সেইসব গল্প, যা অন্ধকারের
রাত গড়িয়ে যে-কোনো মুহূর্তে ভোর ফুটে উঠবে, এমন সময়ই অসীমের মনে কথাটা উদয় হল। যদিও অসীম রাত চেনে—
নভেম্বর ইজ দ্য মান্থ অফ মাইগ্রেশনস
ভাষান্তর: রমিত দে
(জন্মসূত্রে হাঁসদা শৌভেন্দ্র শেখর সাঁওতাল এবং সাঁওতালী জীবনের অস্তিত্বের প্রশ্নগুলিই বারবার তার গল্পে অনুরণিত হয়েছে। বারেবারে একজন গল্পকার তার চরিত্রের মধ্যে দিয়ে পাঠককে মুখোমুখি করিয়েছেন প্রান্তিক মানুষের নির্বাসিত জীবনের। এমনকি তার প্রথম উপন্যাস-‘রুপি বাস্কের অদ্ভুত অসুখ”এর মুখবন্ধে হাঁসদা শৌভেন্দ্র শেখর যখন লেখেন –‘ এটি ইংরেজিতে লিখিত প্রথম পূর্ণাঙ্গ সাঁওতাল উপন্যাস’ তখন বোঝা যায় কিভাবে তার যাপনে জড়িয়ে রয়েছে নিজস্ব জাতিসত্ত্বার ভাষ্যগুলো। এই উপন্যাসের জন্যই হাঁসদা শৌভেন্দু শেখর ২০১৫ সালের যুব সাহিত্য আকাদেমী পুরষ্কারে ভূষিত হন এবং ২০১৪ সালের ‘ক্রশওয়ার্ড বুক এওয়ার্ড ও হিন্দু লিটেরারি এওয়ার্ডের জন্য তালিকাভুক্ত হন। )
কিছুটা এগিয়ে গেলে, বাঁ দিকে সামান্য বাঁক নিলে, হাটখোলার মোড়। স্থায়ী দোকানপাট। ঝিমানো। কখনও কখনও লোকজন আর টুকটুকি অটো আর ক্লান্ত বিষণ্ণ রাতজাগা গরুযান। আরও একটু এগিয়ে গেলে পাকা রাস্তা। হাইরোড। বাস স্ট্যান্ড। শত প্রাচীন একটি নিম গাছ। নিম গাছের নীচে কুড়িয়ে নেওয়া পাথরের থান, সিন্দুরের বৈভব ছড়ানো, তেলচিটে। পাশে মাটির পুতুলের দোকান। বাসযাত্রীরা বাসে ওঠা ও নামার আগে মাটির পুতুলের দোকানের দিকে একবার তাকাবে, কেউ কেউ পুতুলের দোকানের সামনে এসে দাঁড়াবে। পরের পর কাঠের পাটাতনের ওপরে সারি সারি মাটির পুতুল। কত ধরনের পুতুল।
কুকুর
১
মেঘলা আকাশ। বৃষ্টি যেকোনো সময় তেড়ে আসতে পারে। আসলে মন্দ হয় না। ক-দিন ধরে গুমোট আবহাওয়া। শরীর হাঁসফাঁস করছে। রোদ-বৃষ্টি-ঝড় যাইহোক অনি নিয়ম করেই বইপাড়ায় আসে। কাজ থাকুক বা না-থাকুক। কফিহাউস ঢুকতে ওর বিরক্ত লাগে। কলেজ স্কোয়ারের ভিতরটাতেই বসে। অনির ভালোলাগে মানুষজন পর্যবেক্ষণ করতে। তিন থেকে তিরাশির কত মানুষজন! কেউ কেউ আসে পাঁচ থেকে পনেরোর ছেলেমেয়েকে নিয়ে সাঁতার শেখানোর জন্য। অবসারপ্রাপ্ত বুড়ো-বুড়িরাও আসে সান্ধ্যআড্ডায়। আর প্রেমিক-প্রেমিকা বা বন্ধু-বান্ধবী? শহরের এমন একটা পার্ক থাকলে কেউ কি পারে তা অবহেলা করতে?