লেখক নয় , লেখাই মূলধন

গদ্য

প্রশান্ত গুহমজুমদার

কিছু কথা, কিছু অন্বেষণ

কিছু কথা ছিল। কিছু কাজও। কাজটার কথাই আগে বলি। তোর সদ্য প্রকাশিত প্রবন্ধের বইটা নিতে হত। আর আমার নতুন কবিতার বই শিখা আর তোকে। আর কিছু নতুন লেখা শোনার। শোনানোর। আর তোর করা স্কেচগুলো দেখার। শিখাকে একবার বলতে হত, আমাদের ঘরে আরও একবার আসার। আর নাতনির ছবি-সব দেখার। ও কি আমাদের সেই ছোট্ট জবার মতোই মিষ্টি হয়েছে? আর আমাদের নিজস্ব কথা? সে-ও তো বিস্তর। হবে কখনও? তুই তো আমাকে ব্লক করে দিলি! তা-ও বলছিস হবে! তাহলে হোক।

প্রদীপ। অমিতাভ মৈত্র। আমি প্রশান্ত। ৬৫ বছর আগে যোগাযোগ। দু-জনেরই ৬। আজ আমার ৭১+। তুই আচমকা চলে না গেলে তোরও তাই হত। হল না। সময় হতে দিল না। বেঁচে থাকতে থাকতে, কথা বলতে বলতে, মুখোশ পড়তে পড়তে, অভিনয় করতে করতে অভ্যাস হয়ে যায়। হোমো স্যাপিয়েন্স-এর এমন হয়। আমারও হয়, হয়েছিল, হয়েছে। এই পৃথিবীতে থাকলে এমনটা আমার হতেই থাকবে। কিন্তু তোর সঙ্গেও কি তেমন আমার কখনও ঘটেছে? তবে কি আমরা, দু-জন যখন একলা, ঠিকঠাক মনিষ্যিই ছিলাম না! কিন্তু এখন কীভাবে এই ৬৫ বছর, আবাল্য বন্ধু হিসেবে, তোকে ফিরে দেখব! লেন্সের কায়দাটাই তো জানা নেই! তোর বদলে আমি গেলে, তোকেও হয়তো এমন লিখতে হত। কিন্তু এখন তোর কথা বলতে বসে আমার কথাই যদি বলে বসি! সে কি উচিত হবে? কোনো কালক্রমও হয়তো থাকবে না। যেমন, তুই আমার বাড়িতে আসার কিংবা তোর বাড়িতে আমার যাওয়ার। গেলেই মেসোমশাই বাইরের লাল ধাপিটায় বসে বসেই বলতেন, যাও, প্রদীপ উপরে আছে। কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে, তুই তো ছিলি আমারই একটা অংশ। অথবা আমি তোর। তাহলে! খুবই সঙ্কটের বিষয়। তাই বাধ্য হয়েই সিদ্ধান্ত নিলাম, তোর মেধার কথা, কলমের কথা, তুলির কথা, একজন মনস্ক অতুল মেধাসম্পন্ন পাঠকের কথা আমি বলবই না। এসব বিষয়ে বহু বিদগ্ধ প্রাবন্ধিক, যোগ্য কবি, প্রতিষ্ঠিত শিল্পী রয়েছেন, তাঁরা বলবেন। সেটাই যথোচিত হবে, কিছু উজ্জ্বল কাজ হবে। এইসব বাদ দিয়ে কতটা কী বলতে পারব, জানি না। তবু, প্রদীপ আয়, দু-জনে মিলে যতটা পারি, পুরোনো দিনগুলো ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখি।

তোর মনে আছে স্কুল থেকে ফিরে আমাদের বাড়িতে লোহার জালের ওপারে দাঁড়িয়ে সেই হরিণ, চিনে মুরগী, রাজহাঁস দেখার কথা? মনে আছে, না! থাকবেই তো। স্মৃতিশক্তি তোর বরাবরই প্রখর।

