লেখক নয় , লেখাই মূলধন

কবিতা

সুমন সাধু

ইনসমনিয়া

একটা বিছানা
সরু হয়ে শুয়ে আছে ঘুম
কে গান শোনাবে, কে গল্প করবে
আমি হাই তোলা সহযোগে
ফেলে রাখছি ওষুধ
এদিকে একটা শালিখ
শরীর থেকে কিছুতেই উড়তে চাইছে না

গুহার মতো অন্ধকার

ঘুম থেকে তুলে নিয়ো এক-একটি নাম
বাসন মাজার মতো বারকতক ঘষেমেজে যখন
সোনাটি খেলে যাবে নামে নামে
তখন নামের গায়ে জুড়ে বসবে পেখম
ডানা চাইলে সমুদ্র দেখিয়ো
দেখিয়ো রাষ্ট্র, উত্তাপ, দেশদ্রোহী, সমকামী জাতীয়
শব্দ বিশেষ
ঘুম থেকে উঠে তাদের নামের গায়ে লিখে দিয়ো
সমস্ত খুন আসলে গুহার মতো অন্ধকার

ঢেউয়ের প্রতি


একটা বিশাল গর্জনের লোভে বেরিয়ে পড়েছিলাম প্রিয় আলোকচিত্রীটির সঙ্গে। অযথা ফালতু সময় দু-জনকে খেয়ে ফেলছিল। সমুদ্রে ফাটল ধরলে বন্ধু ব্যাগ থেকে বের করে আনত ক্যামেরা। আমি আরামকেদারায় তাস খেলা সহযোগে মিলিয়ে নিতাম হরতন ইশকাপন। দু-জনের বন্ধুত্ব হত বেশ। রাজায় রাজায় যুদ্ধ হলে আলোকচিত্রী ফ্রেম খুঁজে নিত। রাজার পাশে নিত আমাকেও। সেই আমাদের প্রথম হাত ধরা। প্রথম শরীর স্থাপন।


তারপর একটা ফ্রেম এল। যেখানে ব্লার করা থাকবে সমুদ্র, গর্জন। কয়েকশো মাইল দূরে দাঁড়িয়ে আলোকচিত্রী। এই লং ডিসটেন্সের স্বভাবে জুড়ে বসবে পাখি। শহরের সমস্ত অবিবাহিতরা মুছে দেবে প্রথা। সেই ভাঙন থেকেই একটা লেখা লিখতে চাই।


একমাত্র সমুদ্র জানল। বাকিটা জুড়ে পড়ে থাকল গর্জন। গর্জনের কথা কেউ শুনতে পায়নি।

একার মতন একা

একা থাকার নেশা লেগে গেছে একরত্তি শরীরে
একার এই সফরে কিছু মানুষ থেকে যান তুমুল
আসেন, আর হুব্বার মতো এতিম করে দেন
ভাবি, গায়ে গতরের জোর
বন্ধুহীন এই পৃথিবীতে বন্ধুদের তরজা
জীবনানন্দীয়, নাগরিক ক্লান্তি মুছে
আমার হাত ধরে নিয়ে যায় মিছিল
ভিড়ের শহরে, একাদের খারাপ থাকতে নেই

আবার ঘুম

বাড়ির বাইরে একটা দুনিয়া যখন মজা দেখায়, তখন তোমার শয়নকক্ষে হাজির হয় ঘুম। যাকে তুমি অস্বীকার করতে পারো না।

আয়ুরচিত

বৃষ্টির ছাট গায়ে লাগলে তোমার কথা ভাবি। আমাদের একসঙ্গে পাহাড়কোলে উদ্দাম বৃষ্টিতে ভেজার কথা ছিল। তারপর অবাধ্য সর্দির জল, হাঁচি, কাশি, প্যারাসিটামল। আমাদের প্রেমের আয়ু সামান্য। যদিও শরীর এখনও তাজা আছে। তার আয়ু কি শতাধিক?

 

Facebook Comments

পছন্দের বই