কবিতা

বিশ্বদেব মুখোপাধ্যায়
পাঠক
চামড়া-কুঁচকানো মুখে অজস্র জটিল বলিরেখা।
কাঠের চেয়ারে একা বসে থাকে…
গলিটির শেষে বাড়িটির
শেষ ঘর। জানলা খোলা। জানলায় দেখি বুড়োটির ফেসবুক।
সে ডুবে থাকে সারাদিন। বই পড়ে―
দেখি সেই চামড়া বাঁধানো
কীট দষ্ট একই বই, যেটি তাঁর প্রিয়,
মনে হয়
তাঁর শেষ বুক।
সংশয়
সারারাত
কবিতা থই থই করছে অন্ধকারে।
রোজ
রাত বাড়ে সারা রাত। জলের মতোন
কবিতাও বেড়ে ওঠে। আকাশ অবধি
ছোটছোট মেঘপুঞ্জ, তারা
আসলে কবিতাই?… ভাবি
নাকি অন্য কিছু?
কিন্তু কি? আর বলতে ওই
অন্ধকার
আর জাননার অন্যপারে আমি, বিশ্ব।
নাকি অন্য কেউ?
সুখ
ভোরের ইঁদারা। তার পাশে
এক
ঢ্যাঙা তাল গাছ।
বেলা বাড়ে। উঠোন পেরিয়ে
তার ঝাঁকড়া মাথার ছায়া
উঠে আসে মাটির দাওয়ায়
পিঁড়ি পাতা।
সুখে বিশ্ব খায়―
বগি থালে ডাল, ভাত, মাছ…
আবহমান
আমার সংসার
সেতো ঈশ্বরই চালায়।
রোজ ভোরে
পাখি গায় ডালিমের ডালে।
মনে মনে
সাড়া দিই। কখনো উঠোনে
দ্বিপ্রহর স্থির। শুধু এক
পুরাতন যাঁতা ঘোরে…
ঈশ্বরী চালায়।
তার কোলে
শিশু বিশ্ব। বুকে দুধ খায়।
দরজা
দুপুর পড়ন্ত হয় বুকের ভিতরে।
সোনালি রোদের ছায়া দীর্ঘ… ক্রমে উঠোন ছাড়িয়ে
চলে যাবে যেখানে যাবার।
সবই ঠিক।
বস্তুত বাড়িটি, ক্রমে পড়ে আসা উঠোনের ছায়া,
এখন বিকেল নামছে, বোঝা যায়,
আরও যতদূর
স্মৃতিপটে পরিস্ফুট ছবিগুলি আসলে কি ঠিক
শুধু মাত্র ভিতরেই?
নাকি বাইরে?… যত ভাবি ―
দরজা কই?
কান পেতে থাকি। কোনো দিন যদি শব্দ হয়,
কেউ
চুপি চুপি তালা খোলে―
ক্লিক্…
Facebook Comments