আচ্ছা তোর মনে আছে দুপুরে তোদের ছাদে বসে তোর লেখা ইংরেজি কবিতা শোনানোর কথা আর ইতিউতি মেয়ে দেখা? দুটোই ছিল আমাদের কাছে প্রবল বিস্ময়কর। কৈশোর তো সবে পেরিয়েছি! সেই তখন একটা ইংরেজি প্যারাগ্রাফ ঠিকঠাক লিখতে পারি না, আর তুই কিনা সেই ভাষায় কবিতা লিখছিস! সেসব তো আর রাখিসনি, তাই না? কেন! পিছনের বিরাট পুকুরটার মতোই সে-লেখা সব কোথায় হারিয়ে গেল! যেমন হারিয়ে গিয়েছে ‘শীতের প্রতি’ কবিতাটা। আমার এই লেখাটার কথা তুই বারবার বলতিস। কেন, কে জানে!

মহালয়ার ভোরবেলা ভাগীরথীর পাড়ে সূর্য উঠছে। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র থেমে গেছেন। মৃদু কুয়াশা ভেঙে ক্রমে ফর্সা হচ্ছে। আর আমরা দু-জন জল শুনছি, দেখছি। পিছনে কৃষ্ণনাথ কলেজ। আমাদের কলেজ। আমাদের সামান্য সামান্য দাড়ি-গোঁফ। কথা বলছি না কেউ। আমি বলছি না সেই চমৎকার নারীর কথা, তুইও সেই যুবতীর নয়। ঘোলা স্রোত দেখছিলাম কেবল। আরও কিছু কি?

আজ উল্টোপাল্টা কথা বলতে খুব ইচ্ছা করছে। ঐ রানিবাগানের মাঠ। ক্রিকেট। তোর ঐ লিকলিকে শরীর নিয়ে অনেকটা পাল্লা নিয়ে বাঁ-হাতে দুরন্ত ইন্সুইঙ্গার! কী করে করতিস রে! তবু করিমপুরে ঐ বল একবার মাঠের বাইরে পাঠিয়েছিলাম। পাওয়া যায়নি আর। ক্যাচ ধরতে গিয়ে দুই ফিল্ডারে ধাক্কা লেগে মাঠের বাইরে। আর আমাদের কী উদ্বেগ। ছেলেদুটো ভালো আছে তো!

ধোপঘাটির মাঠে সন্ধ্যা হচ্ছে। আমরা কয়েকজন। তুমুল মতান্তর। বাম-ডান-অতিবাম রাজনৈতিক কাজকম্ম নিয়ে। তুই কিন্তু চুপ। অনেক পরে একদিন বলেছিলি, এইসব পার্টির রাজনৈতিক কাজকম্ম তুই ঠিক বিশ্বাস করতে পারিস না। আমি হেসেছিলাম। খুব নির্বিবাদী মানুষ ছিলি তো। ঐসব খেয়োখেয়ি তোর অসহ্য মনে হত। একদিন রাত ফুরিয়ে আসছে। দেয়াললিখন শেষে ঘরে ফিরছি। তোর সঙ্গে দেখা। এত ভোরে তুই উঠতিস না। সেদিন তবু দেখা হল। বলেছিলি, বাড়ি যা। মাসিমা ভাবছেন হয়তো। আর কোনোদিন এমন যেন না দেখি। আমি ফিরে এসেছিলাম। আর কোনোদিন রাত জাগা হয়নি আমার। তোর মুখটা মনে পড়ে যেত।

সেদিন হঠাৎ সুশীলদার একটা চিঠি পেলাম। একজনের হাত দিয়ে। তারপর উনি কলকাতা না কোথায় যেন চলে গেছেন। বেশ কয়েক পাতার। ছোটো ছোটো হাতের লেখায় অনেক কথা। আমাকে খুব গালিয়েছেন। কয়েকটি কবিতা। কোনো পত্রিকায় প্রকাশ করতে হবে। পড়তে খুব অসুবিধে হচ্ছিল। হঠাৎ দেখলাম, সেই ক্ষুদে ক্ষুদে লেখা-সব ঝকঝকে প্রিন্ট করা একটা চিঠি হয়ে গ্যাছে। বিদেশী কিছু কবিদের কথা আছে। পড়তে পড়তেই আমরা হাঁটছিলাম। সুশীলদার বাড়ি। উনি যাননি কোথাও। ওখানেই রাত্রে আমাদের দাওয়াত। তুই বলছিলি, নিজের লেখা নিয়ে সুশীলদা নিজেই খুব কনফিউজড্‌। আমি মাথা নেড়েছিলাম। যেমন মাথার উপরে একটা ছাদ নিয়ে ওঁর। আজীবন।

