লেখক নয় , লেখাই মূলধন

কবিতা

শুভদীপ দত্ত প্রামাণিক

নেলপলিশ

ঘাড়ের ওপর ভাড়াবাড়ির রান্নাঘর।
অমিয়দা ফেরিঅলার গলাতে রেখে দিল চোরাই মৃতদেহ!
নিখুঁত খুনি কোথায় কিনতে পাওয়া যায়?
ডাকাত কাউন্টারে শিলিগুড়ি যাওয়ার বাস টিকিট,
             টিকিটে দূরত্বের জায়গায় পুরুষাঙ্গ।

নাভির ওপর টায়ার পার্ক।
গাড়ি দাঁড়াবে হাঁস-মুরগির ঘরে।
কালো মাছ পুড়িয়ে খেল অবিবাহিত নেলপলিশ।

আতপচালের উপর খড়ম পড়ে হাঁটে শ্যামবর্ণ বিছে।

ব্যাকটেরিয়া

হাতের খেঁজুর পাতার ছায়া।
কীভাবে দেব মৃত্যুর আনন্দসংবাদ,
                        মারা গিয়েছে নৌকা দেবীর কনিষ্ঠ কন্যা!

এখন সে মর্ত্যে— মানুষের মতো গায়ের রং,
                             নরম হাড়ে ব্যাকটেরিয়া জন্মাচ্ছে!

ধানের গোলা,
ঘামে ভেজা ফ্রক থেকে ঝরে পড়ছে
                             গোরুর দুধের গন্ধ।

খাদ্যনালী

ব্যাঙাচির ছায়া নারী কল্যাণ সমিতির অফিসে।
সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোড়া জানিয়েছে:
সে ভাতের ছায়া খাবে।
খাদ্যনালী দিয়ে দ্বীপ পৌঁছাল কাঙালের হাঁটুতে,
                             হাঁটুতেই রেশন ডিলারের বাড়ি।

আদি সূত্র ডাকছে।
আদি হোঁচট ডাকছে চোয়ালকে।
রেললাইনের পাথরে ছেঁড়া হারমোনিয়াম!

মকরক্রান্তিরেখায় প্রথম সভা করল পোড়া জ্ঞান।

জরুরি বৈঠক

টোটোভরতি ক্লাসমেট খাতা।
খাতার শেষ পাতায় বালিগঞ্জ প্লেস,
বালিগঞ্জ প্লেসে হিড়িম্বা তুলি সাক্ষাৎকার নিচ্ছে ফ্যানের।
শ্বাসরোধ করে মারা হয়েছে কামবীজকে!
ডিম্বাশয় থেকে দেখা যাচ্ছে বস্তি-চটকল।
চটকল এখন শুধু রবিবার বন্ধ।

বৃদ্ধ বেশ্যাদের জরুরি বৈঠক শেষ হয়নি,
                             সিদ্ধ ডিম নিম্ন আদালতের ক্লার্ক।

জজ আপনি বলুন: কে আমার মা?
কুন্তীর ঠোঁটে অন্ধকার!

আয়ু মন্দির

মেঘ জমেছে সান্তাক্লজের এ্যাপেন্ডিক্সে!
ভৌতিক ইঁদুরের গর্তে আয়ু মন্দির।
                      চাতকের নিঃশ্বাসে কেয়া ফুলের ছায়া।
সাপ দুধ খাই গাভীর স্তনে।
সাপের বিষ অসুরগণের মধু,
অর্ধেক ইউরেনাস গোলাপে কোজাগরী।

পুকুরের পাড়ে টিকটিকির কাটা লেজ!
পেয়ারা গাছের আর্থিক অবস্থা পাথর।
নক্ষত্রের অন্তর্বাস বেনেবউটির চোখের মতো উজ্জ্বল।

গাঙচিল স্বেচ্ছাবসর নিয়ে পাতাললোকে কবিতা লিখবে,
কুমিরের পিঠে রাধাকুণ্ড।

 

 

শুভদীপ দত্ত প্রামাণিক

জন্ম ১৯ মে ১৯৯৪ লালমাটির দেশ বীরভূমের কীর্ণাহারে। বাবা চিরদীপ প্রামাণিক, মা সুজাতা প্রামানিক। শিক্ষক তমাল কৃষ্ণ ঘোষের সান্নিধ্যে এসে কবিতার হাতেখড়ি। কবিতা লেখা শুরু নবম শ্রেণিতে। দীর্ঘ বিরতির পর ২০২২ সালে শুরু হয় বিভিন্ন লিটিল ম্যাগাজিনে লেখালেখি। মনখারাপ থাকলে শান্তিনিকেতনের রাস্তায় নিঃসঙ্গ হাঁটেন এবং খোয়াই গিয়ে বাউল গান শোনেন।

পছন্দের বই