লেখক নয় , লেখাই মূলধন

কবিতা

সমিধ গঙ্গোপাধ্যায়

মালীকাহন

খেদ মার্জনা করি অহরহ
তবে আমি রূপকার নই

সংবর্তের চেনা রূপকের মতো
ঢিল-পাটকেল খেলা—
দিনাতিপাতেরও আগে পুরোনো কবিতা থেকে
পুনরায় জ্বালাটি না মেনে
দেরাজসুতুলি ধরে চলে আসে আর এক প্রবীণে

যেহেতু সূর্যস্নান আজও মরালীখাতার মদ ছাড়া
অভাগা বাঁশরি—
টিলার আতশ চিন্ময়ী বিষে সদগুরু সাঁতারের অনুপান তুলে রাখে মহৎ কুজনে

নিমফুলে ঘন হয় আহামরি রসুইস্বভাব…

খাজনা

তেচোখা ফাগুন এই নেমেছে
আরামপ্রদ ঝিলে

সভ্যতা খননের শব্দে চমক বেঁচে থাক

বিধুর ছিপের ডগা জলফড়িঙের মতো সুরে
মরমিয়া দখিনার পলাশনিশুতি পায়ে
চামড় বোলায়

নির্মোহ শীর্ষক গিরিখাতে বিভাজিত প্রতিধ্বনির
কাছে ঢালু কবরীর যজমানি,
প্রণালীর আচার্যপথে হাঁসফাঁস
এক সুতনু পাথুরে স্নেহে হোঁচটসুষমা আর
টুকরো রেহাই বেড়ে দিয়ে

ফাগুন নিজের মতো, নিথর, তেচোখা,
ভেসে যায়…

গার্হস্থ্য

ফলন্ত মোহনার হেম

নিড়ানির সাহায্য ঝাঁপ খায় সরাইখানায়

আভোগ পালনে চড়া দাওয়াই বেঁধেছে সঞ্চারী

মৃণালবক্ষে এই দজ্জাল তলদেশ, মহাগুঞ্জন—

উপান্তে লাঙলের শেখরপ্রতাপ ঘিরে
নোঙরের পিঠ চাপড়ানি আর স্বত্ব আদায়।

ঠাট

নদীর জন্ম নিয়ে নৌকোর
হালে খই ফোটে

নদীর আঘাত নিয়ে ইহমানবিক,
নৌকোটি

নদীর বাঁধন নিয়ে নৌকোপাঁজর
ভাসে উত্থানে,
পতনবিনীত

নদীর মৃত্যু নিয়ে নৌকোর অপরাধ
একলাটি বসে থাকে
এপার ওপার

রাত-প্রজাপতি
আর
দিনের জোনাকি
যদি ছইয়ের সাহসে ভর করে
একবার,
ডানার ওপরে রাখে
পায়ের তলায় রাখে হাত

মেঘের পাহাড়ি ঝগড়ার
বন্ধুতাটুকু জন্মের শৈশব থেকে
তুলে রাখা সঞ্চয়ে,
ছেঁচে ফেলে দেবে ছানি
হাসির শুকনো আফশোস

খোলভাঙা শামুকের বেয়ে আসা পথে,
নটেগাছ একবুক নিঃশ্বাস ভরে দেবে
মুড়োবার আগে,
কোলপোঁছা পাতাটির বাচাল শিরায়…

অবতরণিকা

চরিতের অমৃতঝিমুনি—

এ-মেহন বহুকাল চাঁদের ফলার আঁচিয়েছে

বৃত্তের মাত্রাটি নিলীন বর্ণে সংযত

চোটফসলের দায়ে কৈফিয়তের কানাকড়ি
চেখে নেওয়া মূঢ় শিরার সেঁজুতি

অর্ধভুক্ত বাতায়নের দোহাই
দ্যাখো দেনার ধারালো গোঙানির ভোঁতা অভিযানে
লিখেছে অশোক

আর হিমের অভাব থেকে সুচতুর ঘুম সরে গেছে…

Facebook Comments

পছন্দের বই