ছাড়িয়ে চলে এলাম। কবিতা আর ছবি নিয়ে তুই বলছিলি। সুনীল দাশ বলছিলি। কিন্তু এত গাড়ির শব্দ, কথা প্রায় শোনাই যাচ্ছিল না। প্রস্তাব দিলি, চল উড়ে যাই। আমরা উড়তে থাকলাম। কবরখানা পেরিয়ে, পঞ্চাননতলা পেরিয়ে উড়ে যাচ্ছিলাম। তুই তখন দালি আর বিনয় মজুমদারের কাজ নিয়ে বলছিলি। আমি ধর্মনারায়ণ দাশগুপ্ত আর রমেন্দ্র কুমার আচার্য চৌধুরী। চাঁদ আকাশে ফেটে পড়ছিল। তোর উত্তেজিত চোখ আর তীক্ষ্ণ নাক স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলাম। ম্যাডাম এম্‌-কে নিয়ে লেখা মুখে মুখে বলে যাচ্ছিলি তুই। তখনও সেসব প্রকাশিত নয়। কিন্তু অসাধারণ স্মৃতিশক্তি তোর। পাংচুয়েশন অবধি ঠিকঠাক। শরতের বাতাস আর অলৌকিক আলো তোকে ঘিরে আছে। আমরা কোথাও একটা সম্‌-এ নেমে আসছি। এবার তোর দালিকে নিয়ে মুগ্ধতা। শূন্যেই তুই একটা অভিজাত সিঁড়ি আর দালির বিশাল গোঁফজোড়া এঁকে ফেললি।

পাহাড়ে বেড়াতে গিয়েছি। তুই আর আমি। প্রায় এক শুঁড়িপথ দিয়ে হাঁটছি। মাথার উপরে টুপটাপ আর কী যেন, কী যেন! যেন এই পৃথিবীর কেউ নই আমরা আর। রবার্ট ফ্রস্টের কবিতা গুনগুন। কতটা পথ, জানা নেই। এক চন্দনকাঠের বোতামের অন্বেষণ কেবল। তবু সে-পথের মাঝে বিষণ্ণ একা বাইসন! আমাদের ঘোড়া নেই। কী ভীষণ ভাবাবরোহ! তুই পিছোচ্ছিস। আমিও। শেষ অবধি অন্ধকার। শেষ অবধি মৃত পাতার ভিতর থেকে তোকে। একরাশ বিরক্তি নিয়ে বাইসন অন্য পথে। আমরা আরও এক বনের ভিতর। অর্কিড গাছে গাছে, অপেক্ষায়। গাভীর মতো না, গুরুতর মেঘ নেমে আসছে। স্বভাবেই অন্ধকার। সেই বোধ করি আমাদের প্রথম লৌকিক যাপন থেকে সরে যাওয়া। সত্তর কি এসেছে তখন!

প্রায় ভাঙাচোরা এক বাড়ির দোতলা। চিলেকোঠায় বসন্ত পূর্ণিমা এসেছে। সে সত্তরের মাঝামাঝি সময়। কাশিমবাজারের ঘরে ঘরে তখনও খুব শীত। আমাদের কিন্তু না। এক অষ্টাদশী যে তার সমস্ত সম্ভার নিয়ে গাইছে, আজ জ্যোৎস্না রাতে সবাই গেছে বনে…! পাথরের মতো বসে আছি আমরা। কে আসবে! তাকে পরিচ্ছন্ন হতে হবে, প্রস্তুত হতে হবে! সে কি তোর জন্য, নাকি আমার! প্রবল এক টানাপোড়েন আর ঘোর নিয়ে ফিরেছিলাম আমরা। চাঁদ হেসে হেসে গড়িয়ে গড়িয়ে আমাদের প্রায়-কিশোর মাথা-বুক-পিঠ।

