাধিক অগ্রন্থিত তৎকালীন সময়ের লেখা রয়েছে।

 

 

কবিতার অন্ধকার যাত্রা

কবিতা বিষয়ক প্রবন্ধের বই

কবিতার মনন ও মানচিত্র

কবিত বিষয়ক নানা মনোজ্ঞ আলোচনা এই বইয়ে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

কবিপত্নী লাবণ্য দাশ: উপেক্ষার অমীমাংসা

লাবণ্য দাশ— যাঁর বড়ো পরিচয় জীবনানন্দ দাশের স্ত্রী। অসামান্য রূপসী লাবণ্যর সঙ্গে জীবনানন্দের বিবাহ হয় তাঁর ১৭-১৮ বছর বয়সে। পড়াশোনা অসম্পূর্ণ রেখেই পিতৃমাতৃহীন লাবণ্যকে বিয়েতে মত দিতে হয়। তারপর কঠিন অধ্যবসায়ে তিনি আইএ, বিএ এবং বিটি উত্তীর্ণ হন এবং শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। কর্মহীন জীবনানন্দের অস্বচ্ছল সংসারকে কঠোর পরিশ্রমে রক্ষা করে চলেন জীবনের শেষদিন পর্যন্ত। স্বভাবে জীবনানন্দের বিপরীত সদাচঞ্চল কর্মতৎপর এবং স্পষ্টবাক্ লাবণ্যের সঙ্গে জীবনানন্দের সম্পর্কে এসেছে কখনো কখনো ঝড়ঝঞ্ঝা। কল্পনা ও বাস্তব মিলিয়ে তাঁদের দাম্পত্য নিয়ে তৈরি হয়েছে সত্যমিথ্যা নানা গল্প। জীবনানন্দের মৃত্যুর পর তাঁর রচনাবলি প্রকাশের ব্যাপারে কী ভূমিকা ছিল লাবণ্য দাশের? ‘মাল্যবান’ উপন্যাসের যে রূঢ় দাম্পত্যের ছবি সেটিই কেন চিহ্নিত হয়ে যায় লাবণ্য-জীবনান্দের জীবনচিত্রের অংশ হিসেবে? এইসব নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন কবি ও গবেষক ড. মুহম্মদ মতিউল্লাহ্ তাঁর আলোচ্য বইতে। জীবনানন্দ জিজ্ঞাসায় এটি তাঁর দ্বিতীয় বই।

কর্তৃকারকের দায়