কবিতা
শীর্ষেন্দু পাল
দেয়াল
দেয়াল ভাঙা হলে
ইটেরা সবচেয়ে খুশি হয়
জমাট বাঁধা বিভাজনরেখা থেকে
খসে পড়ে মাটির অনিচ্ছা…
পুড়ে ইট হয়ে গেলেও
মাটি কোনোদিনই বিভাজন চায় না।
বাসনকোসন
যত সাবধানেই রাখা হোক
শব্দ একটু হবেই
গড়িয়ে পড়ে গায়ে লেগে থাকা জল
আসলে… কান্নার সময়
প্রত্যেকেই একটু আনত হয়।
জুতোর র্যাক
জুতোর র্যাক আসলে নির্বাক বেড়াল
থাবাতে লুকিয়ে রাখে
পথের দুঃখরেণু
ছাতা এক প্রকার আনন্দ
যা হারালে দুঃখের চেয়েও
শোক হয় বেশি।
আয়না
শুধু কি আয়নাই জানে
তোমার শরীরে ক-টা তিল
ফুটন্ত চায়ের জল দেখলে মনে হয়
তোমার তিলগুলো চোখ রাঙাচ্ছে
উষ্ণতায় জেগে উঠবে বলে
বিছানা
কুঁকড়ে গেছে মাঝখানের সুতো
সংগমের পর বিছানা চাদর যেন
সকাল বিকেল নির্বাক ছলছুতো
জানি— সহজ কথা
বলা হল না এখনও।
কুকার
আবহে শিবরঞ্জনী নয়
বিদ্রূপ করে কুকারের সিটি
চমকে ওঠা ধরা পড়ার ভয়ে
ভিতর প্রদেশ আলগা করে মুঠি।

শীর্ষেন্দু পাল
জন্ম সাতের দশকের শেষ দিকে। হুগলী জেলার বেগমপুরের বাসিন্দা, পেশায় স্কুলশিক্ষক। ছোটোবেলা থেকেই ছড়া, কবিতা লেখার পাশাপাশি একটি দেওয়াল পত্রিকা প্রকাশ করেন। নয়ের দশক থেকে মনোযোগী লেখালেখির শুরু হলেও মাঝখানে ছেদ পড়ে। বিভিন্ন পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত হয়। লেখার পাশাপাশি গান শোনা, নাটক দেখা, এবং অবশ্যই বই পড়া অত্যন্ত প্রিয় কাজ।