আমরা একটা যৌথ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করেছি। ‘প্রদীপের আলোয় প্রশান্ত’। পেপারব্যাক। ‘পান্ডুলিপি’ প্রকাশক। যেদিক দিয়ে খুশি, পড়া যায়। লেটার প্রেসে, তবু এতটুকু ভুল নেই! সে উত্তেজনা বোঝানো আমার কম্ম নয়।

বিসর্জনের রাত্রে বসে আছি ভাগীরথীর ধারে। বালি আর বাবলাবন। তখনও গঙ্গায় বালি। একটা, তারপর আরও একটা, ভেসে আসছে লাল-নীল প্রদীপ। কোন্‌ দক্ষিণ দুয়ার থেকে তারা আসছে! এরপর অজস্র। এরপর প্রতিমা। নৌকায়, নৌকায়। আমরা দেখছি লোকাচার, দেখছি প্রতিমার বিষণ্ণ মুখ, অশেষ বিশ্বাস, উৎসব আর ঢাকের বোল ‘আসছে বছর আবার হবে’।

এই-ই সব কিছু ছিল ষাট-সত্তরের আকাশে। সত্যিই ছিল! মাটিতে তো কেবল শোষণের, অপমানের নানান কায়দা ছলচাতুরি, চিরকুটে দুটো ভাতের সংস্থানের আশ্বাস, ঘৃণা, প্রতিবাদের মুখ আর দহনের গন্ধ, নির্বিশেষ রক্ত। আর লালদিঘি পেরিয়ে, স্কোয়ার ফিল্ড পাশে রেখে আমরা তখন চলে যেতে চাইছি সমান্তরাল দুটো রেলের দিকে, যেটা কোনো বাফারে গিয়ে শেষ হচ্ছে না। কোনো সীমান্ত চোখ পাকিয়ে থাকছে না। যেহেতু আমরাও ‘বাঁচতে চাই’।

মনে আছে তোর? কী করেই-বা থাকবে! এমন তো কিছু ঘটেইনি। কেবল এরকম ইচ্ছে করতাম আমরা। শহর, পারিপার্শ্বিক বেঁচে থাকা যখন আমাদের খুব ক্লান্ত করে দিত, আমাদের তখন এমন। পরে অবশ্য বিনয় মজুমদার নিয়ে চমৎকার কিছু শব্দ লিখেছিলি। আমি ভেবেছিলাম, ওরে ব্বাবা, এভাবেও তবে কবিতাকে ভাবা যায়।

তোকে এত বিশ্বাস করতাম কেন, বল তো! তোর মতামত আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রায় গাইডের। তুইও এটা বুঝতিস। বল, বুঝতিস না? আমার কথাও তুই শুনতিস। অরূপের সঙ্গে দিগন্ত, মিনি পত্রিকা রক্তপত্র। তুই সঙ্গে ছিলি। ইতিমধ্যে উৎপলদা ‘সময়’-এর আড্ডায় ডাকলেন। সেখানে তখন বহরমপুরের নক্ষত্র সমাবেশ। দিব্যেশদা (তোদের কী-রকম আত্মীয় হতেন), সুশীতদা, অরুণ ব্যানার্জি, মনীষী মোহন রায়, সুশীলদা, গোকুলেশ্বর ঘোষ, আরও অনেকে। কবিতা পড়া হচ্ছে, আলোচনা, মতামত, সে এক হইচই ব্যাপার। কত বাহবা! আমরা তখন কলেজ পেরিয়েছি। কত হবে! ১৯-২০। তুই কিন্তু সে-সময়েই কবিতাটা চমৎকার পড়তিস। গম্ভীর গলায়, ডান-হাতে কবিতার পাতা ধরে, বাঁ-হাতটা উঠিয়ে নামিয়ে।

বি টি পড়তে ভর্তি হলাম। তুই না। তুই কি সে-সময়ে টিউশনি করেছিলি! আমি করতাম। কারণ সে-সময়ে অভ্যন্তরীণ কলহে এবং আরও বহু হেতুতে আমাদের সবকিছু হয়ে গ্যাছে এইটুকু। গত্যন্তর ছিল না। বলেছিলি, অমুক পত্রিকায় কবিতা পাঠা। পাঠিয়েছি। বলেছিলি, ওই মেয়েটার কাছে আর যাবি না। যাইনি। বলেছিলাম, চল পম্পুর সঙ্গে চৌপর করি। সামান্য দ্বিধা ছিল, তবু এসেছিলি। বলেছিলি, বাবা রিটায়ার করবে। একটা হিল্লে হওয়া দরকার। সুতরাং নানান জায়গায় দরখাস্ত। সে-সময়েই চাকরির জন্য প্রিপারেশনের কথা বলেছিলাম। তুই শুনেছিলি। একসঙ্গে অঙ্ক শেখা, জেনারেল নলেজ, সংবিধান– কত কিছু। একদিন চাকরির পরীক্ষার এডমিট কার্ড। পেয়ে একসঙ্গেই পরীক্ষা দিয়েছিলাম। তাই তো দু-জনেই একসঙ্গে চাকরিতে। বলেছিলি, ইতি খুব ভালো মেয়ে। ওকে কখনও ঠকাস না। তারপর ৪৯ বছর তো হয়ে গেল। ইতির জন্যেই তো এখনও। আমার কথাও তুই শুনেছিলি। নানান বাধাবিপত্তি, সামাজিক টানাপোড়েন, শিখা আমাদের ঘরে এসে দুঃখ করত। তুইও। বলেছিলাম, শিখা তোকে ভালবাসে। তুই খুশি হয়েছিলি। শেষ অবধি ‘দুইটি হৃদয়ে একটি আসন’ ইত্যাদি।

তারপর তুই ক্রমশঃ অমিতাভ মৈত্র। নানান জায়গায়, নানান ভাবে। এই যে সিঁড়ি-সব, নিশ্চয়ই তুই ভুলে যাসনি। তাই বোধহয়, একদিন বলেছিলি, ‘এই ধুলো পায়ে ঘুরে বেড়ানোর দাগ তেমন কাজে আসে না হয়তো। হাওয়ায় মিলিয়ে যায়, জলে মুছে যায়। তবু এই ঘুরে বেড়ানোর ভেতর দিয়েই কোথাও অনুভূতির এক গূঢ় পৃথিবী আস্তে আস্তে খুলে যেতে থাকে।’ তুই আত্মার আশ্রয় খুঁজেছিলি। তাই এক ‘নির্জনতম নিবিড়তম আনন্দ’-এর খোঁজ আমি পেয়ে যাই তোর থুড়ি অমিতাভ মৈত্র রচিত বহু কবিতা আর মুক্তগদ্যে। একইসাথে দেখি, ‘মানুষ সরে এসেছে আলো অন্ধকারময় সেই মায়া পৃথিবী থেকে’, ‘অনেক ভেতর পর্যন্ত ধ্বংস হয়ে যাওয়া মানুষ যোগাযোগের ভাষা হারিয়ে, অস্তিত্বের নিঃস্বতার ধারণাটুকু নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ছে।’

এই কথা, এই প্রায় অপার্থিব স্মৃতিকথন সম্ভবত অধিকাংশই বাহুল্য বিবেচিত হওয়ার যোগ্য। তথাপি স্পর্ধা করছি বলতে যে, তোর, আমার প্রদীপের, আমাদের অমিতাভ মৈত্রের অদ্যাবধি সৃষ্টিতে একদিন পাঠকের হৃদয় জেগে উঠবে; ভালোবাসায়, শ্লাঘায় একাত্ম হবেই।

আপাতত ভালো থাকিস। এখন তো আর শ্বাসকষ্টটা নেই? এখন আমার হচ্ছে। হবে, যতদিন না আবার…

Facebook Comments

পছন্দের বই